৬ সন্তানের জননীকে নিয়ে পালালেন যুবক, মাকে ফেরত চেয়ে সন্তানের আকুতি

ভোলার চরফ্যাশনে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা—৬ সন্তানের জননী আয়েশা বেগমকে নিয়ে পলায়ন করেছে এক যুবক। সন্তানদের কান্না ও আকুতি এখন গ্রাম জুড়ে আলোচিত বিষয়। পরিবার ভেঙে পড়েছে দুশ্চিন্তায়।
বিস্তারিত ঘটনা:
মায়ের হঠাৎ উধাও, পরিবারের কান্না
চরফ্যাশনের জিন্নাগড় ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা কাট মিস্ত্রি ইয়াকুব মুন্সির স্ত্রী আয়েশা বেগম গত ২৪ জুন সকালে নিখোঁজ হন। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওইদিন বেলা ১১টার দিকে আয়েশাকে নিয়ে পলায়ন করেন একই এলাকার আব্দুর রব হাওলাদারের ছেলে মুরাদ হাওলাদার।
পরিবারের দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইউএনও অফিসের কর্মচারী সোহাগ এবং তার স্ত্রী। সন্তানদের পক্ষ থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।
পারিবারিক ভাঙন:
“আমাদের মা কোথায়?”—সন্তানদের প্রশ্ন
ইয়াকুব মুন্সি বলেন, “আমি কাজ থেকে ফিরে দেখি ঘরের দরজায় তালা, চাবি নিচে। ছেলেমেয়েরা জানাল, মা নেই। খোঁজাখুঁজি করে জানতে পারি মুরাদ প্রায় সময় আমাদের বাসায় আসতো।”
তিনি আরও জানান, ঘটনার দিন ঘর থেকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণালঙ্কারও খোয়া গেছে। “আমার সন্তানদের হুমকি দিয়েছে মুরাদ—মাকে খুঁজলে সবাইকে মেরে ফেলবে।”
পেছনের কাহিনি ও সম্পর্ক:
প্রতিবেশীদের চোখে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মুরাদ হাওলাদার দীর্ঘদিন ধরেই আয়েশা বেগমের সঙ্গে ফোনে কথা বলতেন। ইয়াকুবের অনুপস্থিতিতে তার ঘরে যাতায়াতও ছিল নিয়মিত।
এক প্রতিবেশী বলেন, “আমরা আগেও সন্দেহ করেছিলাম। এখন তো শুনছি মুরাদ তিন সন্তানসহ তাদের নিয়েই পালিয়ে গেছে। এমন ঘটনা সে আগেও ঘটিয়েছে।”
উল্লেখ্য, মুরাদ এর আগেও দুই নারীর সঙ্গে সম্পর্ক করে এলাকা ছাড়ার অভিযোগ রয়েছে।
আইনি পদক্ষেপ:
সন্তানদের পক্ষ থেকে প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে
মা ফিরে পেতে সন্তানরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। তারা বলছে, “আমরা ৫ ভাই ১ বোন, সুখে ছিলাম। এখন ঘর শুন্য। মুরাদ আর তার বন্ধু সোহাগ আমাদের জীবন দুর্বিষহ করেছে।”
ইউএনও কার্যালয়ের কর্মচারী সোহাগ হাওলাদার দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ এবং তাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে। তবে তার ফোন ট্র্যাকিং অনুযায়ী মুরাদ ঘটনার সময় তার মোবাইল ব্যবহার করেছে বলে দাবি পুলিশের এক সূত্রের।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি ও জনমত:
পালিয়ে থাকা অভিযুক্তের খোঁজে তৎপর প্রশাসন
অভিযুক্ত মুরাদের বাড়িতে গেলে তালা ঝুলতে দেখা যায় এবং তার ভাই সংবাদকর্মীদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, “এমন ঘটনা আমাদের সমাজকে কলুষিত করে। দ্রুত মুরাদ ও সহযোগীদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।”
ঘটনাটি কীভাবে মোড় নিতে পারে?
পরিবার চাইছে শান্তি, প্রশাসন চাইছে তথ্য
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন আরও গভীর তদন্ত শুরু করেছে। মুরাদ এবং তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে শিগগিরই। পরিবার এখন একটাই অনুরোধ জানাচ্ছে—“আমাদের মা ফিরিয়ে দিন।”
এম আর এম – ০০৯২, Signalbd.com