বিশ্ব

উড্ডয়নের তিন সেকেন্ড পরই বন্ধ হয়েছিল জ্বালানি সুইচ

Advertisement

গত ১২ জুন আহমেদাবাদে এয়ার ইন্ডিয়ার লন্ডনগামী বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজটি উড্ডয়নের মাত্র তিন সেকেন্ড পরই ইঞ্জিনের জ্বালানি সুইচ দুটি হঠাৎ ‘চালু’ অবস্থা থেকে ‘বন্ধ’ হয়ে যায়। এর ফলে ইঞ্জিনে জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে উড়োজাহাজটির গতি দ্রুত কমতে শুরু করে এবং শেষপর্যন্ত এটি বিধ্বস্ত হয়।
এতে প্রাণ হারান ২৬০ জন যাত্রী ও ক্রু সদস্য।

আজ শনিবার ভারতের উড়োজাহাজ দুর্ঘটনা তদন্ত ব্যুরো (AAIB) প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে, যেখানে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

ককপিট রেকর্ডিং-এ ধরা পড়ে বিভ্রান্তি

প্রতিবেদনে বলা হয়, ককপিট ভয়েস রেকর্ডার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দুর্ঘটনার সময় এক পাইলট অপর পাইলটকে জিজ্ঞাসা করেন,

“তুমি কেন জ্বালানি বন্ধ করলে?”
জবাবে অপর পাইলট বলেন,
“আমি কিছুই করিনি।”

তবে কোন পাইলট ফ্লাইট ক্যাপ্টেন আর কে ফার্স্ট অফিসার—এ বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন স্পষ্ট করেনি। এমনকি ‘মে ডে’ বিপৎসংকেত কে পাঠিয়েছিলেন, সেটাও নিশ্চিত করা হয়নি।

ভুলবশত সুইচ বন্ধ সম্ভব? বিশেষজ্ঞরা বলছেন না

যুক্তরাষ্ট্রের বিমান নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ জন কক্স বলেন,

“এই ধরনের সুইচ ভুল করে বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব। এগুলো খুবই সুনির্দিষ্টভাবে এবং সচেতনভাবে নাড়াতে হয়।”

তিনি আরও বলেন,

“জ্বালানি বন্ধ করা হয় সাধারণত বিমানবন্দরের গেটে পৌঁছানোর পর অথবা ইঞ্জিনে আগুন লাগার মতো জরুরি পরিস্থিতিতে। উড্ডয়নের মুহূর্তে এ রকম কিছু ঘটেনি বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ নেই।”

প্রযুক্তিগত দিক ও পরবর্তী পদক্ষেপ

এয়ার ইন্ডিয়া যে মডেলের উড়োজাহাজ ব্যবহার করছিল—বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার, এটি পরিচালিত হয় GE GEnx-1B ইঞ্জিনে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তদন্তের এই পর্যায়ে বোয়িং কিংবা জিই অ্যাভিয়েশন–এর বিরুদ্ধে কোনো কারিগরি ত্রুটির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তাই তাদের প্রতি এখনই কোনো সুপারিশ করা হয়নি।

তবে তদন্ত এখনো চলমান। এই মুহূর্তে এয়ার ইন্ডিয়া, বোয়িং এবং জিই—তিন পক্ষের কেউই গণমাধ্যমে কোনো মন্তব্য দেয়নি।

এ দুর্ঘটনা শুধু এয়ার ইন্ডিয়ার জন্য নয়, গোটা বিমান শিল্পের জন্যই একটি গুরুত্বপূর্ণ সতর্কবার্তা। তিন সেকেন্ডের মধ্যে কীভাবে এমন মারাত্মক ত্রুটি ঘটলো—তা জানতে এখন নজর রয়েছে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের দিকে।

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button