আঞ্চলিক

নার্সের সঙ্গে ত্রিমুখী প্রেম, পিএসের হাতেই খুন হন ডা. আমিরুল: নাটোর এসপি

Advertisement

নাটোরে চাঞ্চল্যকর ডা. এএইচএম আমিরুল ইসলামের হত্যাকাণ্ডে নতুন তথ্য প্রকাশ করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসাইন। তিনি জানিয়েছেন, হাসপাতালের এক নার্সকে কেন্দ্র করে ডা. আমিরুল ও তার ব্যক্তিগত সহকারী আসাদের মধ্যে ত্রিমুখী প্রেমের সম্পর্ক ছিল। পারস্পরিক মতবিরোধ এবং ব্যক্তিগত ক্ষোভের জেরেই ব্যক্তিগত সহকারী আসাদ ডা. আমিরুলকে হত্যা করেন।

হত্যাকাণ্ডের বিবরণ

পুলিশ সুপার জানান, ঘটনাটি ঘটেছে রাতের বেলা। আসাদ বোরকা পড়ে ডা. আমিরুলের ঘরের খাটের নিচে অবস্থান নেন। একজন ব্যক্তিগত সহকারী হওয়ায় তিনি ডা. আমিরুলের দৈনন্দিন রুটিন সম্পর্কে জানতেন। রাতে ডা. আমিরুল ঘুমিয়ে পড়লে আসাদ ছুরির মাধ্যমে তাকে হত্যা করেন। হত্যার পর ভোর ছয়টার দিকে বোরকা পরে হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান।

হত্যার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করেছে। আসাদকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আদালতে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। প্রমাণের ভিত্তিতে অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকেও গ্রেফতার দেখানো হতে পারে।

হত্যাকাণ্ড

পুলিশ জানিয়েছে, হত্যার পেছনে মূল কারণ ছিল ব্যক্তিগত সম্পর্ক এবং কর্মক্ষেত্রে উত্তেজনা। আসাদ জানান, ডা. আমিরুল তাকে এবং ওই নার্সকে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রভাবিত করতেন। একপর্যায়ে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এই ক্ষোভ এবং ক্ষতিপূরণহীন ত্রাসের কারণে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।

নাটোরের স্থানীয়রা বলছেন, এই হত্যাকাণ্ড পুরো হাসপাতাল এবং শহরকে চাঞ্চল্যকর করেছে। ত্রিমুখী প্রেমের কারণে তৈরি উত্তেজনা এবং শেষ পর্যন্ত প্রাণঘাতী সংঘাত ঘটার খবর এখন স্থানীয় সংবাদে প্রধান শিরোনাম।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

হত্যাকাণ্ডটি হাসপাতাল ও স্থানীয় সমাজে ব্যাপক উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য কর্মীরা এই ঘটনায় আতঙ্কিত। স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ সতর্কতা জারি করেছে এবং হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার সাথে জড়িত সকলকে যথাযথভাবে দায়ের আওতায় আনা হবে। এছাড়া হাসপাতালের অন্যান্য কর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

তদন্ত ও প্রমাণ

পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার প্রযুক্তিগত এবং পারিপার্শ্বিক দিকগুলি বিশ্লেষণ করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ, সাক্ষ্য এবং ফোর্সেনসিক প্রমাণের মাধ্যমে হত্যার সত্যতা নিশ্চিত হয়েছে। আসাদ স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, এবং তিনি আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হত্যার পরিকল্পনা যথেষ্ট সূক্ষ্ম ছিল। আসাদ যেহেতু ডা. আমিরুলের ব্যক্তিগত সহকারী, তাই তিনি তার অভ্যাস এবং সময়সূচি সম্পর্কে অবগত ছিলেন। এই তথ্যের ভিত্তিতে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হিসেবে এটি চিহ্নিত করা হয়েছে।

সামাজিক ও আইনগত প্রভাব

হত্যাকাণ্ডটি নাটোরের সাধারণ জনগণ এবং চিকিৎসা মহলে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে হাসপাতাল কর্মীরা নিরাপত্তা এবং কর্মপরিবেশের মান সম্পর্কে উদ্বিগ্ন। স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জনগণকে আশ্বস্ত করেছে যে, আইন অনুযায়ী সকল অপরাধীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ঘটনা কর্মক্ষেত্রে সম্পর্ক এবং ব্যক্তিগত উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে রাখা কতটা জরুরি, তা আবারও প্রমাণ করল।

পরিশেষে

নাটোরে ডা. আমিরুল ইসলামের হত্যাকাণ্ড স্থানীয় সমাজ এবং চিকিৎসা মহলে বড় ধাক্কা দিয়েছে। ত্রিমুখী প্রেম এবং কর্মক্ষেত্রে উত্তেজনার জেরে ঘটানো এই হত্যাকাণ্ড সামাজিক, আইনগত এবং নিরাপত্তা দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে। আসাদকে গ্রেফতার ও আদালতে পাঠানো হয়েছে, এবং তদন্ত এখনও চলছে।

এম আর এম – ১১৫৬, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button