স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তবে তিনি এখনও নির্ধারণ করেননি কোন দলে বা কোনভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাচনে অংশ নিলে তিনি উপদেষ্টা পদ থেকে সরে যাবেন বলেও জানিয়েছেন।
নির্বাচনে আগ্রহ এবং পদত্যাগের সিদ্ধান্ত
বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আসিফ মাহমুদ বলেন, “নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা আছে, তবে শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তা নিশ্চিত নয়। নির্বাচন করলে বর্তমান দায়িত্ব থেকে অবশ্যই পদত্যাগ করবো।” তিনি স্পষ্ট করেছেন, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বা পরে কখন পদত্যাগ করবেন তা এখনও নির্ধারিত নয়।
উপদেষ্টা বলেন, “যাদের রাজনৈতিক আগ্রহ আছে, তাদের কারওই নির্বাচনকালীন সরকারে থাকা উচিত নয়। এটা কেবল আমার বিষয় নয়, আরও অনেক উপদেষ্টার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।”
এনসিপি বা স্বতন্ত্র প্রার্থী বিষয়ক অনিশ্চয়তা
আসিফ মাহমুদ বলেন, তিনি এখনও নিশ্চিত নন যে জাতীয় নাগরিক পার্টিতে (এনসিপি) যোগ দিয়ে নির্বাচন করবেন, নাকি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, শিক্ষার্থীদের নতুন দল এনসিপি-তে যোগ দেওয়া হবে কি-না, এবং সেই দলের হয়ে প্রার্থী হবেন কি-না, তা এখনও নির্ধারিত হয়নি।
তিনি জানান, “কার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব, তা এখনো ঠিক হয়নি। এটা রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও দলগত আলোচনার উপর নির্ভর করবে।”
নির্বাচনকালীন সরকারের ভূমিকা
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সরকারের সঙ্গে থাকায় তাকে রাজনৈতিক চাপ ও দায়িত্ব নিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের ক্ষেত্রে সরকারি ইচ্ছা থাকলেও সব রাজনৈতিক দল এতে রাজি নয়। এছাড়া, তিনি স্থানীয় স্তরে বিভিন্ন সমস্যা মোকাবেলায় সরকারের দায়িত্ব পালন করছেন, যেমন সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় নাগরিক সেবা নিশ্চিত করা।
তিনি আরও জানান, “স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কিছু ক্ষেত্রে দায়িত্ব পড়ছে আমার ওপর, যা নির্বাচনকালীন সরকারের স্বাভাবিক কাজের অংশ।”
রাজনীতিতে আগমন ও জুলাই আন্দোলনের প্রভাব
আসিফ মাহমুদ ২০১৮ সাল থেকে রাজনীতিতে যুক্ত। তিনি জুনিয়র রাজনৈতিক দলের মাধ্যমে জনগণকে আন্দোলনের সাথে যুক্ত করতে কাজ করেছেন। তার মতে, পতাকাবাহী পদ বা ক্ষমতার মোহ নয়, বরং July আন্দোলনের লক্ষ্যে সোচ্চার থাকা তার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মূল উদ্দেশ্য।
তিনি উল্লেখ করেন, “এখনও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি আছে। যেমন স্থানীয় সরকারের সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন এবং July ঘোষণাপত্রের কার্যকর বাস্তবায়ন। এগুলো শেষ না করলে ঐতিহাসিক দায়িত্ব থেকে যাওয়া অসম্পূর্ণ থাকবে।”
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, একটি মহল জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে আনার চেষ্টা করছে এবং কিছু নেতার মাধ্যমে নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে। তিনি জানিয়েছেন, এই ধরনের পরিস্থিতি বিবেচনা করে তার রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নির্ধারণ হবে।
তিনি আরও বলেন, “আমি জাতীয় পর্যায়ে রাজনীতি করতে চাই। স্থানীয় স্তরে নির্বাচন করা ও রাজনীতি করা জাতীয় রাজনীতির জন্য সুবিধাজনক নয়। ঢাকা শহরই আমার জন্য রাজনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ।”
সমাপ্তি
নির্বাচনের আগ্রহ প্রকাশ করলেও আসিফ মাহমুদ এখনও স্পষ্ট নয় কোন দলে বা কোন প্রক্রিয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাচনে অংশ নিলে তিনি উপদেষ্টা পদ থেকে সরে যাবেন এবং তার রাজনৈতিক পদক্ষেপ আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আসিফ মাহমুদের এই অবস্থান রাজনৈতিক দলের রণনীতি এবং আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে।
এম আর এম – ০৮৪৮, Signalbd.com



