শিক্ষা

পিছিয়ে গেল রাকসু নির্বাচন

Advertisement

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে না। অনূকুল পরিবেশ না থাকার কারণে নির্বাচন কমিশন নতুন করে আগামী ১৬ অক্টোবর ভোটের দিন নির্ধারণ করেছে।

সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাকসু নির্বাচন কমিশনের প্রধান অধ্যাপক এফ. নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। কমিশন বলেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাকসু নির্বাচন উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে আয়োজন করা সম্ভব নয়।

নির্বাচন পিছানোর কারণ

নির্বাচন পিছানোর প্রধান কারণ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি এবং নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক ও কর্মচারীর অনুপস্থিতি উল্লেখ করা হয়েছে।

নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য, “বর্তমান পরিস্থিতিতে ভোট সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই নির্বাচনের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।”

শিক্ষার্থী ও প্যানেলের প্রতিক্রিয়া

ছাত্রশিবিরসহ বিভিন্ন প্যানেল নির্বাচনের নতুন তারিখ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্মিলিত শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী মুস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, “ভোট পিছানোর ফলে শিক্ষার্থীদের রাকসু নিয়ে আগ্রহ কমে যাবে। নির্বাচন কমিশন শক্ত অবস্থান দেখানো উচিত।”

অন্যদিকে, ছাত্রদল সমর্থিত ‘ঐক্যবদ্ধ নতুন প্রজন্ম’ প্যানেলের ভিপি প্রার্থী শেখ নুর উদ্দিন আবীর বলেন, “ভোটার উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য নির্বাচন পিছানো স্বাভাবিক এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ। ভোট ছাড়া নির্বাচন কোনোভাবে সুষ্ঠু হতে পারে না।”

শিক্ষকদের ভূমিকা ও শাটডাউন পরিস্থিতি

ক্যাম্পাসে চলমান ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এর কারণে শিক্ষক ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণ সংকট তৈরি হয়েছে। কয়েক দিনের আন্দোলন ও প্রতিবাদ কর্মসূচির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।

এতে নির্বাচন পরিচালনায় সরাসরি প্রভাব পড়েছে। জামায়াতে ইসলামি সমর্থিত শিক্ষকরা নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন বলে জানিয়েছেন। এছাড়া শিক্ষক-কর্মচারীরা মানববন্ধনের মাধ্যমে শিক্ষকদের লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

ভোটের আগের পরিস্থিতি ও উত্তেজনা

ক্যাম্পাসের অস্থির পরিবেশ, পূজার ছুটি এবং ‘কমপ্লিট শাটডাউন’-এর কারণে শিক্ষার্থীরা হল ও মেস ছেড়ে চলে যাচ্ছে। নির্বাচনের সময় কম ভোটার উপস্থিতি হলে তা নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকায় নির্বাচন কমিশন জরুরি সভা করেছে এবং নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। এই পদক্ষেপ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার পাশাপাশি নির্বাচনকে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য নেওয়া হয়েছে।

বিশেষজ্ঞ ও বিশ্লেষকদের মত

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং শিক্ষক-কর্মচারীর আন্দোলন নির্বাচনের সময়সূচি পুনর্নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। তারা মনে করছেন, শিক্ষার্থীদের জন্য একটি স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করা এখন প্রধান লক্ষ্য।

বিশেষজ্ঞরা আরও উল্লেখ করেছেন, ভোটের নতুন তারিখের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ বজায় রাখা এবং নির্বাচনের ফলাফল গ্রহণযোগ্য রাখা সম্ভব হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাকসু নির্বাচন অনিশ্চিত পরিস্থিতির কারণে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে পিছিয়ে ১৬ অক্টোবরের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও প্যানেলের বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া নতুন নির্বাচনের পরিবেশ এবং অংশগ্রহণের প্রভাব বোঝাচ্ছে।

এখন দেখার বিষয়, আগামী নির্বাচনে ছাত্র-শিক্ষক অংশগ্রহণ ও ভোটার উপস্থিতি কেমন থাকবে এবং নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে কি না।

এম আর এম – ১৪৬৯,Signalbd.com

মন্তব্য করুন
Advertisement

Related Articles

Back to top button