বাংলাদেশ

গুলশানে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ধরা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ নেতা বহিষ্কার

Advertisement

রাজধানীর গুলশানে চাঁদাবাজির অভিযোগে হাতেনাতে ধরা পড়ার পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তিন নেতাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করেছে সংগঠনটি। বহিষ্কৃতরা হলেন—ঢাকা মহানগর শাখার আহ্বায়ক ইব্রাহিম হোসেন মুন্না, সদস্য মো. সাকাদাউন সিয়াম এবং সাদমান সাদাব।

শনিবার রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি জানিয়েছে, সংগঠনের শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং সাংগঠনিক নীতিমালা বিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে শৃঙ্খলাভঙ্গের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বহিষ্কৃত তিন নেতার সঙ্গে সংগঠনের কোনো নেতা বা কর্মী যেন কোনো ধরনের সম্পর্ক না রাখেন, সে বিষয়ে সকল স্তরের নেতাকর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “যেকোনো ধরণের অনৈতিক ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা সুশৃঙ্খল, স্বচ্ছ ও আদর্শভিত্তিক ছাত্র রাজনীতিতে বিশ্বাস করি।”

কীভাবে ঘটল গুলশানের চাঁদাবাজির ঘটনা

শনিবার সন্ধ্যার পর রাজধানীর গুলশান এলাকার ৮৩ নম্বর রোডে সাবেক এমপি ড. শাম্মী আহমেদের বাসায় চাঁদাবাজির এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা গেছে, আব্দুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান (রিয়াদ) নামে এক যুবক নিজেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে তার সঙ্গীদের নিয়ে ওই বাসায় যান। এর আগেও তারা কয়েকদিন আগে একই বাড়িতে গিয়ে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। তখন তারা ১০ লাখ টাকা নিয়ে ফিরে যান।

শনিবার তারা অবশিষ্ট টাকা নিতে আবারও সেখানে গেলে বাসার লোকজন তাদের আটকে পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে মোট ৫ জনকে হাতেনাতে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

অভিযুক্তদের সঙ্গে সংগঠনের কোনো সম্পর্ক নেই দাবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, আব্দুর রাজ্জাক বিন সোলাইমান রিয়াদ বর্তমানে সংগঠনের কোনো পদে নেই। যদিও চলতি বছরের ১৬ ফেব্রুয়ারিতে অনুমোদিত সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটিতে তার নাম যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে ছিল, তবে দীর্ঘদিন ধরে তিনি সংগঠনের কার্যক্রম থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন।

কেন্দ্রীয় কমিটি বলছে, “যারা সংগঠনের নাম ব্যবহার করে অপরাধ করছে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।”

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পদক্ষেপ

গুলশান থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জানান, আটক পাঁচজনকে থানায় নিয়ে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি চলছে।

পুলিশ জানায়, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজন সরাসরি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় কর্মী এবং দুইজন বহিরাগত সহযোগী। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও প্রতারণার মামলা দায়ের করা হবে।

সংগঠনের ভাবমূর্তি রক্ষায় কঠোর বার্তা

ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে শিক্ষাঙ্গনে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সংগঠনটি নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষা এবং ভবিষ্যতে অনিয়ম দমন করতে একটি বার্তা দিয়েছে।

বিশ্লেষকদের অভিমত, ছাত্র সংগঠনগুলোকে আরও স্বচ্ছতা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কাজ করতে হবে, যাতে সংগঠনের নামে কেউ অপরাধমূলক কাজে জড়াতে না পারে।

শেষ কথা 

গুলশানে চাঁদাবাজির ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই কঠোর সিদ্ধান্ত ছাত্র রাজনীতিতে একটি সতর্কবার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত শেষে আদালত যে রায় দেবে, সেটিই হবে ভবিষ্যতের জন্য দৃষ্টান্ত।

এম আর এম – ০৫৩৮, Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button