চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসে ধীরগতি, জমেছে ১১ হাজার কনটেইনার

ঈদের ছুটিতে শ্লথ খালাস কার্যক্রম, ধারণক্ষমতার ৮০ শতাংশ পূর্ণ
চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য খালাসের ধীরগতির কারণে প্রতিদিনই বাড়ছে কনটেইনারের চাপ। ঈদুল আজহার ১০ দিনের ছুটির মধ্যে বন্দরের কার্যক্রম সচল থাকলেও ব্যবসায়ীরা যথাযথভাবে পণ্য খালাস করতে না পারায় এখন পর্যন্ত ১১ হাজার আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনার জমে আছে। এতে বন্দর পরিচালনায় ধীরতা ও সেবার মান ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ধারণক্ষমতার ৮০ শতাংশ পূর্ণ, জায়গা কমছে প্রতিনিয়ত
বন্দরের একজন কর্মকর্তা জানান,
“বর্তমানে বন্দরের ধারণক্ষমতার প্রায় ৮০ শতাংশ জায়গা কনটেইনারে পূর্ণ। প্রতি ঘণ্টায় ফাঁকা জায়গা কমে আসছে, যা ভবিষ্যতে বড় জট সৃষ্টি করতে পারে।”
ছুটিতে খালাস কম, জমেছে কনটেইনার
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী:
- ৪ জুন: বন্দরে ছিল ২৮,০০০ কনটেইনার
- ১৩ জুন সকাল ৮টা: এই সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৯,০০০
অর্থাৎ, ছুটির ৭ দিনে জমেছে ১১,০০০ নতুন কনটেইনার
ঈদের ছুটিতে ২৪ হাজার কনটেইনার জাহাজ থেকে নামানো হলেও খালাস হয়েছে মাত্র ৯,৫০০টি। বাকি ১৪,৫০০ কনটেইনার বন্দরের অভ্যন্তরে জমা রয়েছে।
খালাসের হার কম: স্বাভাবিক সময়ে দৈনিক ৪,০০০+, এখন মাত্র ১,৩৭৭
বন্দরের তথ্যমতে:
- স্বাভাবিক সময়ে: দৈনিক গড়ে খালাস হয় ৪,০০০+ কনটেইনার
- ঈদের ছুটিতে: গড়ে খালাস হয়েছে মাত্র ১,৩৭৭টি
- গত ২৪ ঘণ্টায়: খালাস হয়েছে ২,০০০ কনটেইনার
বন্দর কর্মকর্তারা মনে করছেন, খালাসের হার দৈনিক ৫,০০০ এ না পৌঁছালে এই চাপ কমবে না।
ব্যবসায়ীদের ভাষ্য: পণ্য খালাসে বহু সংস্থার ওপর নির্ভরতা
একজন আমদানিকারক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,
“বন্দরের কার্যক্রম সচল থাকলেও খালাসের জন্য কাস্টমস, বিএসটিআই, পোর্ট হেলথসহ একাধিক সংস্থার অনুমোদন লাগে। ছুটিতে এসব সংস্থার কার্যক্রম সীমিত থাকায় খালাসে দেরি হচ্ছে। পরিবহন সংকট এবং শ্রমিক স্বল্পতাও একটা বড় কারণ।”
জাহাজজট কিছুটা কম, রপ্তানি কার্যক্রম ছিল স্বাভাবিক
যদিও আমদানি কনটেইনারে চাপ বাড়ছে, রপ্তানিমুখী কনটেইনারের চলাচল ছিল স্বাভাবিক। ছুটির সময় বন্দরে প্রতিদিন গড়ে ১০-১১টি জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো-নামানো হয়েছে।
ছুটি শুরুর আগে যেখানে ১৬টি জাহাজ জেটিতে ভেড়ার অপেক্ষায় ছিল, তা কমে বর্তমানে ১২টি।
সতর্কতা ও সুপারিশ
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র মো. নাসির উদ্দিন বলেন,
“আমরা কনটেইনার জট এড়াতে শুরু থেকেই কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। কিন্তু ব্যবসায়ীরা যদি দ্রুত খালাস কার্যক্রম না বাড়ান, তাহলে জট আরও প্রকট হবে।”