আঞ্চলিক

গাইবান্ধায় ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান, ৩ প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা

Advertisement

গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে তিনটি বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। লাইসেন্স নবায়ন না করা, স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন এবং অনিয়মের কারণে এ জরিমানা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল ইয়াসা রহমান তাপাদার।

অভিযানের বিস্তারিত

শনিবার দুপুরে পলাশবাড়ী পৌর এলাকার তিনটি প্রতিষ্ঠানে এ অভিযান পরিচালিত হয়। এর মধ্যে নিউ লাইফ ক্লিনিক অ্যান্ড কনসালটেশন সেন্টারকে ৫ হাজার টাকা, নিউ লাইফ ডায়াগনস্টিক ডেন্টাল অ্যান্ড ফিজিওথেরাপি সেন্টারকে ১৫ হাজার টাকা এবং রেখা ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট জানান, এই প্রতিষ্ঠানগুলো প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নবায়ন করেনি। পাশাপাশি দক্ষ চিকিৎসক ছাড়াই চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালনা এবং যন্ত্রপাতি ঘাটতির মতো গুরুতর অনিয়ম পাওয়া গেছে।

গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অনুমোদনবিহীন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠছে। এসব প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশই রোগীদের মানসম্মত সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। অনেক সময় যোগ্য ডাক্তার না থাকায় সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। পূর্বেও একই ধরনের অভিযানে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

প্রতিক্রিয়া

অভিযানের খবর পেয়ে স্থানীয়দের মধ্যে স্বস্তি দেখা গেছে। রোগীরা জানান, এ ধরনের অভিযানে অনিয়ম কমবে এবং স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত হবে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, কিছু প্রতিষ্ঠান রোগীদের কাছ থেকে পরীক্ষার নামে মোটা অঙ্কের টাকা নিচ্ছে, অথচ রিপোর্ট সঠিকভাবে দেওয়া হয় না।

অভিযানের সময় সাধারণ মানুষ আদালতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে জানান, এ ধরনের তদারকি নিয়মিত হলে ভুয়া ও অনিয়মে ভরা প্রতিষ্ঠানগুলো টিকে থাকতে পারবে না।

স্বাস্থ্য বিভাগের মন্তব্য

স্থানীয় স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ছাড়া এ ধরনের অনিয়ম বন্ধ করা কঠিন। তাই প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। জনস্বার্থে অভিযানের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা।

প্রভাব ও বিশ্লেষণ

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ভুয়া বা অনিয়মে ভরা প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু রোগীদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে না, বরং দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। মানুষ চিকিৎসার ওপর আস্থা হারায় এবং সঠিক সেবা পেতে বাধ্য হয়ে দূরের সরকারি হাসপাতালে ছুটতে হয়।

অভিযানের মাধ্যমে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে যে, আইন না মেনে স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করা যাবে না। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শুধু জরিমানা যথেষ্ট নয়, বরং আইনি প্রক্রিয়ায় এসব প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া জরুরি।

গাইবান্ধায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাম্প্রতিক অভিযান অনিয়মে ভরা ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে সতর্ক করেছে। স্থানীয়দের প্রত্যাশা, এমন অভিযান নিয়মিত হলে জনগণ নিরাপদ স্বাস্থ্যসেবা পাবে। তবে টেকসই সমাধানের জন্য প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে।

এম আর এম – ১৫৪১,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button