বিশ্ব

বেনাপোলে ভারতীয় ট্রাক থেকে পিস্তল ও গুলি জব্দ, ২ নাগরিক আটক

Advertisement

যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দরে ভারতীয় একটি মরিচবাহী ট্রাক থেকে একটি এয়ার পিস্তল ও ৯৩ রাউন্ড পেলেট জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ ঘটনায় দুই ভারতীয় নাগরিককে আটক করা হয়েছে।

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আইসিপি মেইন গেটে নিয়মিত তল্লাশির সময় এ অস্ত্র ও গুলি জব্দ করা হয়। আটককৃতরা হলেন ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের বাসিন্দা গুরজীত সালুজা (৩১) ও ট্রাকের হেল্পার রাম দাস নাওয়াদি (২৪)।

ঘটনা বিস্তারিত

বিজিবি জানায়, সীমান্ত মেইন পিলার ১৮/৩ এস থেকে প্রায় ১০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ট্রাকটিতে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় ট্রাকচালকের দেহ তল্লাশি করলে এয়ার পিস্তল ও গুলি পাওয়া যায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালিত হয় বলে জানিয়েছে বিজিবি।

যশোর ঝুমঝুমপুর বিজিবির সহকারী পরিচালক সোহেল আল মুজাহিদ বলেন, “আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মরিচবাহী ট্রাকটি থামাই। তল্লাশিতে একটি এয়ার পিস্তল ও ৯৩ রাউন্ড পেলেট উদ্ধার করা হয়েছে। আটক দুই ভারতীয় নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।”

তিনি আরও জানান, আন্তর্জাতিক সীমান্ত দিয়ে কোনো ধরনের অস্ত্র, গুলি বা অবৈধ সামগ্রী আনার চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না।

বেনাপোল স্থলবন্দর বাংলাদেশ-ভারতের সবচেয়ে ব্যস্ত স্থলবন্দরগুলোর একটি। প্রতিদিন এখান দিয়ে শত শত ট্রাক পণ্য আমদানি-রপ্তানি করে। অতীতে একাধিকবার এ পথে স্বর্ণ, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানের ঘটনা ঘটেছে।

কয়েক মাস আগেও একই সীমান্ত দিয়ে স্বর্ণের বড় চালান জব্দ করেছিল কাস্টমস ও বিজিবি। এ কারণে সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

সীমান্ত নিরাপত্তার প্রভাব

এই ঘটনায় আবারও সীমান্ত নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। যদিও বিজিবি দাবি করছে তারা সতর্ক অবস্থানে আছে, তবে চোরাকারবারীরা নানা কৌশলে অবৈধ পণ্য আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

স্থানীয়দের মতে, এমন ঘটনার কারণে সীমান্ত দিয়ে বৈধ বাণিজ্যও কখনো কখনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ট্রাকচালকদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় এবং ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত খরচের মুখে পড়েন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিক্রিয়া

আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে বিজিবি। তারা আরও জানায়, এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে এবং আদালতের নির্দেশে আটককৃতদের পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

যশোর পুলিশ সুপার জানান, “বিজিবির হাতে আটক দুই ভারতীয় নাগরিককে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাদের উদ্দেশ্য কী ছিল এবং তারা এয়ার পিস্তল ও গুলি কোথায় নিতে চেয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

বিশেষজ্ঞ মতামত

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সীমান্তে অবৈধ অস্ত্র প্রবাহ রোধে নজরদারি আরও কঠোর করা প্রয়োজন। যদিও এটি এয়ার পিস্তল, তবে ভবিষ্যতে বড় অস্ত্র চালান ঢোকার চেষ্টা হতে পারে।

তাদের মতে, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত দিয়ে বৈধ বাণিজ্যের পাশাপাশি অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয় বাড়ানো জরুরি।

ভবিষ্যৎ পদক্ষেপ

বিজিবি জানিয়েছে, সীমান্ত এলাকায় আরও শক্তিশালী তল্লাশি ব্যবস্থা চালু করা হবে। বিশেষ করে ভারতীয় ট্রাকগুলোর ওপর নজরদারি বাড়ানো হবে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, নিরাপত্তা জোরদার হলে চোরাচালান কার্যক্রম কমবে এবং বৈধ বাণিজ্য আরও সহজ হবে।
বেনাপোল স্থলবন্দরে ভারতীয় ট্রাক থেকে পিস্তল ও গুলি জব্দের ঘটনা আবারও সীমান্ত নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরলো। বিজিবি সতর্কতা অবলম্বন করায় অস্ত্র চালানটি আটক করা সম্ভব হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

এম আর এম – ১২২১,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button