ঢাকায় জাকাত মেলা শুরু হচ্ছে কাল: সহায়তার নতুন দিগন্ত

রাজধানী ঢাকায় আগামীকাল শনিবার থেকে শুরু হচ্ছে দুই দিনব্যাপী জাকাত মেলা। তেজগাঁও গুলশান লিংক রোডের আলোকি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে এই মেলা, যার উদ্বোধন করবেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
মেলার সময়সূচি ও আয়োজন
সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম) এর উদ্যোগে আয়োজিত এই জাকাত মেলা সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে। মেলায় বিভিন্ন আর্থিক ও জাকাত প্রতিষ্ঠানের স্টল থাকবে, পাশাপাশি জাকাত কনসালটেশন ডেস্ক এবং ইসলামিক বইয়ের স্টলও থাকবে। এবারের মেলার পৃষ্ঠপোষক হিসেবে থাকছে দেশের স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন রহিমআফরোজ, খাদিম সিরামিকস, কোহিনূর কেমিক্যাল, রহিম স্টিল, সাউথ ব্রিজ, হজ ফাইন্যান্স কোম্পানি, আইডিএলসি ইসলামিক, এসএমসি ইত্যাদি।
সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে গতকাল বৃহস্পতিবার আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মেলা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মোহাম্মদ আবদুল মজিদ জাকাত মেলার বিস্তারিত তুলে ধরেন। এ সময় সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্টের নির্বাহী পরিষদের আহ্বায়ক ও রহিমআফরোজ গ্রুপের গ্রুপ পরিচালক মুনওয়ার মিসবাহ মঈন, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং সিজেডএমের হেড অব করপোরেট অ্যাফেয়ার্স মুহাম্মদ জাকারিয়া হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
জাকাতের গুরুত্ব
মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, “সঠিকভাবে জাকাত দেওয়া শুধু অভাবীদের সহায়তা করা নয়, বরং তাদের আত্মনির্ভরশীল করে তোলা।” তিনি উল্লেখ করেন, “যাতে তারা ভবিষ্যতে দাতা হতে পারে এবং আর্থসামাজিক জীবনে যে বৈষম্য আছে, তা নিরসনে সহায়ক হবে।” বর্তমানে দেশে প্রায় ১ লাখ কোটি টাকার জাকাত দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, “যদি এক লাখ কোটি টাকা সঠিকভাবে দেওয়া ও ব্যবহার করা যায়, তাহলে দেশে কেউ অভুক্ত থাকত না।” উদাহরণস্বরূপ, ১ লাখ কোটি টাকা যদি ১ কোটি ৮৭ লাখ তীব্র খাদ্যনিরাপত্তাহীন মানুষের মধ্যে বণ্টন করা হয়, তাহলে জনপ্রতি ৫৩ হাজার ৪৭৫ টাকা করে পড়ে।
ক্রিপ্টোকারেন্সিতে জাকাত
মোহাম্মদ আবদুল মজিদ জানান, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সিতে জাকাত দেওয়া যাবে। এটি একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে, যা জাকাত ব্যবস্থাপনাকে আরও আধুনিক ও কার্যকরী করবে।
জাকাত মেলা শুধু একটি অনুষ্ঠান নয়, এটি একটি সামাজিক আন্দোলন। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, সমাজের প্রতিটি সদস্যের জন্য সহানুভূতি ও সহযোগিতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। আসুন, আমরা সবাই এই মেলায় অংশগ্রহণ করি এবং আমাদের সমাজের অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াই।