জাতীয়

ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস ঘেরাও, উত্তাল গুলশান

ইসরায়েলের গাজায় দীর্ঘস্থায়ী সামরিক আগ্রাসন ও ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ওপর বর্বর হামলার প্রতিবাদে আজ সোমবার ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে মুখরিত হয়েছে প্রতিবাদ। ‘ফ্রি ফিলিস্তিন’ স্লোগানে গুলশান এলাকায় কয়েকশ তরুণের অংশগ্রহণে ঝটিকা মিছিল অনুষ্ঠিত হয়, যার ফলে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় দূতাবাস সংলগ্ন প্রধান সড়ক।

ঝটিকা মিছিল ও দূতাবাস ঘেরাওয়ের চেষ্টা

বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে, কয়েকজন তরুণ গুলশান-২ নম্বর সড়কে মার্কিন দূতাবাসের সামনে এসে জড়ো হন। মুহূর্তেই তারা মিছিল শুরু করেন এবং ‘ইসরায়েল নিপাত যাক’, ‘আমরা সবাই ফিলিস্তিনি’ ইত্যাদি স্লোগানে মুখরিত হয় আশপাশের এলাকা।

পুলিশ এবং সেনাসদস্যরা আগে থেকেই উচ্চ সতর্কতায় ছিলেন। সেনাবাহিনী তৈরি করে মানবপ্রাচীর, যাতে কেউ দূতাবাসের দিকে অগ্রসর হতে না পারে। অতিরিক্ত নিরাপত্তার অংশ হিসেবে অনেককে তল্লাশি করে প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়। রাস্তার পাশে সাধারণ জনগণকে দাঁড়াতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।

যান চলাচলে বিঘ্ন ও নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ

দূতাবাস এলাকায় বিক্ষোভের সময় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয় গুলশান-নতুনবাজার মহাসড়কের একাংশ। দুপুর ১২টার দিকে পুলিশের হস্তক্ষেপে রাস্তার এক পাশ খুলে দেওয়া হয় এবং যান চলাচল ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে থাকে। তবে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল।

প্রতিবাদকারীদের বক্তব্য

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহফুজ আলম বলেন:

“ফিলিস্তিন গাজার জয় হবেই হবে। যত দিন পৃথিবী থাকবে, ইসলামের পবিত্র ভূমি ধ্বংস করা যাবে না। এখন দরকার বিশ্বের মুসলমানদের এক হওয়া। জিহাদের প্রথম ধাপ হলো বিশ্বব্যাপী এই বিক্ষোভ।”

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ

গুলশানে বিক্ষোভ ছাড়াও সকাল থেকেই বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন—
“ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন”, “ট্রাম্পের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে”, “আমরা কারা তোমরা কারা—ফিলিস্তিন, ফিলিস্তিন।”

এই প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, নর্থ সাউথ, আইইউবি, ইউল্যাবসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা।

বিশ্বজুড়ে বিক্ষোভের ঢেউ, ঢাকায় তার প্রতিফলন

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫০ হাজারের বেশি, আহত হয়েছেন এক লাখেরও বেশি মানুষ। সেই ভয়াবহতার প্রতিচ্ছবি আজ যেন উঠে এল ঢাকার রাস্তায়। বিক্ষোভকারীরা স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন—“আমরা নীরব থাকব না।”

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button