ফ্রিল্যান্সিং

ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্সের ১০% নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন

ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্সের ৩৮তম বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) গত সোমবার ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সভায় ২০২৪ সালের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন করা হয়। কোম্পানির চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায়, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিমসহ কোম্পানির পরিচালক ও শেয়ারহোল্ডারগণ অংশ নেন

ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্সের আর্থিক প্রতিবেদন ও লভ্যাংশ ঘোষণা

সভায় কোম্পানির নিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী উপস্থাপন এবং অনুমোদন করা হয়। কোম্পানির ২০২৪ সালের মোট প্রিমিয়াম আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৪ কোটি ১০ লাখ টাকা। এর পাশাপাশি, ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল ২৮৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা।

চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান উল্লেখ করেন, “বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা ও নানা যুদ্ধের কারণে অর্থনীতি সংকুচিত হলেও, ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্স সফলভাবে স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছে এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রেখেছে।”

ব্যবসায়িক নীতি ও স্বীকৃতি

ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্স তাদের ব্যবসায়িক নীতিতে সর্বদা স্বচ্ছতা এবং নৈতিকতা বজায় রেখেছে। এর প্রমাণ স্বরূপ প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ সালে ‘দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি)’ কর্তৃক ‘সেরা বার্ষিক প্রতিবেদন ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করে। একই বছর, সাউথ এশিয়ান ফেডারেশন অব অ্যাকাউন্ট্যান্টস (সাফা) তাদের ‘সেরা বার্ষিক প্রতিবেদন’ পুরস্কারে সম্মানিত করে।

২০১২ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্স ধারাবাহিকভাবে ‘দ্য ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)’ এর ‘বেস্ট করপোরেট অ্যাওয়ার্ড’ অর্জন করে। ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি ‘আইসিএবির সার্টিফিকেট অব মেরিট অ্যাওয়ার্ড’ এ ভূষিত হয়।

কোম্পানির বিমা দাবি পরিশোধ ও শেয়ার বাজারে অবস্থা

ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্স প্রতিষ্ঠার পর থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত মোট ৪২০ কোটি ৬০ লাখ টাকার বিমা দাবি পরিশোধ করেছে, যা একটি শক্তিশালী ও দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক পরিবেশের প্রমাণ।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানির শেয়ারের দাম গত সোমবার ১৭ টাকা ১০ পয়সায় লেনদেন হয়, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইতিবাচক সাড়া প্রতিফলিত করে।

ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্স: দেশের অন্যতম বিশ্বস্ত বিমা প্রতিষ্ঠান

ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্স দীর্ঘদিন ধরে দেশের বিমা খাতে বিশ্বস্ত ও শক্ত অবস্থান ধরে রেখেছে। বিমা খাতের বাজারে প্রতিযোগিতা তীব্র হলেও, কোম্পানি তাদের নীতিমালা ও ব্যবসায়িক নৈতিকতা অবিচল রেখে উন্নত সেবা দিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমান অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মাঝেও প্রতিষ্ঠানটি প্রিমিয়াম আয় বৃদ্ধি এবং শেয়ারহোল্ডারদের জন্য লাভজনক লভ্যাংশ প্রদানের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

১০% নগদ লভ্যাংশ: শেয়ারহোল্ডারদের জন্য সুখবর

কোম্পানির ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা শেয়ারহোল্ডারদের জন্য এক ভালো বার্তা। এটি কোম্পানির মজবুত আর্থিক অবস্থার প্রতিফলন এবং বিনিয়োগকারীদের আস্থাকে আরও প্রগাঢ় করে। উল্লেখযোগ্য যে, এই বছরের জন্য স্পনসর ও পরিচালকরা লভ্যাংশ নেবেন না, যা কোম্পানির উন্নয়ন ও পুনঃবিনিয়োগে গুরুত্বারোপ করে।

বাংলাদেশের বিমা খাতের বর্তমান চিত্র

বাংলাদেশে বিমা খাত দ্রুত বর্ধমান এবং দেশের অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচিত। সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগ মিলিয়ে বিমা খাতকে আরও শক্তিশালী করার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে করে, প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেদের আর্থিক স্থিতিশীলতা ও সেবা উন্নয়নে মনোনিবেশ করছে।

ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্স এর মতো কোম্পানি দেশের বিমা খাতের উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছে, যা সাধারণ মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্সের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সভায় জানান, ভবিষ্যতে কোম্পানি আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেবা প্রসার ও গ্রাহক সন্তুষ্টি বৃদ্ধিতে কাজ করবে। নতুন নতুন পণ্যে বিনিয়োগ ও বাজার সম্প্রসারণে গুরুত্ব দেবে।

তিনি আরও বলেন, “আমরা সবসময় আমাদের শেয়ারহোল্ডার ও গ্রাহকদের স্বার্থকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেব এবং দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাব।”

ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্সের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ অনুমোদন এবং মজবুত আর্থিক প্রতিবেদন দেশের বিনিয়োগকারীদের কাছে একটি সুসংবাদ। কোম্পানিটির ব্যবসায়িক নীতি, স্বচ্ছতা, আর্থিক স্থিতিশীলতা ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা তাকে বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় বিমা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রেখেছে।

শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রভাব এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার মাধ্যমে ইস্টল্যান্ড ইনস্যুরেন্স দেশের বিমা খাতের এক মজবুত ভিত্তি গড়ে তুলতে পারে।

মন্তব্য করুন
Back to top button