তিন পার্বত্য জেলায় ২ হাজার কোটি টাকার ফলের ব্যবসা

বাংলাদেশের তিন পার্বত্য জেলা—রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়িতে ফলের ব্যবসা এবার ২ হাজার কোটি টাকার বেশি হয়েছে। এই অঞ্চলে আনারস, কুল, কমলা, রাম্বুটান, জাম্বুরা, এবং অন্যান্য ফলের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
আনারসের বাম্পার ফলন
রাঙামাটির কুতুকছড়ি বাজারে আনারসের ব্যাপক ফলন হয়েছে। বাগানিরা জানান, এবার আনারসের দাম তুলনামূলকভাবে কম, কারণ ফলন বেশি। বাগানি এফেন চাকমা ১৪ হাজার আনারসের চারা রোপণ করেছেন এবং বাজারে বিক্রির জন্য এনেছেন।
ফলের উৎপাদন ও বৈচিত্র্য
এছাড়া, পার্বত্য অঞ্চলে প্রচলিত ফলের পাশাপাশি অপ্রচলিত ফলের আবাদও বাড়ছে। লটকন, ড্রাগন, কাজুবাদাম, কফি, মাল্টা, কামরাঙা, সফেদা ইত্যাদি ফলের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত অর্থবছরে তিন পার্বত্য জেলায় প্রায় ১৯ লাখ টন ফল উৎপাদিত হয়েছে।
ব্যবসায়ীদের অভিজ্ঞতা
স্থানীয় কৃষকরা জানান, দুই দশক আগে বাণিজ্যিকভাবে ফল চাষ শুরু হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মো. নাসিম হায়দার বলেন, “ফলের উৎপাদন দিন দিন বেড়েই চলছে। এবার আগাম আনারস হয়েছে প্রচুর।”
ফলের বাজার
রাঙামাটির নানিয়ারচর উপজেলায় কমলা ও আনারসের ব্যবসা জমজমাট। বাগানিরা জানান, রাস্তার পাশে আনারস ও কমলা স্তূপ করে রাখা হচ্ছে, যা চট্টগ্রামে পাঠানো হবে। কুতুকছড়ি বাজারে আনারসের দাম প্রতি ১০০টি ৮০০ থেকে ১,৪০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
উৎপাদনের পরিসংখ্যান
কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, তিন পার্বত্য জেলায় উৎপাদিত মোট ফলের প্রায় ৮৫ শতাংশই আম, কাঁঠাল, কলা, পেঁপে, আনারস, লিচু, মাল্টা ও ড্রাগন। গত অর্থবছরে আমের ফলন ছিল দুই লাখ টনের বেশি, যার মধ্যে বান্দরবানে ১ লাখ ১২ হাজার টন উৎপাদিত হয়েছে।
পার্বত্য অঞ্চলে ফলের উৎপাদন ও ব্যবসা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা স্থানীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। নতুন নতুন ফলের চাষ এবং বৈচিত্র্য আনার মাধ্যমে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন, যা দেশের কৃষি খাতের জন্য একটি ইতিবাচক দিক।