সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক; হাসনাতের সঙ্গে দ্বিমত করলেন সারজিস

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ সম্প্রতি সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক সম্পর্কিত একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি বৈঠকে হওয়া কথপকথন এবং তার পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। একই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন দলের উত্তরাঞ্চলের সংগঠক সারজিস আলম, যিনি এবার নিজের অভিমত তুলে ধরলেন।
সারজিসের স্ট্যাটাস
রোববার (২৩ মার্চ) বেলা ১২টার দিকে সারজিস তার ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি হাসনাতের সঙ্গে কিছুটা দ্বিমত প্রকাশ করেন। সারজিস বলেন, “সেদিন আমি এবং হাসনাত সেনাপ্রধানের সাথে গিয়ে কথা বলি। আমাদের সাথে আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ আরেকজন সদস্যের যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে তিনি যেতে পারেননি।”
বৈঠকের বিষয়বস্তু
সারজিস উল্লেখ করেন, সেনাপ্রধান পিলখানা হত্যাকাণ্ড দিবসে কড়া ভাষায় বক্তব্য দেন এবং বলেন, “এনাফ ইজ এনাফ।” তিনি সেনাপ্রধানের মিলিটারি এডভাইজারকে জিজ্ঞাসা করেন, “আপনারা কি এ বিষয়ে সরাসরি কথা বলতে চান?” সারজিসের মতে, সেনাপ্রধানের বক্তব্য তুলনামূলকভাবে সরাসরি এবং কঠোর ছিল।
দ্বিমত প্রকাশ
সারজিস বলেন, “হাসনাত সেদিন যেভাবে সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে অবজার্ভ ও রিসিভ করেছে, সেখানে আমার কিছুটা দ্বিমত আছে। আমি সেদিনের বক্তব্যকে সরাসরি ‘প্রস্তাব’ দেয়ার আঙ্গিকে দেখি না বরং ‘সরাসরি অভিমত প্রকাশের’ মতো করে দেখি।”
তিনি আরও বলেন, “রিফাইন্ড আওয়ামী লীগের জন্য চাপ দেওয়ার যে বিষয়টি এসেছে, সেখানে ‘চাপ দেওয়া হয়েছে’ এমনটি আমার মনে হয়নি। বরং সেনাপ্রধান দেশের পরিস্থিতি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সমস্যার সৃষ্টি হবে সেটা আত্মবিশ্বাসের সাথে বলছিলেন।”
আলোচনার প্রসঙ্গ
সারজিস বলেন, বৈঠকে আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে কিনা, এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থাকলে কি হবে না থাকলে কি হবে, এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। তবে তিনি মনে করেন, হাসনাতের ফেসবুক লেখার টোন ততটা এক্সট্রিম ছিল না।
সমালোচনা ও আত্মসমালোচনা
সারজিস বলেন, “আমার এই বক্তব্যে আমার সহযোদ্ধা হাসনাতের বক্তব্যের সাথে বেশ কিছু ক্ষেত্রে দ্বিমত এসেছে। এটার জন্য অনেকে আমার সমালোচনা করতে পারেন, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি আমাদের ব্যক্তিত্ব স্রোতে গা ভাসানোর মত কখনোই ছিল না।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের এই বিবেকবোধের জায়গাটুকুই আমাদেরকে সঠিক পথে রাখবে। আত্মসমালোচনা করার এই মানসিকতাই আমাদেরকে আমাদের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে নিয়ে যাবে।”
সারজিসের এই স্ট্যাটাস রাজনৈতিক আলোচনার একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরছে, যেখানে দলের অভ্যন্তরীণ মতবিরোধ এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গি স্পষ্ট হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এই আলোচনা তাদের দলের মধ্যে আরও সুসংহত সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়ক হবে।