করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা করার সুপারিশ

বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই) ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের জন্য বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেছে। এ ছাড়া, প্রাইভেট কোম্পানির ক্ষেত্রে করপোরেট কর শর্তহীনভাবে ২৫ শতাংশ এবং শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির জন্য ২০ শতাংশ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
এনবিআরের সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনা
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক-বাজেট আলোচনায় বিসিআইয়ের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী। এনবিআর সভাপতি আবদুর রহমান খান এতে সভাপতিত্ব করেন।
বিসিআই তাদের বাজেট প্রস্তাবে উল্লেখ করেছে, ভারতে বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা ১২ লাখ রুপি। মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় ২০২৫-২৬ করবছরের জন্য বর্তমান ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের করমুক্ত সীমা ও বিদ্যমান আয়করের হার পুনর্নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে।
বিনিয়োগে উৎসাহ
বিসিআই মনে করে, দেশের উচ্চ করহার নতুন বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করে। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যবসাবান্ধব ও সহনশীল করপোরেট করের হার নির্ধারণ জরুরি। বাংলাদেশে করপোরেট করহার আশপাশের দেশের তুলনায় অনেক বেশি। বিসিআই কোনো শর্ত ছাড়াই আড়াই শতাংশ হারে কমিয়ে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানির জন্য ২৫ শতাংশ এবং পাবলিক ট্রেডেড কোম্পানির জন্য ২০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে। এতে স্থানীয় পর্যায়ে ব্যবসা উৎসাহিত হবে এবং দেশে বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
অন্যান্য সুপারিশ
এনবিআরে জমা দেওয়া বাজেট প্রস্তাবে বিসিআই একাধিক প্রস্তাব করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো:
- বার্ষিক টার্নওভার ১৫ কোটি টাকার নিচে এমন প্রতিষ্ঠানকে ৮ বছর মেয়াদ পর্যন্ত আয়কর অবকাশ।
- বিশেষ রেয়াতি ১ শতাংশ হারে টার্নওভার কর।
- ১ থেকে ৩ শতাংশ হারে পণ্যের কাঁচামাল, উপকরণ, মেশিনারিজ ও যন্ত্রপাতি আমদানির সুবিধা।
- যেসব খাতের বার্ষিক টার্নওভার ৫০ কোটি টাকার নিচে, তাদের পণ্য খাতে ৩ শতাংশ ও সেবা খাতে ৫ শতাংশ রেয়াতি হারে মূসক।
- যাদের বার্ষিক টার্নওভার ৩০০ কোটি টাকার নিচে, তাদের পণ্য খাতে ৪ শতাংশ ও সেবা খাতে ৫ শতাংশ রেয়াতি হারে মূসক।
- অনুন্নত এলাকার শিল্প খাতকে ৮ বছর মেয়াদ পর্যন্ত বিশেষ কর অবকাশ।
বিসিআইয়ের এই সুপারিশগুলো দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধি এবং করপোরেট করের হার কমানোর মাধ্যমে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নত হবে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক ফল বয়ে আনবে। সরকারের উচিত এই সুপারিশগুলো বিবেচনায় নিয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।