গ্যাসে দুই দফা ভ্যাট, পেট্রোবাংলার বকেয়া ১৮ হাজার কোটি টাকা

বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজসম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা) টাকার অভাবে গ্যাস সরবরাহের বিল নিয়মিত পরিশোধ করতে পারছে না। একই গ্যাসে পেট্রোবাংলার কাছ থেকে দুবার শুল্ক-কর নিচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), যার ফলে এনবিআরের কাছে বকেয়া বাড়ছে। লোকসান ঠেকাতে পেট্রোবাংলা আমদানি পর্যায়ে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও কর প্রত্যাহার চায়।
আর্থিক ঘাটতি
পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, শিল্পে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে, যা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নিয়ে কাজ করছে। দাম বাড়ানো হলে তিন হাজার কোটি টাকা বাড়তি আয় হবে পেট্রোবাংলার। তবে আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট-কর প্রত্যাহার হলে ৭ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারে পেট্রোবাংলা।
ভ্যাট ও করের সমস্যা
পেট্রোবাংলা বলছে, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির সময় তাদের ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ অগ্রিম কর দিতে হয়। গ্রাহক পর্যায়ে বিক্রির সময়ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট ও ২ শতাংশ উৎসে কর দিতে হচ্ছে। এর ফলে পেট্রোবাংলা আবার ভর্তুকি নিচ্ছে সরকার থেকে।
বর্তমানে পেট্রোবাংলার কাছে এনবিআরের বকেয়া পাওনা জমেছে ১৭ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পেট্রোবাংলার জন্য ভর্তুকি বরাদ্দ আছে ছয় হাজার কোটি টাকা, যা চাহিদামতো এলএনজি আমদানি হলে দ্বিগুণের বেশি লাগবে।
এলএনজি সরবরাহের সমস্যা
বকেয়ার কারণে এলএনজি সরবরাহকারী বিদেশি কোম্পানিরা আস্থা হারাচ্ছে। তারা দরপত্রে বাড়তি দাম প্রস্তাব করছে, যার ফলে একাধিক দরপত্র বাতিল করতে হয়েছে। পেট্রোবাংলা বলছে, আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট ও কর প্রত্যাহার করা হলে ভর্তুকির প্রয়োজন হবে না।
সরকারের পদক্ষেপ
এলএনজির ভ্যাট নিয়ে শিগগিরই এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। পেট্রোবাংলা জানিয়েছে, এনবিআরের আপত্তি না করলেও এটি বাতিলে সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রয়োজন।
পেট্রোবাংলার এই আর্থিক সংকট এবং ভ্যাট-কর সমস্যা দেশের গ্যাস সরবরাহ ও বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রভাব ফেলতে পারে। সরকারের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন না হয় এবং ভোক্তাদের ওপর চাপ কমানো যায়।