
হবিগঞ্জে বিজিবি একটি অভিনব কৌশলে তেলবাহী লরিতে করা ভারতীয় চোরাচালান রুখে দেয়। সুনামগঞ্জ থেকে দেশে অবৈধভাবে বিভিন্ন কসমেটিকস এবং ভারতীয় জিরা নিয়ে আসা লরিটি আটক করা হয়েছে। জব্দকৃত মালামের আনুমানিক মূল্য সোয়া এক কোটি টাকার বেশি।
ঘটনাস্থল ও উদ্ধারকাজের বিবরণ
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন-৫৫ বিজিবি গোপন সূত্রে জানতে পারে যে, একটি তেলবাহী লরিতে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় মালামাল পাচারের উদ্দেশ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। 이에 ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে কৌশলে অবস্থান গ্রহণ করে বিজিবি সদস্যরা।
দুপুরে লরিটি থামানোর সংকেত দিলে চালক পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে বিজিবি লরিটি জব্দ করে এবং ট্যাঙ্কির ঢাকনা খুলে তল্লাশি চালিয়ে ভারতীয় জিরা, ফেসওয়াশ, ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম, ক্লোপ-জি ক্রিমসহ অন্যান্য কসমেটিকস উদ্ধার করে।
হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. তানজিলুর রহমান জানান, চোরাকারবারিরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজর এড়াতে এই অভিনব কৌশল অবলম্বন করেছিল।
সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় চোরাচালান একটি দীর্ঘদিনের সমস্যা। এ ধরনের অবৈধ পণ্যের বাণিজ্য নিয়মিত আটক করা হলেও, নতুন কৌশলে পণ্য পাচারের চেষ্টা প্রতিনিয়ত ঘটছে। বিশেষ করে তেলবাহী লরি বা অন্যান্য পরিবহণ ব্যবহারের মাধ্যমে চোরাকারবারিরা চোখ ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছে।
পূর্ববর্তী বছরগুলোতে, বিজিবি ও কাস্টমস যৌথভাবে এই ধরনের অভিযান নিয়েছে। এতে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চোরাচালানের প্রবাহ কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
এই অভিযান দেশের বাজারে ভারতীয় অবৈধ পণ্যের প্রবাহ কমাতে সহায়ক হবে। বিজিবি জানিয়েছে যে, সীমান্ত সুরক্ষা ও চোরাচালান রোধে তারা জিরো টলারেন্স নীতি অবলম্বন করছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং সাধারণ মানুষ এই ধরনের অভিযানকে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, এই পদক্ষেপের ফলে বাজারে অবৈধ পণ্যের প্রভাব কমবে এবং দেশের অর্থনৈতিক স্বার্থ সংরক্ষিত হবে।
জব্দকৃত মালামের বিস্তারিত
জব্দকৃত মালামালে রয়েছে:
- ভারতীয় জিরা
- ফেসওয়াশ
- ত্বক ফর্সাকারী ক্রিম
- ক্লোপ-জি ক্রিম
মালামের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় সোয়া এক কোটি টাকা। এই মালামাল যথাযথ আইনানুগ প্রক্রিয়ায় হবিগঞ্জ কাস্টমস অফিসে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ মতামত
অভিজ্ঞ সীমান্ত বিশ্লেষকরা জানান, চোরাকারবারিরা ক্রমবর্ধমানভাবে অভিনব কৌশল ব্যবহার করছে। তাই নিয়মিত ও সঠিক নজরদারি অপরিহার্য। বিজিবির এই ধরনের অভিযান জনগণকে নিরাপদ রাখার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতির সুরক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
শেষাংশ
বিজিবির অভিযান প্রমাণ করে, চোরাচালান প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সজাগ এবং কঠোর অবস্থানে রয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযান আরও বৃদ্ধি পাবে। তবে পরিস্থিতি কেমন মোড় নেবে তা নির্ভর করছে চোরাকারবারির কৌশল এবং নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতিক্রিয়ার ওপর।
এম আর এম – ০৯৬৯, Signalbd.com