বানিজ্য

দেশে পেঁয়াজের দাম কমতে পারে, লোকসানের শঙ্কায় কৃষকেরা

ভারত সরকার প্রায় দেড় বছর ধরে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে রেখেছিল। তবে সম্প্রতি, ১ এপ্রিল থেকে পেঁয়াজ রপ্তানিতে সব শুল্ক তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এর ফলে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির খরচ কমবে এবং বাজারে পেঁয়াজের দাম আরও কমে যেতে পারে, যা দেশের কৃষকদের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

বাজারের পরিস্থিতি

বর্তমানে দেশে নতুন পেঁয়াজের উৎপাদন মৌসুম চলছে এবং দেশি পেঁয়াজের দাম তুলনামূলক কম। বর্তমানে ভারত থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম ৪১ থেকে ৪২ টাকা, কিন্তু শুল্ক প্রত্যাহার হলে ২৫ থেকে ৩০ টাকায় আমদানি করা সম্ভব হবে।

এদিকে, দেশের বাজারে বর্তমানে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৫০ টাকায়। গত বছর এই সময়ে দাম ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। কৃষকরা শঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, ভারত থেকে কম দামে পেঁয়াজ আমদানি হলে তাদের উৎপাদন খরচও উঠবে না এবং লোকসানের মুখে পড়তে হবে।

কৃষকদের উদ্বেগ

পাবনার সাঁথিয়ার বায়া গ্রামের পেঁয়াজচাষি আবদুল হাই সরকার বলেন, “বর্তমানে বাজারে যে দামে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে, তাতে উৎপাদন খরচই উঠবে না। বৃষ্টির কারণে এবার ফলনের ক্ষতি হয়েছে। নতুন করে দাম আরও কমলে আমরা বড় ক্ষতিতে পড়ব।”

আমদানির তথ্য

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরে দেশে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ৬ লাখ ১৪ হাজার টন। তবে দেশে পেঁয়াজের চাহিদা ও উৎপাদন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অস্পষ্টতা রয়েছে। কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, গত অর্থবছরে পেঁয়াজ উৎপাদন হয়েছে ৩৯ লাখ টন, কিন্তু পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাব অনুযায়ী, উৎপাদন ২৯ লাখ ১৭ হাজার টন।

ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি শুল্ক প্রত্যাহার কৃষকদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাজারে পেঁয়াজের দাম কমে গেলে কৃষকরা লোকসানের শিকার হতে পারেন। এ পরিস্থিতিতে কৃষি বিভাগের উচিত আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে বাজারের ভারসাম্য রক্ষা করা, যাতে ভোক্তাদের পেঁয়াজ কিনতে বেশি দাম দিতে না হয় এবং উৎপাদকরা ন্যায্য দাম পান।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button