
বাংলাদেশের মৎস্য খাতের উন্নয়নে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে ওয়ার্ল্ডফিশ প্রথমবারের মতো একজন বাংলাদেশিকে কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে। তিনি হলেন ড. ফারুক-উল ইসলাম, যিনি যুক্তরাজ্যের স্টার্লিং ইউনিভার্সিটি থেকে দেশি মাছ ও জীবন-জীবিকা নিয়ে পিএইচডি অর্জন করেছেন। মৎস্য ও কৃষি উন্নয়ন খাতে তার ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে, যা তাকে এই সম্মানজনক পদে আসীন হতে সহায়তা করেছে।ড. ফারুক-উল ইসলাম: ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশের প্রথম বাংলাদেশি কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ।
কর্মজীবনের শুরু
ড. ফারুক-উল ইসলামের কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৯২ সালে, যখন তিনি যুক্তরাজ্যের মৎস্য অধিদপ্তরের একটি বৃহৎ প্রকল্পের মাধ্যমে কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি প্রায় ২২ বছর ধরে ঢাকায় যুক্তরাজ্যভিত্তিক উন্নয়ন সংস্থা প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন-এ কাজ করেন, যেখানে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টরের দায়িত্বও পালন করেন। তার এই দীর্ঘ কর্মজীবন তাকে মৎস্য খাতের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করতে সহায়তা করেছে।
দেশি মাছের উন্নয়ন
২০০৭ সালে, ড. ফারুক-উল ইসলাম ১০টি দেশি ছোট মাছের প্রজাতিকে (যেমন পুঁটি, কই, টেংরা, মাগুর, শিং, মলা, টাকি, চিংড়ি, গুতুম ইত্যাদি) মৎস্য চাষ ও সমন্বিত ব্যবস্থাপনার জন্য অগ্রাধিকার হিসেবে চিহ্নিত করেন। এর ফলে বর্তমানে এসব মাছের সরবরাহ বাজারে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে পুকুরসহ জলাশয়ে যেসব মাছ মজুত হয় না, সেগুলো সংরক্ষণ ও চাষ ব্যবস্থার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।
প্রকৃতিবান্ধব মৎস্য চাষ
ড. ফারুক-উল ইসলামের প্রকৃতিবান্ধব মৎস্য চাষ, বিশেষায়িত কৃষি ও জলবায়ু বিষয়ক প্রকল্পে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। তিনি ৫৫টির বেশি উন্নয়ন প্রকল্পে আন্তর্জাতিক দলের সঙ্গে কাজ করেছেন। সম্প্রতি, মৎস্য চাষে অ্যারেশিয়ান প্রযুক্তির উদ্ভাবন, গবেষণা ও ব্যাপক বিস্তারের লক্ষ্যে ড. ফারুক-উল ইসলাম দাতা সংস্থা ইউএসএআইডি কর্তৃক মনোনীত ও স্বীকৃত হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশকে উপস্থাপন
ড. ফারুক-উল ইসলাম বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশকে উপস্থাপন করেছেন এবং বিশ্বের ১২টির বেশি দেশে উন্নয়ন ও গবেষণার অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। জলবায়ু সহিষ্ণু অ্যাকুয়াটিক ফুড সিস্টেম, মৎস্য চাষের যান্ত্রিকীকরণ, উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য চাষ, সংরক্ষণ, ব্যবস্থাপনা, সুশাসন, নীতি ও বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণ বিষয়ে তার বিশেষ আগ্রহ রয়েছে।
শিল্প ও সংস্কৃতিতে আগ্রহ
ড. ফারুক-উল ইসলামের কাজের পাশাপাশি শিল্প ও সংস্কৃতিতেও সমান আগ্রহ রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন যে, সংস্কৃতি ও শিল্পের মাধ্যমে সমাজের উন্নয়ন সম্ভব। তার এই দৃষ্টিভঙ্গি তাকে একটি বহুমাত্রিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে গড়ে তুলেছে।
ওয়ার্ল্ডফিশের ভূমিকা
ওয়ার্ল্ডফিশ একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা, যা মৎস্য ও জলজ সম্পদ উন্নয়ন ও গবেষণায় বিশ্বব্যাপী নেতৃত্ব প্রদান করে। বাংলাদেশে সংস্থাটি মৎস্য খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ড. ফারুক-উল ইসলামের নেতৃত্বে ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশ দেশি মাছের সংরক্ষণ ও চাষে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা যায়।
দেশের মৎস্য খাতের চ্যালেঞ্জ
বাংলাদেশের মৎস্য খাতের উন্নয়নে দেশি মাছের সংরক্ষণ ও চাষ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশি মাছ পুষ্টির আঁধার, যা আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। তবে, প্রাকৃতিক জলাশয় ও প্লাবনভূমির অব্যবস্থাপনা। অর্থনীতি