বাংলাদেশ পুলিশের ৫৯ জন সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত এসপি) হয়েছেন। সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ-১ শাখা থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। উপসচিব মো. মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জনস্বার্থে জারি করা এই পদোন্নতি আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
কারা পেলেন পদোন্নতি
পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন ৩৪তম, ৩৫তম ও ৩৬তম বিসিএস পুলিশ ক্যাডারের কর্মকর্তারা। এছাড়াও কয়েকজন কর্মকর্তা বিভাগীয় কোটা থেকেও পদোন্নতির সুযোগ পেয়েছেন। এ তালিকায় মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের পাশাপাশি মেট্রোপলিটন পুলিশ ও বিভিন্ন স্পেশাল ইউনিটের সদস্যরাও আছেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নতুন পদে যোগদানের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর যোগদানপত্র জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পুলিশের কাঠামোতে পদোন্নতির গুরুত্ব
বাংলাদেশ পুলিশের কাঠামোয় পদোন্নতি শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং পুরো বাহিনীর দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধির প্রতিফলন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে উন্নীত হওয়া কর্মকর্তারা জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করবেন।
এই পদোন্নতির মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে নেতৃত্ব আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ দমন এবং জনসেবামূলক কাজে তাদের দায়িত্ব ও কর্তৃত্ব আরও বাড়বে।
পূর্ববর্তী পদোন্নতি ও রদবদল
গত কয়েক বছরে বাংলাদেশ পুলিশে ধারাবাহিকভাবে পদোন্নতি ও রদবদল হয়েছে। পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটে দক্ষতা বাড়াতে এবং অভিজ্ঞ কর্মকর্তাদের উপযুক্ত মর্যাদা দিতে সরকার নিয়মিত এ উদ্যোগ নিচ্ছে।
এর আগে গত বছরই প্রায় শতাধিক পুলিশ কর্মকর্তাকে বিভিন্ন পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছিল। এবার ৫৯ জন কর্মকর্তার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদে উন্নীত হওয়া সেই ধারাবাহিকতার অংশ।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তারা নিজেদের নতুন দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। অনেকেই জানিয়েছেন, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও অপরাধ দমন কার্যক্রমে আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন তারা।
জননিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পুলিশের দক্ষ কর্মকর্তাদের প্রাপ্য পদোন্নতি দেওয়া হলে তাদের মনোবল বাড়ে, যা পুরো বাহিনীর কার্যক্ষমতাকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।
অন্যদিকে, সাধারণ মানুষও মনে করেন, পুলিশের ভেতরে কর্মদক্ষতার ভিত্তিতে স্বীকৃতি ও পদোন্নতি হলে মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা আরও ভালো হবে।
সংখ্যাগত দিক ও বাস্তবায়ন
পদোন্নতিপ্রাপ্ত ৫৯ কর্মকর্তার মধ্যে সর্বাধিক অংশ এসেছেন বিসিএস ক্যাডার থেকে। বিভাগীয় কোটার কর্মকর্তারা তুলনামূলক কম হলেও, তাদের দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা ও মাঠ পর্যায়ের কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।
নতুন পদে যোগদানের পর কর্মকর্তারা জেলা পুলিশ প্রশাসনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এর ফলে মাঠ প্রশাসনে নেতৃত্বের শূন্যতা পূরণ হবে।
বিশেষজ্ঞ মতামত
অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, “পদোন্নতির মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের কর্মকর্তারা নেতৃত্বের দায়িত্ব পাচ্ছেন। এতে শুধু বাহিনী নয়, সারাদেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থায় ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।”
তিনি আরও বলেন, পুলিশের মতো একটি শৃঙ্খলাবদ্ধ বাহিনীতে সময়মতো পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তাদের কর্মোদ্যম বাড়ায় এবং বাহিনীর প্রতি তাদের আনুগত্য দৃঢ় করে।
সংক্ষিপ্তসার
বাংলাদেশ পুলিশের ৫৯ কর্মকর্তা পদোন্নতি পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসেবে নতুন দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন। এ পদোন্নতি শুধু ব্যক্তিগত অর্জন নয়, বরং বাহিনীর দক্ষতা ও শক্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। মাঠ পর্যায়ে নেতৃত্বের এই রদবদল ভবিষ্যতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও সুসংহত করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এম আর এম – ১২৪০,Signalbd.com



