সালিশীতে অংশ নিলেই সাংগঠনিক ব্যবস্থা – পটুয়াখালী বিএনপির কঠোর নির্দেশনা

পটুয়াখালী জেলা বিএনপি মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জেলা থেকে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায় পর্যন্ত সকল নেতা-কর্মীকে সালিশী বা পক্ষপাতদুষ্ট মধ্যস্থতায় অংশ না নেয়ার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, নির্দেশনা অমান্য করলে তা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হিসেবে গণ্য হবে এবং সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জেলা বিএনপির ঘোষণার বিস্তারিত
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট মুজিবুর রহমান টোটন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীকে রাজনৈতিক কর্মসূচি, সাংগঠনিক দায়িত্ব এবং জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রামে নিয়োজিত থাকতে হবে। সালিশ, দাঙ্গা-ফ্যাসাদ বা পক্ষপাতমূলক মধ্যস্থতায় যুক্ত হওয়া যাবেনা। সকল নেতাকে জনগণের সঙ্গে ভদ্র, মানবিক ও সহমর্মী আচরণ বজায় রাখতে হবে।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের এই নির্দেশ যথাযথভাবে পালন করতে হবে। এতে দলীয় ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ থাকবে এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় থাকবে।
গত কয়েক মাসে পটুয়াখালীর বিভিন্ন ইউনিয়নে বিএনপির নেতাদের বিরুদ্ধে সালিশ বৈঠকে আর্থিক লেনদেনসহ নানা অভিযোগ ওঠার খবর পাওয়া গেছে। কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া ও লোহালিয়া ইউনিয়নে এই ধরনের ঘটনা নজরে এসেছে। জেলা ইউনিটের সিনিয়র নেতৃবৃন্দও এসব বিষয়ে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন।
পক্ষপাতমূলক সালিশ ও দাঙ্গা-ফ্যাসাদে অংশগ্রহণের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় জেলা বিএনপি এ ধরনের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
নির্দেশনা প্রকাশের পর জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা সামাজিক মাধ্যমে এটি প্রশংসনীয় ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ হিসেবে প্রচার করছেন। নেতারা মনে করছেন, এটি দলের শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়ক হবে। বিশেষত ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নেতাদের নৈতিক আচরণ নিশ্চিত করতে এ ধরনের নির্দেশনা গুরুত্বপূর্ণ।
সাধারণ জনগণও আশা করছে, নেতা-কর্মীরা সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করলে স্থানীয় সমস্যার সমাধান দ্রুততর হবে এবং রাজনৈতিক সংঘাত কমে যাবে।
সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ও দলীয় নীতি
বিজ্ঞপ্তিতে বিশেষভাবে বলা হয়েছে, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক ও সংগ্রামী দল। দলের নেতা-কর্মীরা জনগণের আস্থার প্রতীক এবং আন্দোলনের অগ্রণী সৈনিক। সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং দলীয় ভাবমূর্তি রক্ষা করা প্রতিটি সদস্যের দায়িত্ব।
নেতৃবৃন্দকে কেবল রাজনৈতিক ও সাংগঠনিক কার্যক্রমে সম্পূর্ণভাবে নিয়োজিত থাকতে হবে। সাধারণ জনগণের সাথে সৌজন্যপূর্ণ আচরণ নিশ্চিত করতে হবে। নির্দেশনা অমান্য করলে শৃঙ্খলা ভঙ্গ হিসেবে অভিহিত হবে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন কঠোর নির্দেশনা দলীয় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ। নেতাদের সুশৃঙ্খল কার্যক্রম জনগণের আস্থা বাড়াবে এবং দলের দীর্ঘমেয়াদি ভাবমূর্তির জন্য সহায়ক হবে। বিশেষত স্থানীয় সালিশ ও পক্ষপাতমূলক মধ্যস্থতায় অংশগ্রহণের ফলে রাজনৈতিক সংঘাত ও অবিশ্বাসের সৃষ্টি হতে পারে।
পটুয়াখালী জেলা বিএনপির এই নির্দেশনা দলীয় শৃঙ্খলা ও নেতৃত্বের নৈতিকতা রক্ষার জন্য সময়োপযোগী পদক্ষেপ। স্থানীয় নেতা-কর্মীরা যদি এটি মান্য করে, তবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্বচ্ছতা ও দলীয় ভাবমূর্তি উভয়ই বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে নির্দেশনা অমান্য করলে শৃঙ্খলাভঙ্গের কারণে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এম আর এম – ১৩৯০,Signalbd.com