আঞ্চলিক

সোমবার রাজধানী ও নারায়ণগঞ্জে ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

ডিএনডি খাল খনন প্রকল্পের আওতায় গ্যাস পাইপলাইন স্থানান্তরের কাজ চলায় আগামী সোমবার সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত রাজধানীর একাধিক এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ঘটনার সারসংক্ষেপ 

রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশের বেশ কিছু এলাকায় সোমবার (৭ জুলাই) গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে। সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মোট ১১ ঘণ্টা সময়জুড়ে এ সরবরাহ বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড। ডিএনডি খাল খনন প্রকল্পের আওতায় গ্যাস লাইনের স্থানান্তর কাজের কারণেই এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ঘোষণার বিস্তারিত 

তিতাস গ্যাসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ এলাকার ডিএনডি খাল খনন প্রকল্পের আওতায় গ্যাস পাইপলাইন স্থানান্তর করতে হচ্ছে। এর ফলে ৭ জুলাই সোমবার সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ১১ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না নির্ধারিত এলাকাগুলোতে।

গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে নিম্নোক্ত এলাকাগুলোতে—
ডেমরা, স্টাফ কোয়ার্টার, হাজীনগর, টেংরা, বাহির টেংরা, আমতলা, বড়ভাঙ্গা, কোদালদোয়া, সানারপাড়, নিমাইকাশারি, নামা শ্যামপুর, জিয়া সরণী, জাপানি বাজার, তিতাস গ্যাস সড়ক, ছাপড়া মসজিদ, রূপসী বাংলা হাসপাতাল, শনির আখড়া, আরএস টাওয়ার সংলগ্ন এলাকা, গোবিন্দপুর, মাতুয়াইল, মৃধাবাড়ী, কাজলা, ভাঙ্গা ব্রিজ, আমুলিয়া, পাইটি, জহির স্টিল, শাহরিয়ার স্টিল, ধার্মিক পাড়া ও কাউন্সিল এলাকা।

তিতাস গ্যাস আরও জানিয়েছে, শুধুমাত্র আবাসিক নয়, সব শ্রেণির গ্রাহকদের জন্যই এই সময়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।

ডিএনডি খাল খনন প্রকল্পটি রাজধানীর পানি নিষ্কাশন ও জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন লাইন স্থানান্তর করতে হচ্ছে। এর আগেও এই প্রকল্পের কারণে একাধিকবার নির্দিষ্ট এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ছিল।

তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই লাইন স্থানান্তরের কাজ অগ্রাধিকারভিত্তিতে চলছে, যেন ভবিষ্যতে দীর্ঘ সময় ধরে কোনো দুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া 

যে সকল এলাকায় গ্যাস থাকবে না, সেসব এলাকায় রান্নাবান্নাসহ দৈনন্দিন কার্যক্রমে সমস্যায় পড়বেন সাধারণ জনগণ।

বিশেষ করে আবাসিক গ্রাহকদের মধ্যে অনেকেই ইতিমধ্যে সামাজিক মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কর্মজীবী মানুষদের ক্ষেত্রে এই সময়সূচি খুবই বিপর্যয়কর হতে পারে বলে অনেকে মত দিয়েছেন।

এদিকে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ জানায়, “আমাদের এই উদ্যোগ গ্রাহকদের দীর্ঘমেয়াদে আরও নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিতে সহায়ক হবে। আমরা সবার সহযোগিতা কামনা করছি।”

পরিসংখ্যান 

ঢাকা শহরে তিতাস গ্যাসের অধীনে রয়েছে প্রায় ২৮ লাখ গ্রাহক। এর মধ্যে প্রায় ৯০ শতাংশ আবাসিক এবং বাকি অংশ শিল্প ও বাণিজ্যিক খাতে। প্রতি মাসে গড়ে ২–৩ বার গ্যাস সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে কোনো না কোনো এলাকায়।

তবে সাধারণত এ ধরনের দীর্ঘ সময়ের (১১ ঘণ্টা) জন্য বন্ধ থাকা তুলনামূলক কম হয়ে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে বিকল্প ব্যবস্থা যেমন ইলেকট্রিক চুলা বা ইনভার্টার ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে।

বিশেষজ্ঞ মতামত 

শহর পরিকল্পনাবিদ এবং নাগরিক অধিকার বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে জনসচেতনতা ও আগাম প্রস্তুতির ব্যবস্থা আরও জোরদার করা দরকার।

শহর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী মাহফুজ হোসেন বলেন, “যেকোনো ধরনের লাইনের স্থানান্তর প্রকল্প আগে থেকেই সুনির্দিষ্ট সময়সূচি দিয়ে জনগণকে জানানো উচিত। একইসঙ্গে বিকল্প গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থাও বিবেচনায় নেওয়া জরুরি।”

সংক্ষেপ 

আগামী সোমবার গ্যাস সংযোগ বন্ধ থাকায় ক্ষুব্ধ হলেও নাগরিকরা অনিচ্ছাসত্ত্বেও বিষয়টি মেনে নিতে বাধ্য হবেন। তবে প্রশ্ন থেকে যায়—এমন বড় প্রকল্পে কতটা জনসচেতনতা তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে?

বিশ্লেষকদের মতে, পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ও সময়মতো তথ্য দেওয়া হলে জনদুর্ভোগ অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

এম আর এম – ০১৯৯, Signalbd.com

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button