অর্থনীতি

৮ মাসে রপ্তানি বেড়েছে সাড়ে ১০ শতাংশ, অর্থনীতিতে আরেকটু স্বস্তি

চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক ও সামুদ্রিক খাবারের মতো মূল খাতগুলো রপ্তানিতে স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মতো সংকটগুলো উপেক্ষা করে রপ্তানি ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।

মঙ্গলবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) প্রকাশিত তথ্যে বলা হয়—গত ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩.৯৭ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২.৭৭ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রেমিট্যান্স বেড়ে যাওয়ার কয়েকদিন পর রপ্তানিতে এই অগ্রগতি দেখা গেল। গত মাসে রেমিট্যান্স আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ শতাংশ বেড়ে ২.৫২ বিলিয়ন ডলার হয়। ফলে চাপে থাকা অর্থনীতিতে আসে কিছুটা স্বস্তি।

রপ্তানির পরিসংখ্যান

চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে মোট রপ্তানি হয়েছে ৩২.৯৪ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় সাড়ে ১০ শতাংশ বেশি। দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি আয়ের খাত তৈরি পোশাকের রপ্তানি গত মাসে ১.৬৬ শতাংশ বেড়ে গেছে।

গত জুলাই থেকে ফেব্রুয়ারিতে পোশাক রপ্তানি ১০.৬৪ শতাংশ বেড়ে ২৬.৭৯ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। নিটওয়্যার রপ্তানি ১১.০১ শতাংশ বেড়ে ১৪.৩৪ বিলিয়ন ডলার হয়েছে। ওভেন পোশাক রপ্তানি ১০.২২ শতাংশ বেড়ে ১২.৪৫ বিলিয়ন ডলার হয়েছে।

চ্যালেঞ্জ ও উদ্বেগ

বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, “কার্যাদেশ ফিরে আসায় পোশাক রপ্তানি বাড়ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবশ্যই ভালো করতে হবে। আন্তর্জাতিক ক্রেতারা প্রায়ই নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।”

তিনি আরও জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি থেকেও বাংলাদেশ লাভবান হচ্ছে। তবে কম দামই বড় সংকট বলে মনে করেন তিনি।

অন্যান্য খাতের অবস্থা

চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে মিশ্র দৃশ্য দেখা গেছে। মোট রপ্তানি আট দশমিক ৪৮ শতাংশ বেড়ে ৭৫৭.৫০ মিলিয়ন ডলার হলেও কাঁচা চামড়া রপ্তানি কমেছে আট দশমিক ৬৮ শতাংশ। অন্যদিকে, চামড়ার জুতা রপ্তানি ২৪.০২ শতাংশ বেড়ে ৪৫০.৮৮ মিলিয়ন ডলার হয়েছে।

বৈদ্যুতিক পণ্য রপ্তানিতে ১৩.৫১ শতাংশ ও সাইকেল রপ্তানিতে ৬৪.৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। নিট ও ওভেনসহ বিশেষায়িত কাপড় রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২১.৬২ শতাংশ।

ভবিষ্যৎ

সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান রপ্তানির পরিসংখ্যান নিয়ে মিশ্র মনোভাব প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “স্থবির বেসরকারি বিনিয়োগ, উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও নিরাপত্তা উদ্বেগের মতো সংকটগুলোর কারণে রপ্তানি প্রবৃদ্ধির কতদিন থাকবে তা নিশ্চিত নয়।”

তিনি আরও বলেন, “রপ্তানি প্রবৃদ্ধির এই পরিসংখ্যান উৎসাহব্যঞ্জক হলেও রপ্তানি আয় মূলত আগের কার্যাদেশ থেকে এসেছে।”

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button