শিক্ষা

১৭১৫ হাফেজ ও তাদের বাবা-মা পেলেন তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশনের সম্মাননা

Advertisement

তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো দেশের ১৩তম হিফজুল কোরআন অ্যাওয়ার্ড ও কোরআন উৎসব, যেখানে দেশের ১৭১৫ জন হাফেজ এবং তাদের বাবা-মাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে। এই আয়োজনে শুধু হাফেজ শিক্ষার্থীদের নয়, তাদের পেছনের সাহসী ও ত্যাগী পরিবারদেরও সম্মানিত করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানটি শুক্রবার রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন শাখার হাফেজদের ক্রেস্ট, সনদ, পাগড়ি বা স্কার্ফ ও ব্যাগ দিয়ে সন্মানিত করা হয়।

তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশন প্রতি বছর পবিত্র কোরআনের হাফেজদের উৎসাহ দিতে এবং তাদের অবদানের স্বীকৃতি জানাতে এই ধরনের আয়োজন করে। এটি শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, পুরো সমাজে কোরআন শিক্ষার গুরুত্ব ও প্রভাব ছড়িয়ে দেয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিশিষ্টজনরা

সম্মাননা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিভিন্ন ধর্মীয়, শিক্ষাবিষয়ক ও সামাজিক ক্ষেত্রে খ্যাতিমান ব্যক্তিবর্গ। উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন:

  • ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন,
  • আন্তর্জাতিক মুফাসসিরে কোরআন ড. মিজানুর রহমান আজহারী,
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ভিপি আবু সাদিক (সাদিক কায়েম),
  • বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যান প্রফেসর মিঞা মো. নুরুল হক,
  • চট্টগ্রাম আন্দারকিল্লা শাহী জামে মাসজিদের খতিব সাইয়্যেদ আনোয়ার হোসাইন তাহের আহমাদ জাবেরী আল-মাদানী,
  • আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্বারী আহমাদত বিন ইউছুফ,
  • আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. সামসুল আলম,
  • এবং দেশের বিভিন্ন খ্যাতিমান আলেম-ওলামা।

ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন:

  • চেয়ারম্যান হাবীবুল্লাহ মুহাম্মদ ইকবাল,
  • সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন,
  • ভাইস চেয়ারম্যান ড. মীম আতিকুল্লাহ,
  • ডিরেক্টরগণ: মুহাম্মাদ আব্দুল আলীম, আ. ন. মু. রাশিদুল ইসলাম সায়েম, মুহা. আসলাম মিয়া, মুহাম্মাদ হাবীবুল্লাহ অল-আমিন,
  • সহ বিভিন্ন শাখাপ্রধান, শিক্ষক, অভিভাবক ও সাংবাদিকরা।

হাফেজদের প্রতি শ্রদ্ধা ও অনুপ্রেরণা

উপস্থিত ধর্ম উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন হাফেজদের অভিবাদন জানিয়ে বলেন,

“আমরা তানযীমুল উম্মাহর প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রাখি। আমরা আশা করি, এখান থেকে এমন সৎ ও যোগ্য মানুষ তৈরি হবে যারা ভবিষ্যতে রাষ্ট্র পরিচালনায় ও সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।”

তিনি আরও বলেন, কোরআনের শিক্ষার মধ্য দিয়ে একজন ব্যক্তি শুধু আত্মিক উন্নতি লাভ করেন না, বরং সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণেও অবদান রাখতে সক্ষম হন।

কোরআন উৎসবের রঙিন মুহূর্ত

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের ইসলামি চিন্তাবিদ ও কোরআন গবেষকদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি মুখরিত হয়ে ওঠে। বিভিন্ন হাফেজ শিক্ষার্থী সুললিত কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াত করেন, যা অনুষ্ঠানের পরিবেশকে আরও আধ্যাত্মিক ও অনুপ্রেরণামূলক করে তোলে।

ছাত্র ও ছাত্রীদের হামদ, নাত, ইসলামি গান, বক্তৃতা, আলোচনা, কবিতা আবৃতিসহ অন্যান্য সাংস্কৃতিক পরিবেশনা দর্শকদের মনোমুগ্ধকর করে তোলে। অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছানো মাত্রই শিশু শিক্ষার্থীরা অভিভাবকদের হাত ধরে অনুষ্ঠানে প্রবেশ করে।

হাফেজ ছাত্রদের সাদা জুব্বা এবং পাগড়ি, হাফেজ ছাত্রীদের আকাশি ও সাদা রঙের পোশাক তাদের পরিচিতি ও মর্যাদা ফুটিয়ে তোলে। সকলের কাঁধে তানযীমুল উম্মাহর লোগোসহ উত্তরীয় তাদের সম্মান প্রদর্শনের প্রতীক।

হাফেজদের বাবা-মায়ের অবদান

এ আয়োজন কেবল শিক্ষার্থীদের নয়, তাদের বাবা-মাকে সম্মান জানাতে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। কারণ হাফেজ হওয়ার পেছনে পরিবারগুলোর অনুপ্রেরণা, ত্যাগ ও পরিশ্রম অনস্বীকার্য। এই সম্মাননা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ।

ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম ও সামাজিক প্রভাব

তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশন দেশের শিশু ও যুবক হাফেজদের শিক্ষায় সহায়তা এবং তাদের আধ্যাত্মিক বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফাউন্ডেশনটি:

  • কোরআন শিক্ষা প্রসারের জন্য স্কুল ও মাদরাসা পরিচালনা করে,
  • হাফেজদের মানসম্মত শিক্ষার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়,
  • সমাজে কোরআন শিক্ষার মর্যাদা বৃদ্ধি করে,
  • হাফেজদের সামাজিক ও আত্মিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

ফাউন্ডেশনের এই ধরনের আয়োজন দেশের যুব সমাজের কোরআন শিক্ষায় আগ্রহ বৃদ্ধি এবং নৈতিক ও আধ্যাত্মিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে

অনুষ্ঠানের সংক্ষিপ্ত বিবরণ

  • তারিখ: ২৫ অক্টোবর ২০২৫
  • স্থান: বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্র, ঢাকা
  • হাফেজ সংখ্যা: ১৭১৫
  • সম্মাননা: ক্রেস্ট, সনদ, পাগড়ি/স্কার্ফ, ব্যাগ
  • উপস্থিত বিশিষ্টজন: ধর্ম উপদেষ্টা, কোরআন গবেষক, শিক্ষাবিদ, আলেম, ফাউন্ডেশন পরিচালনা বোর্ড
  • অনুষ্ঠান আর্কষণ: কোরআন তেলাওয়াত, হামদ-নাত, ইসলামি গান, বক্তৃতা, আলোচনা, কবিতা আবৃতিসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

এই আয়োজন দেশের হাফেজ শিক্ষার্থীদের প্রতি সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি, আধ্যাত্মিক বিকাশ এবং ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। তানযীমুল উম্মাহ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগ শুধু শিক্ষার্থীদের নয়, পুরো সমাজের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।


১৭১৫ হাফেজ ও তাদের পরিবারকে সম্মাননা প্রদান করা, প্রতিটি হাফেজ শিক্ষার্থীকে ক্রেস্ট, সনদ, পাগড়ি বা স্কার্ফ, ব্যাগ দেওয়া, দেশের বিভিন্ন শাখা থেকে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ।


এ ধরনের আয়োজন দেশে কোরআন শিক্ষার মর্যাদা বৃদ্ধি করছে, যুব সমাজকে সৎ ও যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলছে, এবং হাফেজদের প্রতি সম্মান ও সামাজিক দায়বদ্ধতার পরিচয় দেয়।

MAH – 13475 I Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button