সরকার থেকে কোনো প্রণোদনা দিতে পারব না: বাণিজ্য উপদেষ্টা

ঢাকায় চার দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক পণ্যের মেলা শুরু হয়েছে। এই মেলায় ৮০০টির বেশি স্টল অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশ, চীন, জার্মানি, ভারত, ইতালি, জাপানসহ ১৮টি দেশের ৩৯০টির বেশি ব্র্যান্ড এতে অংশগ্রহণ করেছে।
মেলার উদ্বোধন
ঢাকার পূর্বাচলের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) গতকাল বুধবার এই মেলার উদ্বোধন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্লাস্টিক পণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিপিজিএমইএ) জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি কে এম ইকবাল হোসেন সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি শামীম আহমেদ, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (চলতি দায়িত্ব) আবদুর রহিম খান, ইয়র্কার্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিসের পরিচালক আকাই লিন, সার্ক চেম্বারের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন প্রমুখ।
সরকারের প্রণোদনা নিয়ে মন্তব্য
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “সরকার থেকে কোনো প্রণোদনা দিতে পারব না।” তিনি আরও বলেন, “২০২৬ সালের নভেম্বর মাসে আমাদের দেশ স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে। ফলে রপ্তানিতে আমরা যে অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা পাই, তা আর থাকবে না। এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য আমাদের প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বাড়াতে হবে। উৎপাদনশীলতা ও পণ্য উৎপাদন ব্যয়ে প্রতিযোগী সক্ষম হতে হবে। সক্ষমতা না থাকলে দারুণভাবে বিপদে পড়ে যাব।”
প্লাস্টিক পণ্যের গুরুত্ব
শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, “পণ্য রপ্তানির সম্ভাবনাকে বৈচিত্র্যময় করার আমাদের যে আকাঙ্ক্ষা রয়েছে, প্লাস্টিক পণ্য সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।” তিনি বলেন, “বাস্তবতার নিরিখে আমাদের নীতিনির্ধারণ করা দরকার। যার বিনিময়ে আমরা খারাপ প্লাস্টিককে রহিত করব এবং ভালো প্লাস্টিকের সঙ্গে বাস করব। তাই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আমাদের ভালো প্লাস্টিকের উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালাতে হবে।”
মেলার আয়োজন
আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক মেলাটি যৌথভাবে আয়োজন করছে বিপিজিএমইএ ও হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ইয়র্কার্স ট্রেড অ্যান্ড মার্কেটিং সার্ভিস। আয়োজকেরা জানান, মেলায় দেশীয় প্রতিষ্ঠানগুলো গৃহস্থালিতে ব্যবহার্য প্লাস্টিকের পণ্য, প্যাকেজিং উপকরণ, মোল্ড, ক্রোকারিজ ও খেলনাসামগ্রী, ওষুধশিল্পের প্রয়োজনীয় উপকরণ, প্লাস্টিকের আসবাব, মেলামাইন পণ্য, তৈরি পোশাক খাতের প্রয়োজনীয় পণ্য, পিপি ওভেন ব্যাগ ইত্যাদি পণ্য প্রদর্শন করছে। অন্যদিকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো প্লাস্টিক ইনজেকশন মোল্ডিং মেশিন, পিপি ওভেন ব্যাগ মেশিন, প্যাকেজিং মেশিন, ফ্লেকসোগ্রাফিক প্রিন্টিং মেশিন, পেট ব্লো মেশিন, প্লাস্টিকের ব্যাগ তৈরির মেশিন প্রদর্শন করছে।
দর্শনার্থীদের জন্য সময়সূচি
আয়োজকেরা জানান, দর্শনার্থীদের জন্য প্রতিদিন বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মেলা উন্মুক্ত থাকবে।
এই আন্তর্জাতিক প্লাস্টিক পণ্যের মেলা বাংলাদেশের প্লাস্টিক শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম। এটি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন এবং নতুন প্রযুক্তি ও পণ্যের পরিচয় করিয়ে দেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করবে। আশা করা যায়, এই মেলা বাংলাদেশের প্লাস্টিক শিল্পের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।