বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই শিক্ষাবর্ষে মোট ১,৩০৯টি আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে। ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া ১৬ নভেম্বর ২০২৫ থেকে শুরু হয়ে ২ ডিসেম্বর ২০২৫ বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলবে। আবেদনকারী শিক্ষার্থীরা সর্বশেষ ৪ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা পর্যন্ত তাদের আবেদন ফি জমা দিতে পারবেন।
বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা বাংলাদেশের সেরা প্রযুক্তি ও প্রকৌশল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী নির্বাচনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। প্রতিবারের মতো এবারও আবেদন প্রক্রিয়া ও ভর্তি পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিস্তারিত নির্দেশিকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করেছে।
ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ও সময়সূচি
বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত দিন হলো ১০ জানুয়ারি ২০২৬। পরীক্ষা হবে দুই শিফটে, সকাল ও বিকেল। ভর্তি পরীক্ষার জন্য দুইটি মডিউল—‘এ’ ও ‘বি’ ক্যাটাগরি—র আয়োজন করা হয়েছে।
ভর্তি পরীক্ষার যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা সম্ভাব্যভাবে ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ প্রকাশিত হবে। এবার ভর্তি প্রক্রিয়ায় প্রাথমিক বাছাই পরীক্ষা থাকবে না। শুধুমাত্র লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের ভর্তিযোগ্যতা নির্ধারণ করা হবে। লিখিত পরীক্ষার পরে শিক্ষার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা দিতে হবে।
আবেদন ফি ও ভর্তি বিভাগ
বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় দুইটি ক্যাটাগরিতে আবেদন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে:
- প্রকৌশল বিভাগসমূহ (কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস, যন্ত্রকৌশল, তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং, পুরকৌশল ইত্যাদি) এবং নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ: ১,৩০০ টাকা
- স্থাপত্য ও পরিকল্পনা বিভাগের স্থাপত্য বিভাগ: ১,৫০০ টাকা
ভর্তি পরীক্ষার আসন ও বিভাগসমূহ
বুয়েটে মোট আসন সংখ্যা ১,৩০৫টি, যা বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগে নিম্নরূপ ভাগ করা হয়েছে:
- প্রকৌশল বিভাগসমূহ:
- কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস
- যন্ত্রকৌশল
- তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিকস
- পুরকৌশল
- নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগ – স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদ
- স্থাপত্য বিভাগ – ৫ বছরের স্নাতক ডিগ্রি
এছাড়াও, বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রার্থীদের জন্য আলাদা আসন সংরক্ষিত আছে। প্রকৌশল ও নগর পরিকল্পনা বিভাগে মোট ৩টি আসন, স্থাপত্য বিভাগের জন্য ১টি আসন সংরক্ষিত। তাই সব মিলিয়ে মোট আসন ১,৩০৯টি।
ভর্তি প্রক্রিয়ার ধাপ
বুয়েটে ভর্তির প্রক্রিয়া মূলত তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়:
- আবেদন জমা ও ফি প্রদান:
আবেদন শুরু হয়েছে ১৬ নভেম্বর ২০২৫ থেকে, শেষ হবে ২ ডিসেম্বর বিকেল ৩টা। ফি জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ৪ ডিসেম্বর। - লিখিত পরীক্ষা:
ভর্তি পরীক্ষায় প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে। দুইটি শিফটে অনুষ্ঠিত এই পরীক্ষায় প্রার্থীদের দক্ষতা যাচাই করা হবে। - মৌখিক পরীক্ষা:
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এখানে প্রার্থীর জ্ঞান, দক্ষতা ও সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা মূল্যায়ন করা হয়।
আবেদনকারীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য
- ভর্তি পরীক্ষা বুয়েটের কেন্দ্রীভূত নিয়ম অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হবে।
- আবেদন ফি অনলাইনে জমা দিতে হবে।
- প্রার্থীদের অবশ্যই সমস্ত তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করতে হবে।
- ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিকটবর্তী নির্ধারিত পরীক্ষাকেন্দ্রে উপস্থিত হবেন।
ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি ও পরামর্শ
বুয়েটে ভর্তি পরীক্ষায় ভালো ফল করার জন্য শিক্ষার্থীদের নিচের বিষয়গুলোতে মনোযোগ দেওয়া জরুরি:
- প্রকৌশল ও বিজ্ঞান বিষয়ের ভিত্তি জ্ঞান
- গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানের মূল ধারণা
- লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার জন্য অনুশীলন
- সময় ব্যবস্থাপনা ও পরীক্ষার কৌশল
প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে নিয়মিত প্র্যাকটিস করা, আগের বছরের প্রশ্নপত্র বিশ্লেষণ করা এবং শিক্ষকের পরামর্শ অনুসরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ভর্তি পরীক্ষার গুরুত্ব
বুয়েটে ভর্তি হওয়া মানে শুধুমাত্র একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়া নয়, এটি দেশের সেরা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার সুযোগ। এখানে শিক্ষার্থীরা আধুনিক গবেষণা, উদ্ভাবনী প্রকল্প এবং আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা গ্রহণ করতে সক্ষম হয়।
সম্ভাব্য তারিখপঞ্জী
- আবেদন শুরুর তারিখ: ১৬ নভেম্বর ২০২৫
- আবেদন শেষের তারিখ: ২ ডিসেম্বর ২০২৫, বিকেল ৩টা
- ফি জমার শেষ তারিখ: ৪ ডিসেম্বর ২০২৫, বিকেল ৩টা
- ভর্তি পরীক্ষার তারিখ: ১০ জানুয়ারি ২০২৬
- ভর্তি পরীক্ষার যোগ্য প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫
- মেধাক্রম ও চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ: ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৬
বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা প্রতিটি প্রার্থীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ। শিক্ষার্থীদের উচিত সময়মতো আবেদন করা, ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া এবং মৌলিক বিষয়গুলোতে দক্ষতা অর্জন করা। ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হয়ে বাংলাদেশে প্রকৌশল, স্থাপত্য ও পরিকল্পনা শিক্ষার মান উঁচু করা সম্ভব।
MAH – 14076 I Signalbd.com



