ইসরায়েলি নেতারা পশ্চিম তীরের কিছু অংশ দখল করে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছেন, যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, বিশেষ করে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
ইসরায়েলের পরিকল্পনা: পশ্চিম তীরের কিছু অংশ দখল
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা মন্ত্রিসভার বৈঠকে পশ্চিম তীরের কিছু অংশ দখল করে ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত করার বিষয়টি আলোচিত হয়েছে। তবে, এই পরিকল্পনার সুনির্দিষ্ট সময় ও স্থান সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ইসরায়েলি বসতিগুলোর আশপাশের এলাকা বা জর্ডান ভ্যালির মতো গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলে এই পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া: ফিলিস্তিনিদের নিন্দা ও পশ্চিমা বিশ্বের বিরোধিতা
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের এই সংযুক্তিকরণ পরিকল্পনা ফিলিস্তিনিদের প্রবল নিন্দার মুখে পড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফিলিস্তিনিরা এ অঞ্চলকে তাদের ভবিষ্যৎ রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে। এছাড়া, আরব দেশ ও পশ্চিমা বিশ্বের বিরোধিতার মুখে পড়বে ইসরায়েল।
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ২০২৪ সালে রায় দিয়েছে যে, পশ্চিম তীরসহ অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড ও সেখানকার ইসরায়েলি বসতি অবৈধ এবং যত দ্রুত সম্ভব তা প্রত্যাহার করতে হবে। তবে, ইসরায়েল এই রায়ের বিরোধিতা করে বলছে, এ ভূখণ্ডগুলো আইনি দিক থেকে অধিকৃত নয়, বরং ‘বিতর্কিত ভূমি’।
পূর্ববর্তী পরিকল্পনা ও বর্তমান পরিস্থিতি
২০২০ সালে নেতানিয়াহু পশ্চিম তীরের ইহুদি বসতি ও জর্ডান ভ্যালি সংযুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তবে সেটি শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়। বর্তমানে, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া ও কানাডা ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েল পশ্চিম তীরের কিছু অংশ দখল করে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছে।
সম্ভাব্য প্রভাব ও ভবিষ্যৎ চ্যালেঞ্জ
পশ্চিম তীরের কিছু অংশ ইসরায়েলের সঙ্গে সংযুক্ত হলে তা ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এটি তাদের স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের পথে বড় বাধা সৃষ্টি করবে। এছাড়া, আন্তর্জাতিক মহলে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে চাপ বৃদ্ধি পাবে, যা তাদের কূটনৈতিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে।
ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের ফলে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পেতে পারে, যা আন্তর্জাতিক নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করবে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।
ইসরায়েলের পশ্চিম তীর দখলের পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে। এই পদক্ষেপের ফলে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের সম্ভাবনা সংকুচিত হতে পারে। বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত, এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করা, যাতে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়।
MAH – 12583, Signalbd.com



