দেশপ্রেমিক লোকজন কষ্ট করে পাথরগুলো সরিয়ে নিয়েছে

সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি একটি বিদ্রুপমূলক ফেসবুক পোস্টে ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরের ঘটনাকে হালকাভাবে উপস্থাপন করেছেন। কিন্তু প্রকৃত ঘটনা এবং মিডিয়ায় পাওয়া তথ্য থেকে প্রমাণিত হয়েছে, এটি কোনো দেশপ্রেমিক উদ্যোগ বা রিসেট বাটন চেপে দেয়ার মতো কার্যক্রম নয়, বরং একটি অপরাধ ও প্রশাসনিক অবহেলার ফলাফল।
পোস্ট কী বলছে – একটি হাস্যরস খানে ভরা উপস্থাপনা
গোলাম মাওলা রনি তাঁর পোস্টে লিখেছেন যে, ভোলাগঞ্জের সাদা পাথরের স্থান “হিজিবিজি” অবস্থায় ছিল। দেশপ্রেমিক লোকজন কষ্ট করে সেই পাথর সরিয়ে ফেলেছে ফলস্বরূপ পুরো এলাকা বালিতে চিকচিক করছে। নদীর নাব্যতা বেড়ে যাওয়ায় ভারতের পক্ষ থেকে মাছ, পানি ও পাথর ছুটে আসা শুরু করেছে! তিনি এভাবে ব্যঙ্গ করেছেন, পুরো দেশ যদি একইভাবে রিসেট হয়, তবে দেশ হয়ে যাবে আরবের মরু, যেখানে মরুভূমির নিচে তেল, উট, ভেড়া, স্যান্ড ফার্ম সবই বাস্তব।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিক্রিয়া – সমালোচনা ও ব্যঙ্গমিশ্রিত প্রতিবেদন
এই পোস্ট নানা অনলাইন মিডিয়ায় আলোচিত হয়। কালের কণ্ঠ, আরটিভি ও ঝাগোনিউজ২৪ বিষয়টিকে ‘হাস্যরস’ ও ‘বিদ্রুপমূলক’ মন্তব্য বলে উল্লেখ করেছে। গোলাম মাওলা রনির পোষ্টের ভাষা এবং দৃষ্টিভঙ্গিকে ব্যঙ্গাত্মক হিসেবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
বাস্তবতা কী? পাথর লুট – স্বেচ্ছাচারী না অপরাধমূলক ঘটনা
- পাথর লুটের খবর সত্য: স্থানীয় গণমাধ্যমে জানা গেছে, ভোলাগঞ্জের সাদা পাথর দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন ব্যক্তিরা হস্তক্ষেপের মাধ্যমে লুট হচ্ছে—যার ফলে দৃষ্টিনন্দন পর্যটন কেন্দ্রটি বস্তুত বিপন্ন হয়েছে।
প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ ঘনফুট পাথরের লুট হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাজার মূল্য প্রায় দুই শতকোটি টাকারও বেশি। - প্রশাসনের পার্শ্ববর্তী দিকে চিহ্ন পাওয়া যাচ্ছে: জেলা প্রশাসক পাথর প্রতিস্থাপন এবং উদ্ধার অভিযানের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ ও প্রশাসন তল্লাশি চালাচ্ছে।
এই তথ্য থেকে স্পষ্ট হয়, এটি কোনো দেশপ্রেমিক স্বেচ্ছাসেবামূলক উদ্যোগ নয় বরং আইনি ও প্রশাসনিক দায়িত্বের অবহেলার ফল।
বিশ্লেষণ ও সামাজিক প্রতিক্রিয়া
রনির লেখনিতে উপরোলিখিত ব্যঙ্গাত্মক চিত্র বরং সমাজের মধ্যে সচেতনতার অভাব তুলে ধরছে। প্রকৃত ঘটনা—লুট থেকে প্রতিকার ও উদ্যোগের দৃষ্টান্ত—সেখানে নেই। এই ধরনের ভুল ধারণা ও মিথানির মাধ্যমে সামাজিক মনস্তত্ত্ব বিভ্রান্ত হয়।
সত্য তথ্যের উপর ভিত্তি করে পরিবেশ সংরক্ষণ, পর্যটন ও প্রশাসনিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করাই আসল পথ।
গোলাম মাওলা রনির পোস্ট বিদ্রূপপূর্ণ হলেও এটি একটি বাস্তব সমস্যার প্রতি সামাজিক মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন—যা ছিল প্রশাসনের অবহেলা ও পারিপার্শ্বিক হস্তক্ষেপের ফল। প্রতিবেশী এলাকায় পর্যটন, পরিবেশ এবং নদী সংরক্ষণে সচেতনতা আসা জরুরি। ভবিষ্যতে সঠিক তথ্যের ভিত্তিতে সমাজ এগিয়ে গেলে “দেশপ্রেম” ও “দায়বদ্ধতা” বাস্তব অর্থ পাবে।
এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে Signalbd.com পাঠকদের কাছে যথার্থ, নির্ভরযোগ্য এবং বিশ্লেষণ সমৃদ্ধ প্রতিবেদন দেওয়া আমাদের অঙ্গীকার।
এম আর এম – ০৮৪৫, Signalbd.com