আঞ্চলিক

হাতিরঝিল ড্রোন শো, যান চলাচল বন্ধ নির্দেশনা

Advertisement

রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র হাতিরঝিলে আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যা ৪টা থেকে শুরু হয়েছে ‘জুলাই পুনর্জাগরণ ২০২৫’ শীর্ষক বিশেষ ড্রোন শো। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান রাত ১১টা পর্যন্ত চলবে। জনসাধারণের নিরাপত্তা এবং যানজট এড়াতে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) হাতিরঝিল এলাকায় যান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ডিএমপির গুলশান ট্রাফিক বিভাগ আজ এক ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে এই তথ্য জানায়। পোস্টে বলা হয়, অনুষ্ঠান চলাকালীন হাতিরঝিলের মূল সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকবে। এ অবস্থায় ডিএমপি থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করার জন্য বিশেষ অনুরোধ করা হয়েছে।

বিকল্প সড়ক পথ ও চলাচলের নির্দেশনা

ডিএমপি গুলশান ট্রাফিক বিভাগের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গুলশান, বারিধারা, নিকেতন, মহাখালী, আড়ং, রামপুরা এবং বনশ্রী অঞ্চল থেকে যাতায়াতের জন্য সড়ক ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। রেইনবো ক্রসিং থেকে সাতরাস্তা, লাভ রোড, এবং তিব্বত ক্রসিং হয়ে গন্তব্যে যাওয়া যাবে।

এছাড়া, গুলশান থেকে বের হওয়া যানবাহনগুলো পুলিশ প্লাজা হয়ে হাতিরঝিল পার হয়ে রেইনবো ক্রসিং দিয়ে গন্তব্যে যেতে পারবে। ডিএমপি নিশ্চিত করেছে, ড্রোন শো শেষ হওয়ার পর হাতিরঝিল এলাকায় যান চলাচল স্বাভাবিক করা হবে।

হাতিরঝিল: ঢাকা শহরের প্রাণকেন্দ্র

হাতিরঝিল ঢাকার অন্যতম প্রধান জলাভূমি ও পর্যটন কেন্দ্র। বিগত বছরগুলোতে হাতিরঝিল এলাকায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও প্রযুক্তিনির্ভর অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। ড্রোন শো আয়োজনের মাধ্যমে হাতিরঝিল আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, যা মূলত প্রযুক্তি ও সংস্কৃতির এক অনন্য মেলবন্ধন।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান ও এর গুরুত্ব

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ১৯৯০ সালের জুলাই মাসে আন্দোলনকারীরা একত্রিত হয়ে দমন-পীড়নমূলক শাসনের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলে, যা অবশেষে একনায়কতন্ত্রের অবসান ঘটায়। প্রতি বছর এই উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান হয়ে থাকে, যেখানে নতুন প্রজন্মকে দেশের ইতিহাস ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সম্পর্কে সচেতন করা হয়।

ড্রোন শোর আধুনিকত্ব ও আকর্ষণীয়তা

ড্রোন শো হচ্ছে আধুনিক প্রযুক্তির এক রোমাঞ্চকর আয়োজন, যেখানে শতাধিক ড্রোন একযোগে আকাশে নির্দিষ্ট প্যাটার্নে উড়তে থাকে। বিশেষ আলো ও ডিজাইনের মাধ্যমে দর্শকদের মোহিত করে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ড্রোন শো শুধুমাত্র বিনোদন নয়, এটি দেশের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও সক্ষমতারও পরিচায়ক।

ডিএমপির ভূমিকা ও সচেতনতা

ঢাকা মহানগর পুলিশ প্রতিটি বড় ইভেন্টে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। যানজট নিয়ন্ত্রণ, সড়ক নিরাপত্তা এবং জরুরি সেবা অব্যাহত রাখা তাদের অগ্রাধিকার।

এবারের ড্রোন শো উপলক্ষে ডিএমপি সড়ক ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনার পাশাপাশি, নিরাপত্তা ঝুঁকি কমাতে জনসাধারণকে বিকল্প রুট ব্যবহারে উৎসাহিত করছে। ডিএমপির পক্ষ থেকে অবগত করা হয়েছে, দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় সতর্কতা ও পুলিশি নির্দেশনা মেনে চলার জন্য।

জনসাধারণের জন্য পরামর্শ ও নিরাপত্তা নির্দেশিকা

  • হাতিরঝিল এলাকায় ড্রোন শো চলাকালীন সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় নির্ধারিত বিকল্প পথ অবলম্বন করবেন।
  • জরুরি প্রয়োজনে ডিএমপি বা স্থানীয় পুলিশ স্টেশনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।
  • যানজট এড়াতে সময় মত বাড়তি ধৈর্য্য ধরতে হবে।
  • পায়ে হেঁটে চলাচলের ক্ষেত্রে নির্ধারিত পথ অনুসরণ করবেন এবং পুলিশের নির্দেশনা মেনে চলবেন।
  • ইভেন্ট এলাকার আশপাশে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে, কারণ অপ্রয়োজনীয় যানবাহন পার্কিং নিষিদ্ধ থাকবে।

ড্রোন শোর মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রযুক্তির প্রগতির চিত্র

গত দশকে ড্রোন প্রযুক্তি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বাংলাদেশেও সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে ড্রোন ব্যবহারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষি, জরুরি সেবা, পরিবহন ও বিনোদন খাতে ড্রোন প্রযুক্তির সম্ভাবনা ব্যাপক।

হাতিরঝিল ড্রোন শো দেশের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির এক বাস্তব উদাহরণ। এতে অংশগ্রহণকারী ড্রোনগুলো বিভিন্ন আকর্ষণীয় মুভমেন্ট ও ডিজাইন প্রদর্শন করে দর্শকদের মুগ্ধ করে।

হাতিরঝিলে আয়োজনের প্রস্তুতি ও পরবর্তী পরিকল্পনা

এই ড্রোন শো আয়োজনের জন্য হাতে গড়া একটি টিম মাসখানেক ধরে প্রস্তুতি নিয়েছে। তারা শো এর নিরাপত্তা, প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা, ও জননিরাপত্তার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ভবিষ্যতে হাতিরঝিলে আরও নিয়মিত ও বৃহৎ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে, যাতে বাংলাদেশের সংস্কৃতি, প্রযুক্তি ও ইতিহাসের মেলবন্ধন ঘটানো যায়।

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button