শিক্ষা

স্কুল-কলেজের সভাপতির দায়িত্বে কারা থাকবেন, ঠিক করে দিলো সরকার

Advertisement

মেয়াদোত্তীর্ণ অ্যাডহক কমিটির স্থানান্তরে উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সভাপতির দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, যেসব বেসরকারি স্কুল ও কলেজে অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে, সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং জেলা প্রশাসক (ডিসি) বা তাদের প্রতিনিধি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় শনিবার (১৬ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত অফিস আদেশ জারি করেছে।

অফিস আদেশের মূল বক্তব্য

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব সাইয়েদ এ জেড মোরশেদ আলীর স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা হিসেবে মেয়াদোত্তীর্ণ অ্যাডহক কমিটির স্থানান্তরের জন্য উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও এবং জেলা পর্যায়ে ডিসি বা তাদের প্রতিনিধিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করতে হবে।

অফিস আদেশে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সরকারি কর্মকর্তা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় বা সরকারি কলেজের অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক, এবং সংশ্লিষ্ট বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা প্রার্থীদের নাম ম্যানেজিং কমিটি ও গভর্নিং বডির সভাপতির পদে মনোনয়নের জন্য শিক্ষা বোর্ডে পাঠানো হবে।

পূর্বপ্রসঙ্গ

গত ৮ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বেসরকারি স্কুল-কলেজের নিয়মিত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়ে পরিপত্র জারি করেছিল। তবে এটি ৩০ অক্টোবর তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। এর আগে, ৩১ আগস্ট গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির প্রবিধানমালা সংশোধন করা হয়।

সংশোধিত প্রবিধানমালা অনুযায়ী, বেসরকারি কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতির শিক্ষাগত যোগ্যতা ন্যূনতম চার বছরের স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে। এছাড়া নবম গ্রেডের নিচের না এবং পঞ্চম গ্রেডের নিচের না এমন সরকারি কর্মকর্তা বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারাও এই পদে মনোনয়ন পেতে পারবেন।

নতুন নিয়মের প্রয়োগ

অফিস আদেশ অনুযায়ী, যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বর্তমান অস্থায়ী কমিটি বা অ্যাডহক কমিটি আছে, তারা ১ ডিসেম্বরের মধ্যে বাতিল হবে। এই তারিখের পর উপজেলা ও জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিরা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।

পরিপত্রে আরও বলা হয়েছে, ইউএনও এবং ডিসি বা তাদের প্রতিনিধিরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন যাতে প্রতিষ্ঠানে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা বজায় থাকে এবং নিয়মিত কমিটি গঠনের জন্য প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়।

প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া

এই নির্দেশনার ফলে বেসরকারি স্কুল ও কলেজের প্রশাসনিক শৃঙ্খলায় সুসংগঠিত পরিবর্তন হবে। স্কুল-কলেজের অভিভাবক ও শিক্ষকদের মধ্যে এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচকভাবে দেখা হচ্ছে। তারা মনে করছেন, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সময়মতো নীতি ও কার্যক্রম কার্যকর হয়নি।

শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি কর্মকর্তাদের সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ায় স্কুল-কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম স্বচ্ছ ও নিয়ন্ত্রিত হবে। এছাড়া, নিয়মিত কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও ত্বরান্বিত হবে।

বিশেষজ্ঞ মতামত

শিক্ষা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ মূলত নিয়মিত কমিটি গঠনের সময়সীমা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে। তারা বলছেন, ইউএনও ও ডিসি বা তাদের প্রতিনিধির নেতৃত্বে বিদ্যালয় ও কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম আরো কার্যকর হবে।

বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, দীর্ঘমেয়াদীভাবে এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়ক হবে। পাশাপাশি, প্রতিষ্ঠান প্রধানদের জন্য পরিষ্কার দিকনির্দেশনা প্রদান করবে যে, নিয়মিত কমিটি গঠন প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত কে সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন।

সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, মেয়াদোত্তীর্ণ অ্যাডহক কমিটির স্থানে ইউএনও ও ডিসি বা তাদের প্রতিনিধিরা সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। এটি স্কুল-কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রমকে স্বচ্ছ, নিয়ন্ত্রিত ও কার্যকর রাখার উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নিয়মিত কমিটি গঠনের জন্য এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ এবং দীর্ঘমেয়াদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক শৃঙ্খলা শক্তিশালী করবে।

এম আর এম – ২২৬৯,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button