আঞ্চলিক

সাবেক এক রাষ্ট্রপতি হাওর এলাকার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছেন: জ্বালানি উপদেষ্টা

Advertisement

জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, সাবেক এক রাষ্ট্রপতি হাওর এলাকায় সড়ক নির্মাণ ও অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে অতিরিক্ত ব্যয় করেছেন, যা সাধারণ মানুষের কর থেকে সংগৃহীত অর্থের যথাযথ ব্যবহার নয়।

তিনি আরও বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর তিনি তিনটি মন্ত্রণালয়ের অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাতিল ও ব্যয় কাটছাঁট করে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছেন।

ঘটনার বিবরণ

ফাওজুল কবির খান রোববার রাজধানীতে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অর্থনীতি শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “সড়ক ও রেলে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। এটা চেয়ারের দোষ না, এটি ব্যক্তির দায়, যে ওই চেয়ারে বসে।”

তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, হাওর অঞ্চলের উন্নয়ন প্রকল্পগুলোতে অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে এবং এটি পুরো অঞ্চলের সাধারণ জনগণের জন্য ক্ষতিকর হয়েছে।

উপদেষ্টা আরও জানান, আগে এলএনজি (প্রাকৃতিক গ্যাস) আমদানি করা হত ১৪ ডলারে, কিন্তু বর্তমানে বাজার উন্মুক্ত করার ফলে খরচ কমে ১১ ডলারে এসেছে।

হাওর এলাকার প্রেক্ষাপট

হাওর অঞ্চল বাংলাদেশের ন্যাশনাল ইকোনমির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বর্ষা মৌসুমে হাওরের জলস্তর বৃদ্ধি পায় এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হয়। অতীতে এখানে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় দুর্নীতি ও বাজেট অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

ফাওজুল কবির খান বলছেন, এই ধরনের অতিরিক্ত ব্যয় শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ক্ষতি করে না, বরং স্থানীয় জনগণের জীবনের মানও প্রভাবিত করে।

সরকারের পদক্ষেপ ও সাশ্রয়

উপদেষ্টা জানান, তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর অব্যবহৃত বা অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাতিল করে বাজেট কাটছাঁট করেছেন। এই পদক্ষেপের ফলে সরকারের সঞ্চয় হয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, এই সাশ্রয়ের ফলে দেশের জ্বালানি খাতে নতুন নীতি প্রয়োগ ও ব্যয় হ্রাসের সুযোগ তৈরি হয়েছে। এতে সাধারণ জনগণের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

বিশেষজ্ঞ মতামত

অর্থনীতি ও প্রশাসন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হাওর এলাকার উন্নয়ন প্রকল্পে অতিরিক্ত ব্যয় ও দুর্নীতি যদি নিরীক্ষণ না করা হয়, তবে তা দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি প্রকল্পের প্রক্রিয়াগত স্বচ্ছতা এবং বাজেট ব্যবস্থাপনায় কঠোর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।

জনগণের প্রতিক্রিয়া

হাওর এলাকার সাধারণ মানুষ বলছেন, অতিরিক্ত ব্যয় ও অনিয়মের কারণে প্রকল্পগুলো পর্যাপ্ত সুবিধা দিতে পারেনি। তারা আশা করছেন, বর্তমান প্রশাসন সঠিকভাবে প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে এবং স্থানীয় মানুষের জন্য কার্যকর সেবা নিশ্চিত করবে।

সমাপ্তি

জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খানের মন্তব্যে স্পষ্ট হয়েছে, হাওর এলাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অতিরিক্ত ব্যয় এবং অনিয়মের কারণে জনগণের করের অর্থ সঠিকভাবে ব্যবহার হয়নি। বর্তমান প্রশাসনের পদক্ষেপ ও বাজেট সাশ্রয় এই সমস্যার সমাধানে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ।

এই পরিস্থিতি থেকে শেখার বিষয় হলো, ভবিষ্যতে উন্নয়ন প্রকল্পের স্বচ্ছতা এবং সরকারি ব্যয়ের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা।

এম আর এম – ১২২৮,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button