
আজ, বছরের শেষ আংশিক সূর্যগ্রহণের ঘটনা ঘটছে। যদিও এটি বাংলাদেশ থেকে সরাসরি দেখা সম্ভব নয়, তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রচার এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে আগ্রহীরা সূর্যগ্রহণটি পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। বিশ্বজুড়ে মহাজাগতিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটি একটি বিরল ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সূর্যগ্রহণের সময় চাঁদ সূর্যের অগ্রভাগের দিকে চলে আসবে এবং সূর্যের আংশিক আলো ঢেকে যাবে। তবে বাংলাদেশে এই গ্রহণ খালি চোখে দেখা যাবে না। অ্যান্টার্কটিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু দ্বীপ থেকে এটি স্পষ্টভাবে দৃশ্যমান হবে।
সূর্যগ্রহণের সময়সূচী
বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড টাইম (BST) অনুযায়ী গ্রহণের সময়সূচী নিম্নরূপ:
- সূর্যগ্রহণ শুরু হবে: রাত ১১টা ২৯ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডে
- সর্বোচ্চ গ্রহণ: রাত ১টা ৪১ মিনিট ৫৪ সেকেন্ডে
- সূর্যগ্রহণ শেষ: রাত ৩টা ৫৩ মিনিট ৩৬ সেকেন্ডে
মোট স্থায়িত্বকাল প্রায় ৪ ঘণ্টা ২৪ মিনিট। এই সময়ে বাংলাদেশে সরাসরি গ্রহণ দেখা না গেলেও টেলিভিশন বা অনলাইন লাইভ স্ট্রিমিংয়ের মাধ্যমে সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করা যাবে।
সূর্যগ্রহণের ঝুঁকি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা
সূর্যগ্রহণের সময় সূর্যের আলো কিছুটা কম মনে হলেও, এর অতিবেগুনি (UV) ও ইনফ্রারেড (IR) রশ্মি এখনও প্রবল থাকে। খালি চোখে বা সাধারণ সানগ্লাস ব্যবহার করে সূর্যের দিকে তাকালে রেটিনা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
এক্ষেত্রে সোলার রেটিনোপ্যাথি নামক রোগের আশঙ্কা থাকে, যা স্থায়ী অন্ধত্ব বা চোখের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি ঘটাতে পারে। তাই বিশেষ ধরনের সোলার গ্লাস বা নিরাপদ সরঞ্জামের মাধ্যমে সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করা আবশ্যক।
আন্তর্জাতিক দৃশ্যপট
গ্রহণের কেন্দ্রীয় গতিপথ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের সামোয়া দ্বীপের উত্তর-পূর্ব দিকে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে এটি শুরু হবে। সর্বোচ্চ গ্রহণ দেখা যাবে অ্যান্টার্কটিকার ডুমন্ট ডি’উরভিল আবহাওয়া কেন্দ্র থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে। সূর্যগ্রহণ শেষ হবে অ্যান্টার্কটিকার আলেকজান্ডার দ্বীপ থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে।
নিউজিল্যান্ড, পূর্ব মেলানেশিয়া, দক্ষিণ পলিনেশিয়া এবং পশ্চিম অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলের মানুষ এই সূর্যগ্রহণ সরাসরি দেখতে পারবে।
বছরের শেষ সূর্যগ্রহণের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
সূর্যগ্রহণ ঘটে যখন চাঁদ সূর্য ও পৃথিবীর মধ্যবর্তী অক্ষ বরাবর চলে আসে। এতে চাঁদের ছায়া পৃথিবীতে পড়ে এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সূর্যের আংশিক আলো বাধাপ্রাপ্ত হয়।
এটি একটি আংশিক সূর্যগ্রহণ। পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের তুলনায় আংশিক গ্রহণে সূর্য সম্পূর্ণভাবে ঢেকে যায় না। তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এটি সূর্যের, চাঁদের এবং পৃথিবীর অবস্থানের সঠিক হিসাবের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়।
এই ধরনের গ্রহণের ইতিহাস
বিগত বছরগুলোতে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন আংশিক ও পূর্ণ সূর্যগ্রহণ ঘটেছে। প্রতি বছর কমপক্ষে একবার সূর্যগ্রহণ ঘটে, তবে সকল ক্ষেত্রেই তা পৃথিবীর সমস্ত অঞ্চলে দৃশ্যমান হয় না।
বাংলাদেশে বছরে কয়েকবার আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যায়, কিন্তু সরাসরি খালি চোখে দেখা সম্ভব হয় না। তাই টেলিভিশন বা অনলাইনে লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমে মানুষ এই মহাজাগতিক ঘটনা উপভোগ করে থাকে।
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ
খালি চোখে সূর্যগ্রহণ দেখা থেকে বিরত থাকার জন্য বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশেষ ধরনের সোলার ফিল্টার বা নিরাপদ সরঞ্জাম ব্যবহার করা হলে এটি নিরাপদভাবে দেখা সম্ভব।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, এই সূর্যগ্রহণের সময়কার পর্যবেক্ষণ শিক্ষামূলক এবং বৈজ্ঞানিক গবেষণার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এতে চাঁদ ও সূর্যের কক্ষপথ সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করা যায়।
আজকের আংশিক সূর্যগ্রহণ বিশ্ববাসীর জন্য একটি মহাজাগতিক দৃশ্যমান ঘটনা। বাংলাদেশ থেকে সরাসরি দেখা না গেলেও, অনলাইন এবং টেলিভিশনের মাধ্যমে সবাই এটি পর্যবেক্ষণ করতে পারবে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, খালি চোখে সূর্যের দিকে তাকানো বিপজ্জনক।
বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে, এটি সূর্য, চাঁদ এবং পৃথিবীর অবস্থানের নিখুঁত সমন্বয় প্রদর্শন করে। বছরের শেষ সূর্যগ্রহণটি মহাজাগতিক ও শিক্ষামূলক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।
এম আর এম – ১৪৪৮,Signalbd.com