দেশে ২৪ ঘণ্টায় ১৩ জনের করোনা শনাক্ত, মৃত্যু শূন্য

সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে নতুন করে ১৩ জন আক্রান্ত হলেও মৃত্যুর কোনো ঘটনা ঘটেনি। শনাক্তের হার ৪.১৭ শতাংশ। স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি বছরে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫৮২ এবং মৃতের সংখ্যা ২২ জনে দাঁড়িয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা পরিস্থিতি: কী জানাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদফতর
দেশে আবারও করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে ধীরে ধীরে। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় (৩০ জুন সকাল ৮টা থেকে ১ জুলাই সকাল ৮টা পর্যন্ত) ১৩ জন নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে আশার কথা হলো, এ সময়ে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত করোনা সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, একদিনে মোট ৩১২টি নমুনা পরীক্ষায় ১৩ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা শনাক্তের হার ৪ দশমিক ১৭ শতাংশ।
করোনাভাইরাসে চলতি বছরের সংক্রমণ ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান
চলতি ২০২৫ সালের শুরু থেকে এ পর্যন্ত করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৫৮২ জন। মৃত্যুবরণ করেছেন ২২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে নারী ও প্রবীণদের সংখ্যাই তুলনামূলক বেশি।
গত কয়েক মাসে করোনার সংক্রমণ নিম্নমুখী হলেও সাম্প্রতিক পরীক্ষায় শনাক্তের হার আবারও কিছুটা বেড়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর ফলে স্বাস্থ্যসেবার ওপর চাপ না বাড়লেও সতর্কতা জরুরি।
করোনার ইতিহাস: কোথা থেকে শুরু, কোথায় দাঁড়িয়ে
বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। একই বছরের ১৮ মার্চ ঘটে প্রথম মৃত্যু। সেই থেকে দেশে এ পর্যন্ত মোট ২০ লাখ ৫২ হাজার ১২৭ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫২১ জনের।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভাইরাসটির প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার পর এখনো মাঝেমধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, বিশেষত সর্দি-জ্বরের মৌসুমে। তবে টিকাদান কর্মসূচি ও স্বাস্থ্য সচেতনতার ফলে মৃত্যুর হার অনেকটাই কমে এসেছে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ও সতর্কতা
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও এখন পর্যন্ত কোনো বড় আকারে সংক্রমণের আশঙ্কা নেই, তারপরও উপসর্গ দেখা দিলে পরীক্ষা করানো জরুরি।
জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)-এর এক কর্মকর্তা জানান—
“বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সংক্রমণ আবারও বাড়তে পারে। উপসর্গ থাকলে ঘরেই অবস্থান করুন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।”
তারা আরও পরামর্শ দেন, গণপরিবহন, হাসপাতাল এবং জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক ব্যবহার চালু রাখা উচিত।
গত বছরের তুলনায় অবস্থা কতটা ভালো?
২০২৪ সালে একই সময়ে প্রতিদিন গড়ে ৩০-৪০ জন করোনা আক্রান্ত হতো, যেখানে ২০২৫ সালে সেই সংখ্যা অনেকটা কমে এসেছে। একইভাবে মৃত্যুর হারেও রয়েছে ব্যাপক হ্রাস।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর অন্যতম কারণ হচ্ছে—
- অধিকাংশ মানুষ ইতোমধ্যে করোনার টিকা নিয়েছেন
- প্রাকৃতিক সংক্রমণের মাধ্যমে শরীরে তৈরি হয়েছে অ্যান্টিবডি
- সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি পেয়েছে
তবে ভাইরাসটি একেবারে চলে গেছে, এমন ভাবা ভুল হবে। পরিবর্তিত রূপে এটি আবারও সংক্রমণ ছড়াতে পারে।
ভবিষ্যতের জন্য করণীয়
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে—
- উপসর্গ দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে করোনা পরীক্ষা করানো
- সংক্রমিত হলে আইসোলেশনে থাকা
- গণপরিবহনে ও জনসমাগমস্থলে মাস্ক ব্যবহার করা
- হাত ধোয়া ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় মনোযোগী হওয়া
- করোনা টিকার বুস্টার ডোজ নেওয়া
সরকারি পর্যায়েও আবার টিকা কার্যক্রম পুনরায় চালুর চিন্তা-ভাবনা চলছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
সারসংক্ষেপঃ
করোনা ভাইরাসের প্রভাব আগের মতো না থাকলেও এখনো এটি পুরোপুরি নির্মূল হয়নি। দেশের মানুষ যাতে সচেতন থাকে, সেটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন ভ্যারিয়েন্ট এলে পরিস্থিতি হঠাৎ পাল্টে যেতে পারে।
এম আর এম – ০১২৩, Signalbd.com