আঞ্চলিক

হাটহাজারিতে ১৪৪ ধারা জারি

Advertisement

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে সংঘর্ষ ও উত্তেজনার কারণে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে। নির্দিষ্ট এলাকায় জনসমাগম, বিক্ষোভ ও অস্ত্রবাহী কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে।

ঘটনা ও প্রশাসনের ঘোষণা

শনিবার হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনার প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, শনিবার রাত ১০টা থেকে রোববার বিকেল ৩টা পর্যন্ত এই ধারা বলবৎ থাকবে। এ ধারা অনুযায়ী, উক্ত এলাকায় পাঁচজনের বেশি ব্যক্তি একসাথে চলাচল করতে পারবেন না। এছাড়া, সভা, সমাবেশ, বিক্ষোভ ও অস্ত্র পরিবহন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

গত কয়েকদিন ধরে হাটহাজারী উপজেলা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দুটি গেট সংলগ্ন এলাকায় স্থানীয়দের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

এর আগে শনিবার রাত সোয়া ১২টা থেকে দুপুর পর্যন্ত বিদ্যালয় ও ক্যাম্পাস এলাকায় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এই ঘটনায় সহ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন, প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ ও অন্তত ১৮০ শিক্ষার্থী আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, তাঁদের পক্ষেরও ১০–১২ জন আহত হয়েছেন।

১৪৪ ধারা প্রয়োগের প্রভাব

১৪৪ ধারা জারির ফলে হাটহাজারী উপজেলায় জনজমায়েত সীমিত করা হয়েছে। এটি মূলত উত্তেজনা কমানো ও শান্তি বজায় রাখার উদ্দেশ্যে নেওয়া পদক্ষেপ। প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী, উক্ত এলাকায় কেউ অধিক সংখ্যক সমাবেশ বা বিক্ষোভ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ ও র‌্যাবের তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। প্রশাসন আশা করছে, এর ফলে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষের পুনরাবৃত্তি রোধ করা যাবে।

প্রশাসনিক পদক্ষেপ

ইউএনও মুহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মুমিন জানান, শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার লক্ষ্যে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ইতোমধ্যেই মাঠ পর্যায়ে পুলিশি টহল বৃদ্ধি করেছে। জরুরি পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।

উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও বাজার এলাকায় নিরাপত্তা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। শিক্ষার্থী এবং স্থানীয়দের সচেতন করা হয়েছে যাতে তারা নির্দেশনা মেনে চলেন।

ঘটনার বিশ্লেষণ

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিশ্ববিদ্যালয় ও স্থানীয়দের মধ্যে সংঘর্ষের মূল কারণ যোগাযোগের অভাব এবং স্থানীয় সমস্যার সমাধানে বৈষম্য। প্রশাসনের ১৪৪ ধারা জারি করার পদক্ষেপ তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করবে।

তবে তারা সতর্ক করেছেন যে, শুধুমাত্র ধারা জারি করে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। প্রয়োজন নিয়মিত সংলাপ, সমস্যা সমাধানের কাঠামো এবং শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের।

ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

হাটহাজারী উপজেলা প্রশাসন বলেছে, পরিস্থিতি মনিটর করা হবে এবং পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক হলে ১৪৪ ধারা আরও বৃদ্ধি করা বা সময়সীমা বাড়ানো হতে পারে। প্রশাসন আশা করছে, শান্তি ও শৃঙ্খলা পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন ও স্থানীয়দের দৈনন্দিন কার্যক্রম পুনরায় স্বাভাবিক হবে।

এম আর এম – ১২১৬,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button