বানিজ্য

আফগানিস্তানের পান্না ৩ লাখ ৪৭ হাজার ডলারে বিক্রি

Advertisement

আফগানিস্তানের পাঞ্জশির প্রদেশের সবুজ পান্না: আন্তর্জাতিক বাজারে নতুন সম্ভাবনার উন্মোচন

২০২৫ সালের ১২ আগস্ট, আফগানিস্তানের পাঞ্জশির প্রদেশের ঝলমলে সবুজ পান্না আবারও আন্তর্জাতিক বাজারে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। নবম সরকারি নিলামে প্রদেশের দুর্গম পাহাড় থেকে আহরিত ২,৫৩৯ ক্যারেট পান্না প্রকাশ্য বিডিংয়ে বিক্রি হয়েছে ৩ লাখ ৪৭ হাজার ৮৫০ মার্কিন ডলারে। এই সফল নিলামটি প্রমাণ করে যে, পাঞ্জশিরের পান্না বিশ্ববাজারে উচ্চমানের রত্ন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে।

পাঞ্জশিরের পান্নার বৈশিষ্ট্য

পাঞ্জশির প্রদেশের পান্না তার গাঢ় সবুজ রঙ ও অসাধারণ স্বচ্ছতার জন্য বিশ্ববাজারে প্রসিদ্ধ। এই পান্না কলম্বিয়ান পান্নার সমকক্ষ হিসেবে পরিচিত। অতীতে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও অবকাঠামোর অভাবে এই ব্যবসা সীমিত থাকলেও, বর্তমানে এটি স্থানীয় ও জাতীয় অর্থনীতির সম্ভাব্য চালিকাশক্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে।

নিলামের স্বচ্ছতা ও আন্তর্জাতিক অংশগ্রহণ

পাঞ্জশিরের কেন্দ্রস্থলে অনুষ্ঠিত এই নিলামে দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীরা অংশ নেন। তাঁদের মধ্যে চীনের বিশিষ্ট ক্রেতা ‘লিয়ন’ উপস্থিত ছিলেন। নিলামটি কঠোর স্বচ্ছতার নিয়ম মেনে অনুষ্ঠিত হয়; তত্ত্বাবধান কমিটির উপস্থিতিতে প্রতিটি রত্নপাথর সতর্কতার সঙ্গে পরীক্ষা করা, ওজন করা এবং প্যাকেজ করার পর নিলামে তোলা হয়।

আফগান সরকারের উদ্যোগ

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তালেবানের নেতৃত্বাধীন আফগান সরকার রত্নপাথরের খাতকে আনুষ্ঠানিক ও নিয়ন্ত্রিত করতে প্রকাশ্য নিলামের ব্যবস্থা করেছে। এর লক্ষ্য হচ্ছে রাষ্ট্রের রাজস্ব বৃদ্ধি, খনিশ্রমিকদের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করা এবং বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করা। এছাড়া, ২০২৫ সালের জুলাই মাসে পাঞ্জশির প্রদেশে ২৫০টিরও বেশি নতুন পান্নার খনি আবিষ্কৃত হয়েছে, যা খনিজ সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে।

অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেকসইভাবে পরিচালিত হলে পাঞ্জশিরের পান্না শিল্প আফগানিস্তানের খনিজ অর্থনীতির অন্যতম ভিত্তি হয়ে উঠতে পারে। দেশের বিশাল লিথিয়াম, লাপিস লাজুলি ও অন্যান্য মূল্যবান পাথরের মজুদের পাশাপাশি এটি অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখতে সক্ষম। তবে আন্তর্জাতিক বাজারে সীমিত প্রবেশাধিকার, আধুনিক কাটিং ও পালিশ সুবিধার অভাব এবং চলমান মানবিক সংকট এ খাতের উন্নয়নে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা

প্রতিটি সফল নিলামের মাধ্যমে পাঞ্জশিরের “সবুজ রত্ন” আফগানিস্তানের নামকে আরও দূরে পৌঁছে দিচ্ছে, যা একদিকে দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের সৌন্দর্য এবং অন্যদিকে অনাবিষ্কৃত অর্থনৈতিক সম্ভাবনার প্রতীক হয়ে উঠছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এই পান্নার চাহিদা বাড়ছে, যা আফগানিস্তানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নতুন দিগন্তের সূচনা করবে।

এই প্রেক্ষাপটে, পাঞ্জশিরের পান্না শুধুমাত্র একটি মূল্যবান রত্ন নয়, বরং এটি আফগানিস্তানের খনিজ সম্পদের সম্ভাবনা ও দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

MAH – 12301 ,  Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button