
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জরুরি নির্দেশনা জারি করেছে। দেশের সাম্প্রতিক কয়েকটি ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে এই নির্দেশনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অগ্নি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে পাঠানো হয়েছে।
রোববার (১৯ অক্টোবর) মাউশির প্রশাসন শাখার সহকারী পরিচালক মো. খালিদ হোসেনের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা পাঠানো হয়।
নির্দেশনার মূল বিষয়বস্তু
মাউশি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন সব অধিদপ্তর, দফতর, অফিস বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়ার আগে নিজ নিজ রুমের সব বৈদ্যুতিক সুইচ, লাইট, ফ্যান ও কম্পিউটার বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও এয়ার কন্ডিশনার (AC)-এর প্লাগও বের করে রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে, তারা অফিস বা ক্লাসরুম ত্যাগের আগে এসব বিষয় যাচাই করে সতর্কতামূলক ভূমিকা পালন করবেন। সরকারি-বেসরকারি স্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক, জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিস এবং মাউশির আঞ্চলিক কার্যালয়গুলিতে এই নির্দেশনাটি পাঠানো হয়েছে।
সাম্প্রতিক অগ্নিকাণ্ডের প্রেক্ষাপট
গত কয়েক সপ্তাহে দেশে একাধিক গুরুতর অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ১৪ অক্টোবর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে একটি রাসায়নিক গুদামে আগুন লেগে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। ১৬ অক্টোবর চট্টগ্রামের ইপিজেড এলাকার একটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটে। সর্বশেষ, ১৮ অক্টোবর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নিকাণ্ডে প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এই ধরনের ঘটনা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও ঘটতে পারে এমন ঝুঁকি বিবেচনা করে মাউশি সতর্কতা জারি করেছে।
প্রভাব এবং বাস্তবায়ন
মাউশির নির্দেশনার ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অগ্নি নিরাপত্তার মান বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক এবং অধ্যক্ষদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তারা নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন।
জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসগুলোর দায়িত্ব, স্থানীয় পর্যায়ে নিয়মিত অগ্নি নিরাপত্তা পরিদর্শন করা এবং কর্মীদের সচেতন করা। এতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মচারীদের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
বিশেষজ্ঞদের মতামত
নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও অগ্নি প্রতিরোধমূলক প্রটোকল কার্যকর করা অত্যন্ত জরুরি। অগ্নি সনাক্তকরণ যন্ত্র ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের ব্যবহার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অপরিহার্য।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলেন, মাউশির এই পদক্ষেপ শুধুমাত্র নির্দেশনা নয়, এটি সচেতনতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ। স্কুল-কলেজের কর্মীরা নিয়মিতভাবে অগ্নি ঝুঁকি যাচাই করলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে কমবে।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
মাউশি আগামীতে অগ্নি নিরাপত্তা বিষয়ক আরও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ও সেমিনারের আয়োজন করতে পারে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে অগ্নি নিরাপত্তা সম্পর্কিত চেকলিস্ট এবং জরুরি পদক্ষেপ তালিকা প্রয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।
এই উদ্যোগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অগ্নি নিরাপত্তা উন্নত করার পাশাপাশি, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বৃদ্ধি করবে। ফলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ সম্ভব হবে।
এম আর এম – ১৮৬২,Signalbd.com