রমজানে নিত্যপণ্যের দাম: বাজারের বর্তমান পরিস্থিতি ও ক্রেতাদের প্রতিক্রিয়া

পবিত্র রমজান মাসের প্রায় অর্ধেক অতিক্রান্ত হয়েছে এবং চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় দাম স্থিতিশীল রয়েছে। বিশেষ করে ছোলা, ডাল, পেঁয়াজ, আলু ও সবজির দাম তুলনামূলকভাবে কম। তবে, সয়াবিন তেলের দাম এখনও নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি থাকায় কিছুটা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ছোলার দাম স্থিতিশীল
রমজানের আগে থেকেই ছোলার দাম কম ছিল। চাহিদার তুলনায় বেশি আমদানি হওয়ায় রোজার শুরুতে খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ছোলা ১০৫ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। চাহিদা বৃদ্ধির কারণে এক সপ্তাহ আগে এই দাম বেড়ে ১১০ থেকে ১১৫ টাকা হয়। তবে বর্তমানে দাম আবার ১১০ টাকার নিচে নেমে এসেছে।
ডালের বাজার স্থিতিশীল
ছোলার পাশাপাশি মসুর ও মটর ডালের দামও স্থিতিশীল রয়েছে। আমদানি করা মসুর ডাল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা এবং মোটা মসুর ডাল ১০০ থেকে ১০৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মটর ডাল প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। রমজানের শুরুতে এই দামই ছিল।
পেঁয়াজ ও আলুর দাম কমতি
খুচরা ও পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজের সরবরাহ বেশি। খাতুনগঞ্জে পেঁয়াজের দাম বর্তমানে প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা। খুচরা বাজারে দেশি ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। আলুর দামও ২০ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে রয়েছে।
সয়াবিন তেলের সরবরাহ ও দাম
গত চার মাস ধরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট ছিল। কিছু দোকানে সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও দাম ছিল প্রতি লিটার ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, যা নির্ধারিত ১৭৫ টাকার চেয়ে বেশি। সরকারি সংস্থাগুলোর তৎপরতায় সরবরাহ কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছে। চট্টগ্রামের খুচরা বাজারে এক সপ্তাহ আগেও বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ২০০ টাকার আশপাশে ছিল, বর্তমানে তা ১৮৫ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। খোলা সয়াবিন তেলের দামও ১৬৫ টাকায় নেমে এসেছে, যদিও নির্ধারিত দাম ১৫৭ টাকা।
সবজির বাজারে স্বস্তি
রমজানে সবজির বাজার নিয়ে সাধারণত ক্রেতাদের উদ্বেগ থাকে। তবে এ বছর শুরু থেকেই সবজির দাম কমতির দিকে। রমজানের দুই দিন আগে বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৩৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ক্ষীরা ৩০ থেকে ৪০, টমেটো ২০ থেকে ৩০, কাঁচা মরিচ ৪০ থেকে ৬০ এবং আলু ২০ থেকে ৩০ টাকায় পাওয়া গেছে। বর্তমানে বেশিরভাগ সবজির দাম ৫০ টাকার নিচে, যা ক্রেতাদের স্বস্তি দিচ্ছে।
মুরগি ও মাংসের দাম
সবজিতে স্বস্তি থাকলেও মুরগির দাম এখনও আগের মতোই রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৭৫ থেকে ১৮৫ এবং সোনালি মুরগি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস হাড়সহ ৭৫০ থেকে ৮০০ এবং হাড় ছাড়া ৯৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। খাসির মাংস ১,০৫০ থেকে ১,১০০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।
সরকারি উদ্যোগ ও বাজার পরিস্থিতি
সরকারের নানামুখী উদ্যোগে এবার রমজানে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি হয়েছে। ভোজ্যতেল, চিনি, পেঁয়াজ, আলু, খেজুরসহ বিভিন্ন পণ্যের শুল্ক ছাড় দেওয়া হয়েছে। এলসি খোলায় ব্যাংকগুলোর সহযোগিতায় আমদানি বেড়েছে। ফলে বাজারে পণ্যের সঙ্কট নেই