আঞ্চলিক

কুমিল্লায় শিয়ালের কামড়ে শিশুসহ আহত ৭

Advertisement

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় শনিবার রাতের মাগরিবের নামাজের পর শিয়ালের আকস্মিক হামলায় এক শিশুসহ সাত জন আহত হয়েছেন। উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের মোচাগড়া দড়িপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে শিশু ও বৃদ্ধসহ মোট সাতজন রয়েছে। স্থানীয়রা শিয়ালের আচরণকে অস্বাভাবিক এবং পাগলাটে ধরনের বলে উল্লেখ করেছেন।

ঘটনার বিবরণ

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার মাগরিবের নামাজ শেষে মসজিদ থেকে মুসল্লিরা বের হচ্ছিলেন। এ সময় একটি শিয়াল দৌড়ে এসে পিছন থেকে দুইজনকে কামড় দেয়। পরে শিয়ালটি এলাকায় দৌড়ে পালানোর সময় যাদের সামনে পায়, তাদেরকেও কামড় দেয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত এলাকাবাসী রাতেই শিয়ালটিকে ধরে মেরে ফেলে।

আহতদের নাম ও বয়স হল– জুবায়ের (৯), মোবারক (১৯), মাইনুদ্দিন (৩৮), আরিফ (২৩), আবু সাঈদ (২০), রিফাত (১৭) এবং চান মিয়া (৬৪)। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করা হয়েছে।

চিকিৎসা ও নিরাপত্তা

মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সিরাজুল ইসলাম মানিক বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হাসপাতালে আনা আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে র‍্যাবিস (ভ্যাকসিন) দেয়া হয়েছে এবং বাড়ি পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও জানান, আহতদের মধ্যে কারোর অবস্থা গুরুতর নয়।

স্থানীয়রা সতর্ক থাকার জন্য সবাইকে জানিয়েছেন যেন রাতের সময় নির্দিষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের রাতের বাইরে কম যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পশুর আচরণ ও নিরাপত্তা নির্দেশনা

স্থানীয়রা জানান, শিয়ালের আচরণ অস্বাভাবিক ও পাগলাটে ধরনের ছিল। এই ধরনের আচরণ সাধারণত র‍্যাবিস বা কোনো অসুস্থতার কারণে হয়। পশুপ্রেমী ও স্থানীয় প্রশাসন সবসময়ই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। মুরাদনগর থানা এলাকার পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এলাকায় শিয়ালের আচরণ সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে অবহিত করা হয়েছে এবং পশু ধরার জন্য রাতের পাহারা জোরদার করা হয়েছে।

মুরাদনগরের মতো গ্রামাঞ্চলে শিয়াল কখনও কখনও মানুষের এলাকায় প্রবেশ করে থাকে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে শিয়ালের আকস্মিক হামলার ঘটনা বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সংস্পর্শ কমানোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

প্রতিবছর গ্রামীণ এলাকায় বিভিন্ন বন্যপ্রাণী মানুষের সঙ্গে সংঘর্ষে আসে, যার মধ্যে শিয়াল, বনবিড়াল এবং হরিণ অন্যতম। স্থানীয় প্রশাসন এবং বন বিভাগ সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বিভিন্ন প্রচারণা চালিয়ে থাকে।

সামাজিক প্রভাব

শিয়ালের কামড়ের ঘটনায় এলাকাবাসী আতঙ্কিত। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের পরিবারগুলো রাতের সময় বাইরে যেতে কেবল প্রয়োজন হলে বের হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, মানুষ এখন নিজেদের বাড়ি এবং আশেপাশের এলাকায় বেশি সতর্ক।

এছাড়া, ঘটনা সামাজিক মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ায় অনেকেই স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।

পরবর্তী পদক্ষেপ

মুরাদনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আহতদের নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে। পাশাপাশি, স্থানীয় প্রশাসন এলাকা ঘিরে রাতের পাহারা জোরদার করেছে। স্থানীয়রা আশা করছেন, ভবিষ্যতে এমন হামলার ঘটনা কমবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানুষ ও বন্যপ্রাণীর সংঘর্ষ রোধ করতে সচেতনতা, নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পশু স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নিয়মাবলি মেনে চলা জরুরি।

শনিবার রাতে মুরাদনগরের মোচাগড়া দড়িপাড়ায় শিয়ালের আকস্মিক হামলায় এক শিশুসহ সাতজন আহত হন। আহতদের হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং র‍্যাবিস ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ও এলাকা বাসী সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনা স্থানীয়ভাবে আতঙ্ক সৃষ্টি করলেও, প্রশাসনের তৎপরতা এবং সচেতনতার মাধ্যমে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

এম আর এম – ১৭৩৮,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button