আঞ্চলিক

বগুড়ায় আধিপত্য বিস্তারের জেরে ৩ জনকে কুপিয়ে জখম

Advertisement

 বগুড়া শহরের উত্তর চেলোপাড়ায় দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের সংঘর্ষে অন্তত তিনজনকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। আহতদের শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে জানা গেছে, সংঘর্ষের পেছনে মূলত মাদক ব্যবসা এবং এলাকার নিয়ন্ত্রণের বিরোধ জড়িত।

সংঘর্ষের ঘটনা

সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার দুপুরে নারুলী এলাকার কয়েকজন যুবক বটতলা মোড়ে সান্ধার পট্টির তিন যুবককে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। ঘটনাস্থলেই কিছুক্ষণ বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর। সংঘর্ষের পর স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে ওঠে।

প্রায় একই সময়ে সান্ধার পট্টি এলাকার শতাধিক ব্যক্তি দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নারুলী এলাকায় প্রবেশ করে। এই সময় অন্তত ২০টি বাড়িতে ভাঙচুর, চারটি বাড়ির ঘরে অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনা ঘটে।

প্রশাসনের পদক্ষেপ

ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এবং বগুড়া সদর থানা ও ডিবি পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শহিদুল ইসলাম জানান, আগুন লাগার পরপরই দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান বাসির বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে এবং এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তিনি আরও জানান, সংঘর্ষে জড়িতদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।

উত্তর চেলোপাড়ার নারুলী এবং সান্ধার পট্টি এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসা ও আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলছিল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই দুই এলাকার যুবকদের মধ্যে নিয়মিত দফায় দফায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এই ধরনের সংঘর্ষ পূর্বেও ঘটেছে, কিন্তু বৃহস্পতিবারের ঘটনা তুলনামূলকভাবে বেশি তীব্র এবং ভয়াবহ।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আগের দিনগুলোতে দুই পক্ষের মধ্যে ছোটখাটো সংঘর্ষ ও ধমকানো ঘটনা ঘটেছে। আজকের ঘটনা সেই উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতেই ঘটে।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

সংঘর্ষ ও আগুনের কারণে এলাকার সাধারণ মানুষ আতঙ্কে রয়েছে। অনেকেই নিজেদের বাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থানে চলে গিয়েছেন। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ এবং উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, এলাকায় কিছু দুষ্কৃতকারী দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য বিস্তারের জন্য ভয় দেখাচ্ছে। এই সংঘর্ষে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়েছে।

পরিসংখ্যান ও রিপোর্ট

প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, সংঘর্ষে তিনজন গুরুতর জখম হয়েছেন। আহতদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। মোট ২০টি বাড়িতে ভাঙচুর এবং চারটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ দ্রুত উদ্ধার ও আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত থাকে।

মতামত

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করেন, স্থানীয় আধিপত্য ও মাদক ব্যবসার কারণে বগুড়ার কিছু এলাকায় নিয়মিত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। প্রশাসনের তৎপরতা থাকলেও প্রতিটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেই।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন, সংঘর্ষ এড়াতে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন। না হলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ ঘটনা ঘটতে পারে।

বগুড়ার উত্তর চেলোপাড়ার আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার কারণে সংঘর্ষে তিনজন জখম হয়েছেন। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে এবং আহতদের চিকিৎসা চলছে। এই ধরনের সংঘর্ষ পুনরাবৃত্তি রোধের জন্য শক্তিশালী স্থানীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।

বিশ্লেষকদের মতে, এলাকার যুবকদের মধ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমাধানের মাধ্যমে উত্তেজনা কমানো ছাড়া দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়।

এম আর এম – ১৯২৩,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button