ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ হামলার পর ভারতীয় রুপির দরপতন

পাকিস্তানে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৭ মে) ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ হামলার পর মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির দরপতন ঘটেছে। বুধবার (৭ মে) ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রুপির দরপতন
প্রতিবেদনে বলা হয়, স্থানীয় সময় বুধবার (৭ মে) নন-ডেলিভারেবল ফরওয়ার্ড (এনডিএফ) বাজারে মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির মান কমেছে। এক মাসের এনডিএফ ইঙ্গিত দিচ্ছে, অনশোর স্পট মার্কেট খোলার সময় রুপির মান ৮৪.৬৪ থেকে ৮৪.৬৮ ডলারে পৌঁছাতে পারে, যা মঙ্গলবারের ৮৪.৪৩ থেকে নিচে।
সামরিক সংঘাতের প্রভাব
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সামরিক সংঘাত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, ডলারের বিপরীতে রুপির দুর্বলতা ভারতের জ্বালানি আমদানি ব্যয় বাড়িয়ে দিতে পারে।
মুম্বাই-ভিত্তিক একজন মুদ্রা কৌশলবিদ বলেছেন, “ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা স্বল্পমেয়াদে রুপিকে আরও দুর্বল করতে পারে। তবে, ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংকের হস্তক্ষেপ এবং বৈদেশিক মুদ্রার ও রিজার্ভের অবস্থান রুপির অতিরিক্ত পতন রোধ করতে পারে।”
‘অপারেশন সিন্দুর’ হামলার বিবরণ
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার (৬ মে) স্থানীয় সময় রাত ১টা ৪৪ মিনিটে ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরু করে ভারত। পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে সন্ত্রাসীদের ৯টি আস্তানা লক্ষ্য করে হামলা চালানোর দাবি করেছে দিল্লি।
পেহেলগামে হামলা
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের অধিকাংশই ছিলেন পর্যটক। হামলার পর দিল্লি সোজাসুজি এর দায় চাপিয়েছে ইসলামাবাদের ঘাড়ে।
কূটনৈতিক পদক্ষেপ
দুই দেশ থেকে নেওয়া হয়েছে বেশ কিছু কূটনৈতিক পদক্ষেপ। উত্তপ্ত পরিস্থিতি থামাতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছে ইরান ও রাশিয়া। তবে সবকিছু উপেক্ষা করে জম্মু-কাশ্মিরে হামলার দুই সপ্তাহ পর পাকিস্তানে হামলা চালালো ভারত।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার পর আন্তর্জাতিক মহলে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনা এবং সামরিক সংঘাতের ফলে পুরো অঞ্চলের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ঝুঁকির মুখে পড়েছে।
ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে এই উত্তেজনা যদি অব্যাহত থাকে, তবে তা পুরো অঞ্চলের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
ভারতের ‘অপারেশন সিন্দুর’ হামলা এবং এর ফলে ভারতীয় রুপির দরপতন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এটি প্রমাণ করে যে, সামরিক সংঘাতের প্রভাব অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও পড়তে পারে। দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।