স্বাস্থ্য

হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে করণীয় কী?

Advertisement

হঠাৎ কারও হার্ট অ্যাটাক হলে দ্রুত এবং সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া জীবন রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্ব হার্ট দিবস উপলক্ষে বিশেষজ্ঞরা এই বিষয়টিতে বিশেষভাবে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। অনেক সময় হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ অন্য সাধারণ সমস্যার সঙ্গে মিলিয়ে ভুল বোঝা যায়, যা দেরিতে চিকিৎসা নেওয়ার কারণ হতে পারে।

হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণ

হার্ট অ্যাটাকের সময় কয়েকটি লক্ষণ স্পষ্টভাবে প্রকাশ পায়। সাধারণত বুকে প্রচণ্ড ব্যথা বা অস্বস্তি, শ্বাসকষ্ট, ঘাম হওয়া, বমি ভাব বা বমি, মাথা ঘোরা, হঠাৎ দুর্বলতা বা হাত-পায় জ্বালাপোড়া অনুভূত হওয়া প্রাথমিক সংকেত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত।

বয়স্ক বা পূর্বে হার্টের সমস্যা থাকা ব্যক্তির ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে লক্ষণগুলো আরও জটিল হতে পারে। এই অবস্থায় স্বাভাবিক ব্যথা বা গ্যাসজনিত সমস্যার সঙ্গে মিলিয়ে ভুল বোঝা হতে পারে, তাই সতর্ক থাকা অত্যাবশ্যক।

দ্রুত করণীয়

ডা. অশোক দত্ত, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের সিনিয়র কনসালট্যান্ট, পরামর্শ দিচ্ছেন—হার্ট অ্যাটাক সন্দেহ হলে তাড়াহুড়ো করা উচিত নয়। প্রথমে রোগীকে বসানো বা শোয়ানো, শান্ত রাখা এবং নিকটস্থ ডাক্তার বা হাসপাতালে যোগাযোগ করা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

ওষুধের ভূমিকা

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ ও রক্ত পাতলা করার জন্য অ্যাসপিরিন বা ক্লোপিডগ্রেল গ্রুপের ওষুধ গুরুত্বপূর্ণ। প্রাথমিক অবস্থায় একটি বা দুটি ট্যাবলেট খাওয়া যেতে পারে, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরিমাণ নির্ধারণ করা উত্তম।

অ্যাটোরভাস্ট্যাটিন বা রোসুভাস্ট্যাটিন গ্রুপের ওষুধ কোলেস্টেরল কমানোর পাশাপাশি হার্ট অ্যাটাকের সময় ক্ষতি কমাতে সহায়ক। গ্যাসজনিত ব্যথা থাকলেও এই ওষুধগুলো নেওয়া নিরাপদ, যদিও হালকা গ্যাসজনিত সমস্যা হতে পারে।

ভুল ধারণা ও বিপদজনক পদক্ষেপ

হার্ট অ্যাটাক সন্দেহে হাঁটাহাঁটি করা বা নিজে প্রমাণ করার চেষ্টা করা বিপজ্জনক। দ্রুত চিকিৎসা নেওয়ার বদলে এই পদক্ষেপ হৃদপিণ্ডকে আরও দুর্বল করতে পারে। ঢাকায় বা দূরের হাসপাতালে দ্রুত যাওয়ার চেষ্টাও ঝুঁকিপূর্ণ। তাই নিকটস্থ যে ডাক্তারই থাকুক, তার কাছেই প্রথমে যোগাযোগ করা উচিত।

জীবনধারার গুরুত্ব

হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে নিয়মিত স্বাস্থ্যপরীক্ষা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞরা বলেন, জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়।

বিশেষজ্ঞের মতামত

ডা. অশোক দত্ত আরও বলেন, হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে প্রাথমিক পদক্ষেপই জীবন রক্ষা করতে পারে। দ্রুত শারীরিক সাহায্য এবং সঠিক ওষুধ ব্যবহার অনেক সময় জীবন বাঁচায়। তিনি সবাইকে সচেতন থাকার পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদেরও হঠাৎ এমন পরিস্থিতিতে কী করা উচিত তা জানার পরামর্শ দিয়েছেন।

হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক কোনো সময় জানিয়ে আসে না। তাই সচেতন থাকা, প্রাথমিক লক্ষণ চিহ্নিত করা এবং নিকটস্থ ডাক্তার বা হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা জরুরি। ওষুধ, বিশ্রাম এবং স্বাস্থ্যপর্যবেক্ষণ মিলিয়ে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করলেই জীবন রক্ষা সম্ভব।

এম আর এম – ১৫৭১,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button