দেশে সিগারেট কারখানা স্থাপন করবে সিঙ্গাপুর ও ভারতের কোম্পানি

দেশে একটি নতুন সিগারেট উৎপাদন কারখানা স্থাপন করতে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর ও ভারতের যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান অ্যালাইড টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড। চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা কর্তৃপক্ষের (বেপজা) অর্থনৈতিক অঞ্চলে এই কারখানা স্থাপিত হবে। কোম্পানিটি মূলত রপ্তানিমুখী সিগারেট উৎপাদনে মনোনিবেশ করবে।
বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান
এই প্রকল্পে অ্যালাইড টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড মোট ৯২ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১২ কোটি ৫০ লাখ টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। কারখানাটি চালু হলে ১২৭ জন বাংলাদেশি নাগরিকের জন্য সরাসরি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
বার্ষিক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা
প্রস্তাবিত এই কারখানাটি বছরে ৯০০ কোটি স্টিক সিগারেট উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করবে। মূলত রপ্তানির জন্য এসব সিগারেট উৎপাদন করা হবে। যদিও অভ্যন্তরীণ বাজারে বিপণনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য এখনো প্রকাশ করা হয়নি।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান
এই কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে বৃহস্পতিবার রাজধানীর গ্রিন রোডে অবস্থিত বেপজার কার্যালয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তিতে বেপজার পক্ষে স্বাক্ষর করেন সংস্থাটির সদস্য (বিনিয়োগ উন্নয়ন) মো. ইমতিয়াজ হোসেন এবং অ্যালাইড টোব্যাকো কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) টে ইয়ং শেং এডউইন।
উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বেপজার নির্বাহী চেয়ারম্যান আবুল কালাম মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান, সদস্য আ. ন. ম. ফয়জুল হক, নির্বাহী পরিচালক মো. তানভীর হোসেন, মো. তাজিম-উর-রহমান এবং এ. এস. এম. আনোয়ার পারভেজ।
বাংলাদেশে তামাক শিল্পের ভবিষ্যৎ
বাংলাদেশে তামাক শিল্পের ব্যাপ্তি দিন দিন বাড়ছে। বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর বিনিয়োগ এই শিল্পকে আরও প্রসারিত করছে। যদিও সরকার ধূমপান নিরুৎসাহিত করতে বিভিন্ন আইন প্রণয়ন করেছে, তবু অর্থনৈতিকভাবে এই খাতের গুরুত্ব অস্বীকার করা কঠিন। বিশেষ করে রপ্তানিমুখী শিল্প হিসেবে এটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের একটি উৎস হতে পারে।
পরিবেশ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
তবে, তামাকজাত পণ্য উৎপাদনের ফলে পরিবেশগত ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি বাড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন। ধূমপানবিরোধী সংস্থাগুলো এই বিনিয়োগের বিরোধিতা করতে পারে। জনস্বাস্থ্য রক্ষার স্বার্থে সরকার কী ধরনের নীতিমালা গ্রহণ করবে, তা সময়ই বলে দেবে।
উপসংহার
সিঙ্গাপুর ও ভারতের মালিকানাধীন এই কোম্পানির বিনিয়োগ দেশের অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করতে পারে। তবে তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে যথাযথ ব্যবস্থা নিশ্চিত করাও জরুরি। সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।