
গাজীপুরের টঙ্গী বিসিক শিল্প নগরীর সাহারা মার্কেটে কেমিক্যাল গোডাউনে বিস্ফোরণের ঘটনায় চারজন ফায়ারকর্মী দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা গুরুতর। ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহেদ কামাল জানান, দগ্ধদের সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নেওয়া হবে।
বিস্ফোরণ ও দগ্ধদের অবস্থা
বিস্ফোরণের সময় ফায়ার সার্ভিসের কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। আগুন নিয়ন্ত্রণের এক পর্যায়ে হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটে, যার ফলে একজন ওয়্যারহাউস অফিসারসহ চারজন দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে দুজনের শরীরের ১০০ শতাংশ, একজনের ৪২ শতাংশ এবং অপর একজনের ৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, গুরুতর দগ্ধদের অবস্থা এখনও সতর্ক পর্যায়ে রয়েছে।
ফায়ার সার্ভিসের পদক্ষেপ
মহাপরিচালক মোহাম্মদ জাহেদ কামাল সাংবাদিকদের জানান, দগ্ধদের জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে সর্বোচ্চ চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে। তারা প্রতিনিয়ত চিকিৎসকের নজরদারিতে আছেন। এছাড়াও, প্রয়োজনে বিদেশের উন্নত চিকিৎসা সুবিধা গ্রহণ করা হবে।
তিনি আরও বলেন, “ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের জীবন সুরক্ষা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। তারা দেশের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন, তাই তাদের সুস্থতা নিশ্চিত করা আমাদের দায়িত্ব।”
বিস্ফোরণটি ঘটেছে কেমিক্যাল গোডাউনে, যা টঙ্গী অঞ্চলের একটি শিল্প এলাকা। আগুন নিয়ন্ত্রণের সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ ঘটায় পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে যায়। বিস্ফোরণের কারণে চারজন ফায়ারকর্মী দগ্ধ হয়েছেন এবং ফায়ার সার্ভিসের অন্যান্য সদস্যরা দ্রুত তাদের উদ্ধার ও প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, টঙ্গী শিল্প নগরীতে আগেও ছোট-বড় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তাই ফায়ার সার্ভিস নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও সতর্কতা অবলম্বন করে থাকলেও এই ধরনের দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করা সবসময় সম্ভব হয় না।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
দগ্ধ ফায়ারকর্মীদের দ্রুত চিকিৎসা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ প্রশংসা করেছেন। প্রবাসী ও স্থানীয় জনগণও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকাণ্ডে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে, বিস্ফোরণের খবর পেয়ে অনেকেই সামাজিক মাধ্যমে তাদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন। ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বশীল পদক্ষেপ ও দ্রুত প্রতিক্রিয়া প্রশংসিত হয়েছে।
চিকিৎসা ব্যবস্থার গুরুত্ব
জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে দগ্ধদের চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসা ও বার্ন বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে তারা দ্রুত সেরে উঠতে পারবেন। প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের পূর্ণরূপে সুস্থ করে তোলা হবে।
মহাপরিচালক জাহেদ কামাল আরও বলেন, দগ্ধদের সঠিক চিকিৎসা ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করা ফায়ার সার্ভিসের নৈতিক ও পেশাগত কর্তব্যের অংশ।
বিশ্লেষণ
বিস্ফোরণের এই ধরনের ঘটনা প্রমাণ করে যে, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নিয়মিত ঝুঁকির মধ্যে থাকেন। দ্রুত প্রতিক্রিয়া, যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসন তাদের পেশাগত দক্ষতা ও জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের নিরাপত্তা ও সর্বোচ্চ চিকিৎসার নিশ্চয়তা আগামিতে আরও শক্তিশালী প্রোটোকল তৈরি করতে সহায়ক হবে।
টঙ্গীর বিস্ফোরণে দগ্ধ ফায়ারকর্মীদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা ও প্রয়োজনে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এটি প্রমাণ করে যে ফায়ার সার্ভিস সদস্যদের জীবন ও সুস্থতা দেশের জন্য সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
এখন দেখার বিষয়, দগ্ধদের পুনর্বাসন কত দ্রুত সম্ভব হয় এবং তাদের জীবন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায় কি না।
এম আর এম – ১৪৭২,Signalbd.com