আঞ্চলিক

বগুড়ায় ছুটে গেলেন রিয়া মনি, হিরো আলমকে জড়িয়ে ধরলেন বুকে

বন্দুর বাড়িতে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন হিরো আলম। খবর পেয়ে স্ত্রী রিয়া মনি ছুটে যান বগুড়ায়। তাকে বুকে জড়িয়ে ধরে আবেগঘন মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন হৃদয়ছোঁয়া বার্তা।

বগুড়ার ধুনটে বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিরো আলম। খবর শুনেই তার স্ত্রী রিয়া মনি ছুটে যান সেখানে। হাসপাতালে পৌঁছে হিরো আলমকে বুকে জড়িয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।

কী ঘটেছে বগুড়ায়?

বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) দিবাগত রাতে বগুড়ার ধুনট উপজেলার ভান্ডারবাড়ি গ্রামে বন্ধু নাট্যকার জাহিদ হাসানের বাড়িতে বেড়াতে যান আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। সেখানেই গভীর রাতে ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।

পরদিন সকালে ঘুম থেকে না ওঠায় সন্দেহ হয় তার বন্ধুর। বালিশের পাশে ওষুধের পাতা পড়ে থাকতে দেখে সঙ্গে সঙ্গে হিরো আলমকে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

সম্পর্কের টানাপোড়েনেই হতাশা?

গত কয়েক মাস ধরে হিরো আলম ও তার স্ত্রী রিয়া মনির মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সাক্ষাৎকার ও পোস্টে দুজনের মাঝের দূরত্ব প্রকাশ পায়। নানান বিষয়ে ভুল বোঝাবুঝি ও পারিবারিক সমস্যা নিয়ে চাপে ছিলেন হিরো আলম।

বগুড়ার ঘটনায় হিরো আলমের বন্ধু জানান, “সে রাতে আমাদের অনেক কথাবার্তা হয়। সে খুব হতাশ ছিল। সে বারবার বলছিল, কোথায় গেলে একটু শান্তি পাওয়া যায়?” এমন হতাশা থেকেই হয়তো এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে ধারণা তার।

রিয়া মনির আবেগঘন উপস্থিতি: ভালোবাসার প্রকাশ

আত্মহত্যার চেষ্টা সংক্রান্ত খবর শুনে আর অপেক্ষা করেননি রিয়া মনি। সকালেই ঢাকায় অবস্থান করা অবস্থায় বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। হাসপাতালে পৌঁছে তিনি হিরো আলমকে জড়িয়ে ধরে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন।

পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কয়েকটি ছবি পোস্ট করে লেখেন,
“সম্পর্ক গড়তে যেমন সময় লাগে, ভাঙতেও তেমনই সময় লাগে। কিন্তু সম্পর্ক গড়ে ওঠে দুজনের মতোতে, আর ভাঙে তৃতীয় পক্ষের কারণে।”

তার এই স্ট্যাটাস মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়। অনেকেই তাদের সম্পর্কের প্রতি সম্মান জানিয়ে শুভ কামনা জানিয়েছেন।

মিশ্র অনুভূতি

এই ঘটনার পর সামাজিক মাধ্যমে হিরো আলমকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা আরও তীব্র হয়েছে। কেউ বলছেন, তিনি সবসময় আলোচনায় থাকতে চান, আবার কেউ বলছেন—ব্যক্তিগত যন্ত্রণায় মানুষ এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

একজন নেটিজেন লিখেছেন,
“এই মানুষটাকে আমরা হাস্যরসের উপকরণ বানিয়ে ফেলেছি, অথচ তার ভেতরের যন্ত্রণা দেখার সময় নেই কারও।”

অন্যদিকে অনেকেই রিয়া মনির মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি ও দায়িত্বশীলতার প্রশংসা করেছেন।

হিরো আলম কি একা?

এই ঘটনা আরও একবার প্রমাণ করে দেয়, জনপ্রিয়তা বা খ্যাতি মানেই সুখ নয়। একাকিত্ব, হতাশা ও সম্পর্কের জটিলতা যখন মিলেমিশে যায়, তখন মানুষ সবচেয়ে বড় ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আরও সচেতনতা দরকার। এমন ঘটনা যেন অন্য কেউ অনুসরণ না করে, সেজন্য পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

ঢাকায় চিকিৎসা, সম্পর্কের নতুন অধ্যায়?

রিয়া মনি জানিয়েছেন, তিনি হিরো আলমকে ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছেন উন্নত চিকিৎসার জন্য। একইসাথে জানিয়েছেন,
“সমস্যা যত বড়ই হোক, আমরা একে অপরের পাশে থাকব।”

এই বক্তব্য অনেকের মন ছুঁয়ে গেছে। প্রশ্ন উঠছে—এটি কি তাদের সম্পর্কে নতুন কোনো অধ্যায়ের সূচনা?

সমালোচনার ভিড়ে মানবিকতা যেন না হারায়

হিরো আলমের ঘটনা কেবল তার ব্যক্তিগত যন্ত্রণার গল্প নয়, এটি আমাদের সমাজের এক আয়না। যেখানে মানুষ হাসায়, সেখানে হয়তো সে নিজেই কাঁদে ভিতরে ভিতরে।

তবে এই ঘটনার পর হিরো আলম ও রিয়া মনি কি একসাথে নতুন করে পথ চলা শুরু করবেন? সেটা সময়ই বলে দেবে।


এম আর এম – ০০৭৪, Signalbd.com

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button