এবার রোজায় নতুন করে সক্রিয় ৩১৭ প্রতিষ্ঠান, বেড়েছে আমদানি

গত আগস্টে সরকার বদলের পর এবার রোজার পণ্য আমদানিতে নতুন করে সক্রিয় হয়েছে ৩১৭টি নতুন ও পুরোনো প্রতিষ্ঠান। এই তালিকায় রয়েছে ফল আমদানিকারক থেকে শুরু করে প্রাণিখাদ্য তৈরির প্রতিষ্ঠানসহ নানা শিল্প ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। গত ১ জানুয়ারি থেকে ১১ মার্চ পর্যন্ত ৭০ দিনের আমদানি তথ্য বিশ্লেষণ করে এ চিত্র পাওয়া গেছে।
আমদানির পণ্য
রোজার পণ্য হিসেবে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে ছোলা, মটর ডাল, মসুর ডাল, খেজুর, চিনি, গম, সয়াবিন ও পাম তেল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, এ বছর উল্লিখিত আটটি পণ্য আমদানি করেছে ৪৯৯টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৩১৭টি প্রতিষ্ঠান গত বছর রোজার আগে কোনো পণ্য আমদানি করেনি, অর্থাৎ এবার আমদানির মাধ্যমে নতুন করে সক্রিয় হয়েছে।
বাজারের পরিস্থিতি
এবারের আমদানির ফলে রোজার চাহিদার চেয়ে বাড়তি পণ্য আমদানি হয়েছে। এতে কিছু পণ্যের দাম কমেছে, কিছু পণ্যের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে ফেব্রুয়ারির প্রথম তিন সপ্তাহে সয়াবিন আমদানি কমে যাওয়ায় বাজারে তেলের সংকট দেখা দেয়। ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে আমদানি বাড়তে থাকায় বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ বেড়েছে।
নতুন সক্রিয় প্রতিষ্ঠান
এ বছর রোজার আগে সক্রিয় হওয়া ৩১৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চট্টগ্রামের সামুদা এডিবল অয়েল উল্লেখযোগ্য। প্রতিষ্ঠানটি ৩১ লাখ মার্কিন ডলারের ৩ হাজার টন পাম তেল আমদানি করেছে। এছাড়া, গাজীপুরের মেসার্স সৈনিক ট্রেডার্স ৪ কোটি ২৯ লাখ ডলারের দেড় লাখ টন পণ্য আমদানি করেছে, যার মধ্যে রয়েছে মটর ডাল ও গম।
নিষ্ক্রিয় প্রতিষ্ঠান
এবার রোজায় পণ্য আমদানিতে নিষ্ক্রিয় রয়েছে চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলো। গত বছর রোজার আগে ৫ কোটি ৭৫ লাখ ডলারের ১ লাখ ২৭ হাজার টন পণ্য আমদানি করেছিল। তবে এবার এই তিন প্রতিষ্ঠান এক কেজি পণ্যও আমদানি করেনি।
বাজারের প্রতিযোগিতা
নিত্যপণ্যের ব্যবসায় আমদানিকারকদের উত্থান–পতন নিয়মিত চিত্র। তবে এবার রোজার আগে সক্রিয় আমদানিকারকের সংখ্যা বেশি হওয়ায় বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ীরা। মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, “আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া মানে নিত্যপণ্যের ব্যবসায় সুস্থ প্রতিযোগিতা বেড়েছে।”
নতুন আমদানিকারকদের সক্রিয় হওয়া এবং বাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে রোজার পণ্যের সরবরাহ ও দাম নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। তবে নিষ্ক্রিয় প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে বাজারে কিছু অস্থিরতা দেখা দিতে পারে, যা ব্যবসায়ীদের জন্য উদ্বেগের বিষয়।