শিক্ষা

মাধ্যমিকের ৩ শ্রেণির বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপাতে ৪৪৫ কোটি টাকার প্রস্তাব অনুমোদন

Advertisement

মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সুবিধার্থে সরকার ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের ৬ষ্ঠ, ৭ম ও ৮ম শ্রেণির জন্য বিনামূল্যে পাঠ্যবই মুদ্রণ, বাঁধাই এবং বিতরণের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এই প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪৫ কোটি টাকার মতো। শিক্ষা ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রস্তাবনা মেনে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

অনুমোদিত প্রস্তাবনার বিস্তারিত

২০২৬ শিক্ষাবর্ষের জন্য ৬ষ্ঠ শ্রেণির বাংলা, ইংরেজি ভার্সন, দাখিল ৬ষ্ঠ শ্রেণি এবং কারিগরি ৬ষ্ঠ শ্রেণির বিনামূল্যে বিতরণের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও সরবরাহের জন্য ৯৮টি দরপত্রে মোট ৪ কোটি ৩৬ লাখ ৫৬ হাজার ৫৮১ কপি বই মুদ্রণের কাজ পেয়েছে ৭৭টি প্রতিষ্ঠান। এতে ব্যয় হয়েছে প্রায় ১৩৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

৭ম শ্রেণির জন্য মোট ৪ কোটি ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯২ কপি বই মুদ্রণের কাজ পেয়েছে ৯১টি প্রতিষ্ঠান, যার জন্য অনুমোদিত ব্যয় ১৫০ কোটি ১ লাখ টাকা।

৮ম শ্রেণির জন্য মোট ৪ কোটি ২ লাখ ৩৪ হাজার ৬৯৮ কপি বই মুদ্রণের কাজ পেয়েছে ৯০টি প্রতিষ্ঠান। এই ক্ষেত্রে অনুমোদিত ব্যয় ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা।

প্রভাবিত শ্রেণি ও শিক্ষার্থীরা

এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রায় ১২ মিলিয়নের বেশি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থী সরাসরি উপকৃত হবেন। বিনামূল্যে বই পাওয়ার সুবিধা শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা গ্রহণে উৎসাহ বাড়াবে এবং পরিবারগুলোর অর্থনৈতিক বোঝা হ্রাস করবে।

শিক্ষার্থীরা এখন মানসম্মত পাঠ্যবই সহজলভ্যতার মাধ্যমে শিক্ষার মান উন্নত করতে পারবে। বিশেষত পল্লী ও সেবাশূন্য এলাকার শিক্ষার্থীরা এই প্রকল্প থেকে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন।

বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণের উদ্যোগ সরকার নিয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে ১ম থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত বই বিতরণ সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। এবার মাধ্যমিক স্তরে ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণিতে এটি সম্প্রসারিত হচ্ছে।

বছরের পর বছর ধরে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সহায়তার জন্য এই প্রকল্প ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি শিক্ষার সমতায় নতুন মাত্রা যোগ করবে।

শিক্ষাব্যবস্থা ও শিক্ষার্থী প্রভাব

বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়াবে। এছাড়াও, বইয়ের অভাব বা ক্রয় সংক্রান্ত আর্থিক বাধা দূর হওয়ার কারণে শিক্ষার্থী অনলাইনে বা অন্যত্র বিকল্প খোঁজার ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন।

এছাড়াও শিক্ষকরা পাঠ্যক্রম সম্পাদনে বেশি মনোনিবেশ করতে পারবেন, কারণ শিক্ষার্থীদের কাছে বই সহজলভ্য থাকায় পাঠদানের সময় বাঁচবে।

বিশ্লেষণ ও বিশেষজ্ঞ মতামত

শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষায় সমান সুযোগ নিশ্চিত করবে। তাদের বক্তব্য, এটি শিক্ষায় বৈষম্য কমাবে এবং শিক্ষার মান উন্নত করবে।

একজন শিক্ষাবিদ বলেন, “বিনামূল্যে পাঠ্যবই সরবরাহ শিক্ষার্থীদের মধ্যে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়াবে। বিশেষ করে দরিদ্র পরিবারে শিক্ষার্থীরা এখন আরও স্বচ্ছন্দে শিক্ষায় মনোনিবেশ করতে পারবে।”

মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য এই পাঠ্যবই প্রকল্প শিক্ষার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। সরকারি উদ্যোগে শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে মানসম্মত বই পাবে, যা শিক্ষার মান উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

শিক্ষা অধিদপ্তরের সঙ্গে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও বই মুদ্রক সংস্থাগুলো সমন্বয় রেখে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। আগামী শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীরা বই হাতে পাওয়া নিশ্চিত হওয়ায় শিক্ষার সমতায় নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।

এম আর এম – ১৯০২,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button