শিক্ষা

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ কুয়েট, শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ

খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রশাসন আজ মঙ্গলবার এক ঘোষণা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের পর, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীদের আগামীকাল বুধবার সকাল ১০টার মধ্যে তাদের আবাসিক হল ত্যাগ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই সিদ্ধান্ত নিরাপত্তাজনিত কারণে নেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি, কুয়েটের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. এসকে. শরীফুল আলম ‘দ্য ডেইলি স্টার’কে জানান, আজ বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৯তম সিন্ডিকেট সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় কিছু সদস্য সশরীরে উপস্থিত ছিলেন, আবার কেউ কেউ অনলাইনে যুক্ত হয়েছিলেন।

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হল বন্ধ

কুয়েটের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. আনিচুর রহমান ভূঁঞার সই করা নোটিশে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে হলগুলো বন্ধ করার পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রধানত, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনিরাপদ বোধ করছেন এবং তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাই প্রশাসনের সর্বাধিক অগ্রাধিকার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানা প্রাচীরের কিছু অংশের নির্মাণ কাজ এখনও চলমান, যার ফলে পুরোপুরি সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তবে, নির্মাণকাজ শেষ হলে কুয়েটের ক্যাম্পাস অনেকাংশে সুরক্ষিত হবে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা আরও জোরালো হবে।

শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন নির্দেশনা

নোটিশে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে হল ত্যাগ করেন। এই সময়সীমা মেনে চলতে না পারলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। হল বন্ধ করার সিদ্ধান্তের পর, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিশাল অস্থিরতার মধ্যে পড়ে যান, কারণ তারা দীর্ঘ সময় ধরে তাদের আবাসিক হলের সাথে সম্পর্কিত নানা সুবিধা উপভোগ করছিলেন।

শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে অনেকেই এই সিদ্ধান্তের কারণে উদ্বিগ্ন। তারা জানিয়েছেন, নিরাপত্তার দিক থেকে অনেকটা অস্বস্তি অনুভব করছেন, তবে তাদের মূল চিন্তা হলো হলের বন্ধ হওয়ার পর তাদের বাসস্থান সমস্যা। বহু শিক্ষার্থী মন্তব্য করেছেন যে, তারা দীর্ঘদিন ধরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন এবং তাদের জীবনযাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের উপর নির্ভরশীল ছিল। তবে, তারা বিশ্বাস করেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন তাদের নিরাপত্তা নিয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং তারা আশা করেন যে, ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা শিগগিরই উন্নত হবে।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন জানিয়েছে যে, সীমানা প্রাচীরের নির্মাণ কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একবার প্রাচীর নির্মাণ সম্পন্ন হলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক বেশি শক্তিশালী হবে এবং শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যাম্পাসে আরো নিরাপদভাবে থাকতে পারবেন। এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও নিরাপত্তা সংক্রান্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে কোনো ধরনের নিরাপত্তাহীনতা অনুভব না করেন।

পরবর্তী পদক্ষেপ

বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে একাডেমিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু করার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা ঘোষণা করা হয়নি। তবে, শিক্ষার্থীদের জন্য পরিস্থিতি আরও সুসংহত হলে তারা আবারও তাদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে আসতে পারবেন। প্রশাসন ভবিষ্যতে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবে।

উপসংহার

এমন একটি পরিস্থিতি যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক, যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের নিরাপত্তাহীনতার কারণে চাপে পড়ে এবং তাদের রুটিন disrupted হয়। তবে, কুয়েট প্রশাসন যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। আশা করা যায়, শীঘ্রই বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও উন্নত হবে এবং শিক্ষার্থীরা আরও সুরক্ষিত পরিবেশে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবেন।

মন্তব্য করুন

Related Articles

Back to top button