পূবালী ব্যাংকের আবাসন ঋণ: আপনার স্বপ্নের বাড়ি এখন হাতের মুঠোয়
নিজস্ব বাড়ি বা ফ্ল্যাটের স্বপ্ন অনেকেরই। কিন্তু উচ্চমূল্য, জমির অভাব, এবং ঋণ প্রক্রিয়ার জটিলতা অনেক সময় এই স্বপ্নকে বাধাগ্রস্ত করে। তবে, পূবালী ব্যাংক নিয়ে এসেছে একটি যুগান্তকারী সেবা—অনলাইনে আবাসন ঋণের আবেদন। এখন আপনি বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনা, নির্মাণ বা সংস্কারের জন্য ঋণের আবেদন করতে পারবেন পূবালী ব্যাংকের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে, যেখানে প্রয়োজনীয় নথিপত্র অনলাইনে জমা দেওয়া যাবে। ব্যাংক যাচাই-বাছাই করে যোগ্য হলে ঋণ ছাড় করবে। ফলে গ্রাহকদের ভোগান্তি যেমন কমেছে, তেমনি আমলাতান্ত্রিক জটিলতার অবসান হয়েছে।
পূবালী ব্যাংকের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক ও সেবা
পূবালী ব্যাংক বেসরকারি খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি শাখা, উপশাখা ও এটিএম রয়েছে। এই বিশাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ব্যাংকটি দেশের সর্ববৃহৎ ব্যাংক হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়েছে। পূবালী ব্যাংক টিনশেড থেকে বহুতল ভবন নির্মাণ, বিদ্যমান ফ্ল্যাট বা বাড়ি সম্প্রসারণ ও সংস্কারের জন্য ঋণ দিয়ে থাকে। ঋণের পরিমাণ কমপক্ষে দুই লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ দুই কোটি টাকা পর্যন্ত হতে পারে। সুদের হার ১৩.৫% থেকে ১৪% এর মধ্যে।
অনলাইনে ঋণ আবেদন প্রক্রিয়া
পূবালী ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গিয়ে ফ্ল্যাট কেনা, ভবন নির্মাণ বা সংস্কারের জন্য যেকোনো একটি উদ্দেশ্য নির্বাচন করে আবেদন শুরু করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল নম্বর দিয়ে একবার ব্যবহারযোগ্য পাসওয়ার্ডের (OTP) মাধ্যমে আবেদন ফর্মে প্রবেশ করতে হবে। আবেদন ফর্মটি ৯ ধাপে পূরণ করতে হবে:
- ব্যক্তিগত তথ্য: নাম, জন্মতারিখ, লিঙ্গ, জাতীয়তা ইত্যাদি।
- পরিচয় ও যোগাযোগের মাধ্যম: জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, মোবাইল নম্বর, ইমেইল ঠিকানা ইত্যাদি।
- চাকরির তথ্য: প্রতিষ্ঠানের নাম, পদবী, কর্মস্থলের ঠিকানা ইত্যাদি।
- ঋণ নেওয়ার কারণ: কেন ঋণ নিচ্ছেন, তার বিস্তারিত বিবরণ।
- আয়ের তথ্য: মাসিক আয়, উৎস, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ইত্যাদি।
- জামিনদারের তথ্য: জামিনদারের নাম, সম্পর্ক, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ইত্যাদি।
- রেফারেন্স: ব্যক্তিগত বা পেশাগত রেফারেন্সের তথ্য।
- ঋণের পরিমাণ: আপনি কত টাকা ঋণ নিতে চান, তার পরিমাণ।
- নথিপত্র আপলোড: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যেমন জাতীয় পরিচয়পত্র, আয়কর রিটার্ন, ব্যাংক স্টেটমেন্ট ইত্যাদি।
আবেদন জমা দেওয়ার পর ব্যাংক নথিপত্র যাচাই করবে। কোনো ঘাটতি থাকলে ব্যাংক যোগাযোগ করবে। সবকিছু ঠিক থাকলে ব্যাংক থেকে যোগাযোগ করে ঋণ ছাড় দেওয়া হবে।
আবেদনকারীদের জন্য শর্তাবলী
যেকোনো বাংলাদেশি নাগরিক যাঁর বৈধ এনআইডি আছে, তিনি আবেদনের যোগ্য। তবে কিছু শর্ত রয়েছে:
- করদাতা হতে হবে: আবেদনকারীকে অবশ্যই করদাতা হতে হবে।
- স্থিতিশীল আয়ের উৎস: আবেদনকারীর স্থিতিশীল আয়ের উৎস থাকতে হবে।
- বয়স: আবেদনকারীর বয়স ২১ থেকে ৬৫ বছরের মধ্যে হতে হবে। ঋণের মেয়াদ শেষে ঋণগ্রহীতার বয়স ৭০ বছরের বেশি হওয়া যাবে না।
ঋণ শর্তাবলী ও ফি
- নিজস্ব অংশ: ঋণ করে কোনো সম্পদ কেনা বা নির্মাণের ক্ষেত্রে ঋণগ্রহীতার নিজস্ব অংশ হতে হবে কমপক্ষে ৩০ শতাংশ।
- ঋণের মেয়াদ: সর্বোচ্চ ২৫ বছর।
- প্রক্রিয়াকরণ ফি:
- ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণের ক্ষেত্রে: ঋণের দশমিক ৫০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা।
- ৫০ লাখ টাকার বেশি ঋণের ক্ষেত্রে: ঋণের দশমিক ৩০ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা।
- আগাম পরিশোধের সুবিধা:
- আংশিক পরিশোধে: ঋণের পরিমাণের দশমিক ২৫ শতাংশ বা সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা মাশুল।
- সম্পূর্ণ পরিশোধে: কোনো মাশুল নেই।
পূবালী ব্যাংকের ডিজিটাল সেবা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
পূবালী ব্যাংক ডিজিটাল ব্যাংকিং সেবার ক্ষেত্রে অগ্রগামী। ইন্টারনেট ব্যাংকিং সেবা “পাই” এর মাধ্যমে খুচরা ও করপোরেট গ্রাহকরা ঋণ আবেদন, ঋণ পরিশোধ, ঋণপত্র খোলা সহ সব ধরনের সুবিধা পাচ্ছেন। ব্যাংকটি ভবিষ্যতে ডিজিটাল মাধ্যমে ঋণ বিতরণ আরও সহজ ও দ্রুত করতে পরিকল্পনা করছে।
যারা বাড়ি বা ফ্ল্যাট কেনার পরিকল্পনা করছেন, তাদের জন্য পূবালী ব্যাংকের আবাসন ঋণ একটি সুবর্ণ সুযোগ। সহজ আবেদন প্রক্রিয়া, দীর্ঘ মেয়াদ, এবং স্বল্প সুদের হার এই ঋণকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে। তাই আর দেরি না করে আজই পূবালী ব্যাংকের ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করুন আপনার স্বপ্নের বাড়ির জন্য।
MAH – 12359 , Signalbd.com



