অর্থনীতি

মেঘনা, এনআরবি ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়া হলো

বাংলাদেশ ব্যাংক চতুর্থ প্রজন্মের মেঘনা ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক এবং এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ তিন ব্যাংককে চিঠি দিয়ে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাদের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে, এই ব্যাংকগুলোর আর্থিক পরিস্থিতি এখনও ভালো রয়েছে।

ব্যাংকগুলোর পটভূমি

মেঘনা ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক এবং এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করে। তখন রাজনৈতিক বিবেচনায় বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের অনুমোদন দেয়। এই ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তের পেছনে রয়েছে সুশাসনের প্রয়োজনীয়তা এবং ব্যাংকগুলোর পরিচালনায় স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্য।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণা

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান সাংবাদিকদের জানান, আগামীকাল নতুন পরিচালনা পর্ষদ গঠন করা হবে। তিনি বলেন, “আমরা সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছি। নতুন পর্ষদ গঠন করা হবে যাতে ব্যাংকগুলোর পরিচালনায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা যায়।”

ব্যাংকগুলোর চেয়ারম্যান ও পরিচালনা পর্ষদ

মেঘনা ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এইচ এন আশিকুর রহমান। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। ব্যাংকটির বেশিরভাগ শেয়ার এখন তাঁদের হাতে। পরিচালকদের মধ্যে অনেকেই বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।

এনআরবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন আল হারামাইন পারফিউমের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান। অন্যদিকে, এনআরবিসি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ছিলেন রাশিয়া আওয়ামী লীগ নেতা এস এম পারভেজ তমাল। সরকার বদলের পর তাঁরা দেশে ফিরছেন না।

নতুন চেয়ারম্যানের নিয়োগ

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানায়, এনআরবিসি ব্যাংকের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে আলী হোসেন প্রধানিয়াকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ব্যাংক তিনটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক, সাবেক ব্যাংকার, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, হিসাববিদ ও আইনজীবীর পাশাপাশি ব্যাংকের দুজন করে শেয়ারধারী পরিচালককে রাখা হয়েছে।

পরবর্তী পদক্ষেপ

অন্য দুটি ব্যাংক আগামীকাল নিজেদের মধ্যে চেয়ারম্যান নির্বাচিত করবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর পরিচালনায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।

মেঘনা, এনআরবি ও এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার এই সিদ্ধান্ত দেশের ব্যাংকিং খাতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে। সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং ব্যাংকগুলোর পরিচালনায় স্বচ্ছতা আনার লক্ষ্যে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আশা করা হচ্ছে, নতুন পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকগুলোর উন্নয়ন ও সেবার মান বৃদ্ধিতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button