আঞ্চলিক

কনস্টেবলের স্ত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে বরখাস্ত এএসপি

Advertisement

বরিশাল রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সে (আরআরএফ) কর্মরত এক কনস্টেবলের স্ত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া এবং তাকে অনৈতিকভাবে হয়রানির অভিযোগে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মো. আফজাল হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ বুধবার (৩০ জুলাই) এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করেছে।

ঘটনার বিস্তারিত জানা যায়, পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে ওই কনস্টেবলের স্ত্রী আরআরএফের কমান্ড্যান্টের কাছে অভিযোগ করতে গেলে এএসপি আফজাল হোসেনের সঙ্গে তার দেখা হয়। এরপর থেকে ব্যক্তিগত পর্যায়ে যোগাযোগ শুরু হয় এবং এএসপি আফজাল হোসেন তাকে একাধিকবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিরক্ত করতে থাকেন।

ঘটনার পেছনের বিস্তারিত তথ্য

প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ওই কনস্টেবলের স্ত্রী অভিযোগ জানানোর উদ্দেশ্যে বরিশাল আরআরএফ অফিসে গেলে এএসপি আফজাল তার সাথে পরিচিত হন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সহানুভূতির সুযোগ নিয়ে তিনি ব্যক্তিগত পর্যায়ে হোয়াটসঅ্যাপ ও ফোনে যোগাযোগ শুরু করেন।
পরবর্তীতে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তিনি তাকে সংসার ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দেন এবং সরাসরি বিয়ের প্রস্তাব দেন বলে অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।

এছাড়াও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এএসপি আফজাল ওই কনস্টেবলের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য কৌশলী পরামর্শ দেন এবং তার ব্যক্তিগত সংসার ভাঙার চেষ্টা করেন।

প্রজ্ঞাপনের বক্তব্য

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, একজন শৃঙ্খলাপরায়ণ পুলিশ কর্মকর্তার এমন আচরণ পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। এতে আরও বলা হয়, আফজালের আচরণকে অসদাচরণ ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে।
এজন্য ২১ জুলাই থেকে তাকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

বরখাস্তকালীন সময়ে তিনি সিলেট রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত থাকবেন এবং নিয়ম অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।

আগে যা ঘটেছিল

পুলিশের অভ্যন্তরে শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য আগে একাধিকবার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগে কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের ঘটনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য নতুন নয়, তবে প্রতিবারই এটি জনমনে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্যক্তিগত ও পেশাগত সীমারেখা না মানলে এই ধরনের ঘটনা পুলিশ বাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে।

সামাজিক প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। সাধারণ মানুষ মনে করছেন, পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছ থেকে এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
অনেকেই আশা প্রকাশ করেছেন, এই ঘটনার যথাযথ তদন্ত হবে এবং ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেদিকে খেয়াল রাখা হবে।

পুলিশের ভাবমূর্তি নিয়ে উদ্বেগ

পুলিশ বাহিনী সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে থাকে। তাই এমন কোনো ঘটনা যেখানে কোনো কর্মকর্তার ব্যক্তিগত আচরণ পুরো বাহিনীর ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ করে তোলে, তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
এই ঘটনার ফলে অভ্যন্তরীণ পর্যায়ে শৃঙ্খলা ও নৈতিকতার বিষয়ে আরও কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে বলে অনেকেই মনে করছেন।

বিশেষজ্ঞদের মন্তব্য

অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলা ও পেশাগত নৈতিকতার বিষয়ে অভিজ্ঞরা বলছেন, অনৈতিক আচরণের ক্ষেত্রে দ্রুত ও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া বাহিনীর পক্ষে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত তৈরি করে।
তাদের মতে, এই ঘটনাটি আবারও দেখিয়ে দিল যে, পুলিশের অভ্যন্তরে সুশাসন ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা কতটা জরুরি।

ভবিষ্যতে কী হতে পারে

এএসপি আফজালের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম চলবে এবং তদন্তের ভিত্তিতে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে। দোষ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।
অনেকেই আশা করছেন, এই ঘটনার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনী আরও স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।

এম আর এম – ০৬০৪ , Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button